জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশের নিত্যপণ্যের বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। নিত্যপণ্যের দামে মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে মিল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। তারা জানায়, এখন থেকে বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ৭ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি হবে ১৯২ টাকায়। গতকাল মঙ্গলবার মিল মালিকদের সংগঠনের পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। যা গতকাল থেকেই কার্যকর বলে জানানো হয়েছে।
অ্যাসোসিয়েশন জানায়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। মিল মালিকদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল গ্রাহক পর্যায়ে বিক্রি হবে ১৭৫ টাকায়, যা এর আগে ১৬৬ টাকা নির্ধারিত ছিল। অর্থাৎ, খোলা সয়াবিনের দাম লিটারে বাড়ছে ৯ টাকা।
প্রতি লিটার বোতলের সয়াবিন তেল বিক্রি হবে ১৯২ টাকায়, যা এতদিন ১৮৫ টাকা ছিল। অর্থাৎ লিটার বোতলে ক্রেতাকে ৭ টাকা করে বাড়তি গুণতে হবে। সয়াবিন তেলের ৫ লিটারের বোতল বিক্রি হবে ৯৪৫ টাকায়। সেক্ষেত্রে লিটার প্রতি দাম পড়বে ১৮৯ টাকা। নতুন সিদ্ধান্তে সয়াবিনের দাম বাড়লেও লিটারে ৭ টাকা কমেছে পাম তেলের দাম। প্রতি লিটার পাম তেল এখন বিক্রি হবে ১৪৫ টাকায়, যা আগে ১৫২ টাকা নির্ধারিত ছিল।
মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সচিব নুরুল ইসলাম মোল্লা স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, গত ৩ অক্টোবর সয়াবিন তেলের মূল্য সমন্বয়ের বিষয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। সে অনুযায়ী গত ১৭ আগস্ট আলোচনার পর মূল্যবৃদ্ধির এই ঘোষণা দেওয়া হল। ২৩ আগস্ট থেকে নতুন এই দাম কার্যকর হবে।
এ প্রসঙ্গে সমিতির বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সচিব নুরুল ইসলাম মোল্লা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কিছুটা কমলেও ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমদানি খরচ বেড়ে গেছে। সে কারণে আমরা লিটারে দাম ২০ টাকা করে বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত খোলা সয়াবিন তেল লিটারে ৯ টাকা ও বোতলের সয়াবিন তেল লিটারে ৭ টাকা করে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে।
এর আগে গত ১১ আগস্ট সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছিলেন, এক সপ্তাহের মধ্যে ভোজ্যতেলের দাম সমন্বয় হবে। সেদিন তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমেছে কিন্তু আমাদের দেশে ডলারের দামটা বেড়ে গেছে। তাই যে সুফলটা পাওয়ার কথা, সেটা পাওয়া যাচ্ছে না।
নিয়ম অনুযায়ী ভোজ্যতেলের দাম বাড়াতে বা সমন্বয় করতে কোম্পানিগুলো ট্যারিফ কমিশনকে প্রস্তাব দেয়। এরপর কমিশন তা পর্যালোচনা করে। সে অনুযায়ী নির্ধারিত হয় তেলের মূল্য। দেশে মেঘনা গ্রুপ, সিটি গ্রুপ, টি কে গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, বাংলাদেশ এডিবল অয়েল লিমিটেডসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান অপরিশোধিত ভোজ্যতেল আমদানির পর পরিশোধন করে বাজারে ছাড়ে। কেউ কেউ সয়াবিন বীজ আমদানি করে তেল উৎপাদন করে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন