নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান বলেছেন, বড় বড় বক্তব্য আর খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন এগুলো থাকবে তো, যদি নেত্রীর ওপর আঘাত আসে? যখন বঙ্গন্ধুকে হত্যা করা হলো, তখন আদর্শের নেতা-কর্মী ছিলেন অনেক, এখন হাইব্রিড নেতাকর্মীর সংখ্যা অনেক। কিন্তু কিছুই করা যায়নি, এটি চিন্তার বিষয়। নারায়ণগঞ্জে রাজনীতির চেয়ে অপরাজনীতি বেশি হচ্ছে, ঐক্যের চেয়ে কোন্দল বেশি হচ্ছে। কিছু লোক কোন্দল লাগিয়ে রাখার চেষ্টা করেন।
বুধবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শামীম ওসমান বলেন, শোক দিবসের আলোচনা সভায় জাতির পিতার কন্যা কিছু কষ্টের বহিঃপ্রকাশ করেছেন। বলেছেন, ‘এত বড় আওয়ামী লীগ সেদিন কেউ প্রতিবাদ করল না কেন। বঙ্গবন্ধুর লাশ সেখানে পড়ে রইল। আমার পিতার লাশ কেউ ধরতে আসেনি। রিলিফের কাপড় দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে কবরে শায়িত করা হয়। তার মৃত্যুর পরও কিছু হবে তিনি এমন আশা করেন না।’ আমার প্রশ্ন বঙ্গবন্ধু কন্যার এই আক্ষেপে আমরা আসলে করছি কী? বড় বড় বক্তব্য দিচ্ছি সবাই, যেন আমরা পৃথিবী জয় করে ফেলছি। আমরা আজ কী করছি স্মরণ, শোক সভা, খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন। এগুলো থাকবে তো, যদি নেত্রীর ওপর আঘাত আসে? বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করছি, না পদ-পদবি বাগিয়ে নিচ্ছি। এটা আমাদের উপলব্ধি করতে হবে।
তিনি বলেন, বেঁচে যাওয়ার অপরাধে শেখ হাসিনাকে ২১ বার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। কোথায় ছিল মানবাধিকার সংস্থা আর তাদের কর্মীরা, কোথায় ছিল বিচার বিভাগ আর বিচারপতিরা? প্রশ্ন রাখতে চাই এই আইনজীবীদের সভায়। দল ক্ষমতায় থাকার পরও বিচারকবৃন্দ বিব্রত বোধ করেছেন বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের রায় দিতে। এটাই বাস্তবতা, এটাই সত্য। লজ্জা লাগছে। শেখ হাসিনার এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজুন।
স্থানীয় রাজনীতি প্রসঙ্গে শামীম ওসমান বলেন, আমার মনে হয় নারায়ণগঞ্জে রাজনীতির চেয়ে অপরাজনীতি বেশি হচ্ছে। কিছু লোক বড় বড় পদ-পদবি বাগিয়ে নিয়ে এনজয় করছেন, করেন আপত্তি নাই। জেলা, মহানগর ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কাছে বলতে চাই- সামনে সময় খুব ভালো না। আমার কারণে যদি দল ক্ষতিগ্রস্ত হয়, প্রয়োজনে আমাকে দল থেকে বের করে দিন। সবাই প্রস্তুতি নেন। এলাকায় এলাকায় ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে যে কোন্দল আছে তা নিরসন করুন। দলকে সুশৃঙ্খল করুন। আজ সবাই মিলে দল করলে হয়ত নেত্রীকে বলতে পারতাম পঁচাত্তরের মতো কিছু হলে আমরা কিছু করতে পারব।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েলের সভাপতিত্বে সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হাসনাত শহীদ মোহাম্মদ বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রবিউল আমিন রনি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন