শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

চা-শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ২৭ বিশিষ্টজনের সংহতি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ আগস্ট, ২০২২, ৯:২২ পিএম

চা-বাগান শ্রমিকদের জীবনযাপন উপযোগী ‘মানবিক মজুরি’ ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন ২৭ বিশিষ্টজন। শুক্রবার (১৯ আগস্ট) এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান তারা। বিবৃতিতে তারা বলেছেন, চা–বাগানের শ্রমিকেরা ৩০০ টাকা মজুরির যে দাবি তুলেছেন, তা বিদ্যমান বাজারমূল্যের তুলনায় কম।

৯ আগস্ট থেকে চা-বাগানের শ্রমিকেরা ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে আন্দোলন করছেন। সম্প্রতি ত্রিপক্ষীয় সভায়ও বিষয়টি সুরাহা হয়নি। মালিকপক্ষ শ্রমিকদের দাবির বিপরীতে ১৪ টাকা মজুরি বৃদ্ধিতে রাজি হয়েছে। বিবৃতিদাতারা বলেন, ১২০ টাকা মজুরি কিংবা এর সঙ্গে আরও ১৪ টাকা যোগ করে ১৩৪ টাকা বিদ্যমান উচ্চমূল্যের বাজারে কখনোই জীবনযাপনের উপযোগী মানবিক মজুরি হতে পারে না।

বিবৃতিতে বলা হয়, প্রায় ২০০ বছর আগে যাত্রা শুরু করা এই শিল্পের শ্রমিকেরা এখনো একইভাবে শোষণের শিকার হচ্ছে, যা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। এ জন্য রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা রয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানে বর্ণিত রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে কৃষক ও শ্রমিকের মুক্তির কথা বলা হয়েছে। সে অনুযায়ী চা–বাগানের শ্রমিকদের সকল প্রকার শোষণ থেকে মুক্তির জন্য রাষ্ট্রকেই উদ্যোগ নিতে হবে। শ্রমিকের মৌলিক প্রয়োজনের জোগান নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য বাগানশ্রমিকদের জীবনযাপনের উপযোগী মানবিক মজুরি নিশ্চিতে রাষ্ট্রকে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

বিবৃতিদাতারা বলেন, চা-বাগানে ঔপনিবেশিক আমলের দাসপ্রথা বিদ্যমান। ফলে এখানে বংশপরম্পরায় শ্রমিক হিসেবে নিয়োজিত হওয়াটাই যেন স্বাভাবিকতা পেয়েছে। বাগান শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা বঞ্চনার ব্যবস্থাপনা এই পরম্পরাকে টিকিয়ে রাখছে। এখানকার শ্রমিক ও তার পরিবার-পরিজন প্রয়োজনীয় খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ও পুষ্টি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, যা সভ্যসমাজে কাম্য হতে পারে না।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘চা-বাগানের শ্রমিকদের মৌলিক প্রয়োজন মেটানো এবং পুষ্টির স্তর-উন্নয়ন ও জনস্বাস্থ্যের উন্নতিসাধনকে রাষ্ট্র তার অন্যতম কর্তব্য হিসেবে গণ্য করেনি। যা বাগানশ্রমিকদের প্রতি রাষ্ট্রের বৈষম্যমূলক আচরণের উৎকট প্রকাশ। এ বৈষম্য দূর করতে হবে, যেখানে রাষ্ট্রের কার্যকর ভূমিকা গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই।

বিশিষ্টজনেরা বলেন, চা-বাগানের শ্রমিকেরা ৩০০ টাকা মজুরির যে দাবি তুলেছেন, তা বিদ্যমান বাজারমূল্যের তুলনায় কম। মৌলিক প্রয়োজন পূরণ, পুষ্টির স্তর-উন্নয়ন ও প্রত্যাশিত জনস্বাস্থ্যসেবা প্রাপ্তিতে সক্ষম করে তুলতে চা–বাগানশ্রমিকদের জন্য জীবনযাপন উপযোগী “মানবিক মজুরি” ঘোষণা করতে হবে। বাজারমূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধানে মজুরি বৃদ্ধির স্থায়ী কাঠামো গড়ে তোলাসহ চা-বাগান শ্রমিককে শ্রম আইনের আওতায় নিতে রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা করবে।

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন পঙ্কজ ভট্টাচার্য, সুলতানা কামাল, রাশেদা কে চৌধূরী, রামেন্দু মজুমদার, সারওয়ার আলী, নুর মোহাম্মদ তালুকদার, রানা দাশ গুপ্ত, ডা. ফওজিয়া মোসলেম, এস এম এ সবুর, খুশী কবির, জাহিদুল বারী, রোবায়েত ফেরদৌস, সালেহ আহমেদ, জোবায়দা নাসরিন, পারভেজ হাসেম, আবদুল ওয়াহেদ, রাজিয়া সামাদ ডালিয়া, জাকির হোসেন, সেলু বাসিত, আব্দুর রাজ্জাক, জীবনানন্দ জয়ন্ত, এ কে আজাদ, অলক দাস গুপ্ত, দীপায়ন খীসা, আবদুল আলীম, বিভূতিভূষণ মাহাতো ও আবদুল মোতালেব।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন