মোস্তাফিজুর রহমান মানিক পরিচালিত ও জিয়াউল রোশান-মাহিয়া মাহি জুটি অভিনীত সিনেমা ‘আশীর্বাদ’ মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে। সরকারি অনুদান প্রাপ্ত সিনেমাটি এখন আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়েছে। সম্প্রতি সিনেমাটির মুক্তি উপলক্ষে সিনেমাটির প্রযোজক জেনিফার ফেরদৌসের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর থেকেই সমালোচনার শুরু হয়। এদিন প্রযোজক ব্যপক অভিযোগ আনেন সিনেমাটির নায়িকা মাহিয়া মাহির বিরুদ্ধে। এবার প্রযোজকের বিরেুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করেছেন সিনেমার নায়ক জিয়াউল রোশান ও নায়িকা মাহিয়া মাহি। এ নিয়ে তারা গত ১৮ আগস্ট সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান মানিক। মোস্তাফিজুর রহমান মানিক বলেন, ‘আশীর্বাদ’ আমার প্রথম অনুদানের সিনেমা। অনেক স্বপ্ন নিয়ে সিনেমাটি বানাতে চেয়েছিলাম। সিনেমার গল্পটা ভালো ছিল। এজন্য বানাতে আগ্রহী হই। তবে সিনেমাটি মনের মতো করে নির্মাণ করতে পারিনি। তিনি বলেন, আমি যদি স্ট্রং হতে পারতাম তবে ৬০ লাখ টাকায় সিনেমাটি ভালভাবে বানাতে পারতাম। কিন্তু সেটি পারিনি। এই সিনেমা যারা দেখবে তারা আমাকে গালাগালি করবে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে এই নির্মাতা আরো বলেন, আমার চাওয়া না চাওয়ায় কিছু যায় আসে না। যেহেতু সিনেমাটি সেন্সর পেয়েছে সেহেতু কেউ না চাইলেও মুক্তি পাবে। একটা সিনেমা বানাতে যে পারিশ্রমিক আমি নিই, তার দশ ভাগের এক ভাগ পারিশ্রমিকও এই সিনেমায় নিইনি। অন্যান্য সিনেমার মত আশীর্বাদ ও আমার সন্তানের মত। তবে ভালভাবে তৈরী করতে পারিনি। মাহিয়া মাহি বলেন, সিনেমা নিয়ে অনেকের অনেক ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছে। কারো ভাল অভিজ্ঞতা, কারো তিক্ত অভিজ্ঞতা। এমন তিক্ত অভিজ্ঞতা আগে কখনো হয়নি। আজ এমন পরিস্থিতিতে সাংবাদিক ভাইদের সামনে একটি সিনেমা নিয়ে কথা বলতে হবে তা কখনো ভাবিনি। খুব স্বপ্ন নিয়ে এই অনুদানের সিনেমাটিতে কাজ করেছি। যখন মানিক স্যার আমাকে বলেছেন তখন নিজেকে ভাগ্যবতী মনে হয়েছিল। আশা ছিল, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই সিনেমা দেখবেন। জানিনা তিনি দেখবেন কিনা। সরকারি অনুদানের সিনেমা হওয়ায় হয়তো তিনি দেখতে পারেন। মাহি বলেন, সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এ সিনেমায় প্রযোজক জেনিফার ফেরদৌস এক টাকাও খরচ করেননি। তাই তাকে প্রযোজকও বলা যায় না। কারণ, তিনি সরকারি টাকা দিয়ে সিনেমা নির্মাণ করেছেন। নিজের টাকা খরচ করেননি। আমি বলব, তিনি লাইন প্রডিউসার। সরকারি অনুদানের সিনেমা তিনি যেনতেন ভাবে মুক্তি দিতে পারেন না। আমি সিনেমার জন্য যেখানে ১০ লাখ টাকা পারিশ্রমিক নিই, সেখানে এ সিনেমার জন্য ৫ লাখ নিয়েছি। রোশান ১ লাখ টাকা নিয়েছেন। এভাবে সকল আর্টিস্ট অনেক কম টাকায় কাজ করেছেন। জেনিফার ফেরদৌসকে চেনেন না দাবি করে মাহি আরও বললেন, ‘এই প্রযোজককে তো আমি চিনি না। নির্মাতার ওপর ভরসা করেই সিনেমাটি করেছি। পারিশ্রমিকের দিকে আমরা সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে কাজ করেছি। অথচ শেষ পর্যন্ত তিনি (প্রযোজক) প্রেস কনফারেন্স করে বললেন, নায়ক-নায়িকা সিনেমার প্রচারণা করছেন না। মাহি বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ‘আশীর্বাদ’ সিনেমাটিকে সরকার ৬০ লাখ টাকা অনুদান দেয়। প্রযোজক ২৫ লাখ টাকাও খরচ করেননি। অনুদানের সিনেমায় জবাবদিহি থাকার দরকার। আমি জানিনা কেন অনুদানের সিনেমায় কোন জবাবদিহি নাই। সরকার যে টাকা দিচ্ছে সে টাকা সত্যিকার অর্থে কাজে লাগানো হয়েছে কিনা, তার জবাবদিহিতা থাকা দরকার। নিজ থেকে বিনিয়োগকারি একজন প্রযোজক সিনেমা মুক্তির আগে চিন্তা করেন, কিভাবে তার লগ্নি ফিরে পাওয়া যাবে। এ নিয়ে তিনি তৎপর থাকেন। অনুদানের সিনেমার টাকা কিভাবে আসবে, এটা নিয়ে অনেকেরই কোন চিন্তা থাকে না। কারণ, এ অর্থ তার নয়, সরকারের। আমি হলফ করে বলতে পারি, আর্শীবাদ সিনেমায় ২৫ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়নি। আমি জানি, কিভাবে কত টাকা খরচ হয়েছে। কারণ, আমি এই সিনেমায় কাজ করেছি। মাহি আরও বলেন, অনুদানের টাকায় কেউ শপিং যাতে না করে, সেজন্য তদারকি আর জবাবদিহী থাকা জরুরী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন