জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না- জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রিটের শুনানি শেষে গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের সমন্বয়ে গঠিত ডিভিশন বেঞ্চ এই রুল জারি করেন।
জ্বালানি সচিব, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট উপ-সচিব, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ ও ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। সরকারপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায় শুনানিতে অংশ নেন।
এর আগে গত ১৪ আগস্ট কোনো ধরণের গণশুনানি ছাড়াই জ্বালানি তেলের মূল্য সরকার বাড়াতে পারে কি না- এ প্রশ্ন রাখেন একই আদালত। জবাবে সরকারপক্ষের কৌঁসুলি জানান, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় জ্বালানির দাম বাড়াতে পারে। কারণ এটি সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত। প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্টের নির্দেশে মন্ত্রণালয় ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল এবং অকটেনের দাম বাড়ানোর প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
এর আগে গত ৫ আগস্ট সরকার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ এবং পেট্রোল ও অকটেনের দাম যথাক্রমে ৫১ দশমিক ১ শতাংশ ও ৫১ দশমিক ৭ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়। আকস্মিক এই মূল্য বৃদ্ধিকে চ্যালেঞ্জ করে গত ৮ আগস্ট রিট করেন অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ। রিটে তিনি অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জারি করা গেজেট স্থগিত, বাতিল ও প্রত্যাহারের নির্দেশনা চান।
রিটে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন অ্যাক্ট, ২০০৩ এর অধীনে গণশুনানির মাধ্যমে জনগণের মতামত চাওয়ার পর কেবল বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন পেট্রোলিয়াম পণ্যের দাম বাড়াতে পারে। সরকার কোনো গণশুনানি না করে এবং জনগণের মতামত না নিয়েই জ্বালানি পণ্যের দাম অযৌক্তিকভাবে বাড়িয়েছে। এটি আইন ও সংবিধান পরিপন্থি।
রিটে আরও বলা হয়, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শেখ মো. বেলায়েত হোসেন গত ৫ আগস্ট প্রেসিডেন্টের নির্দেশে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন। যদিও এ ধরণের পণ্যের দাম বাড়ানোর সঙ্গে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বের কোনো সম্পর্ক নেই।
অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ শুনানিতে বলেন, পেট্রোলিয়াম পণ্যের অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি দেশের কৃষক-শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর অত্যন্ত বিরূপ প্রভাব ফেলবে। এছাড়া রিটের শুনানিকালে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া আদালতে বলেন, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন অ্যাক্ট,২০০৩ এর ৩৪ ধারা লঙ্ঘন করে সরকার পেট্রেলিয়াম জাতীয় পণ্যের দাম বাড়িয়েছে।
প্রসঙ্গত, সরকার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ৪২ দশমিক ৫ শতাংশ এবং পেট্রোল ও অকটেনের মূল্য যথাক্রমে ৫১ দশমিক ১ শতাংশ ও ৫১ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধি করে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন