বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, ২০২৩ সালে, আমরা হয় মরবো, না হয় গণতন্ত্রকে উদ্ধার করবো। কারণ আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, আমরা জনগণের পাশে থাকতে চাই। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি প্রতিবাদ করায় এরই মধ্যে আমাদের তিন সন্তান মায়ের বুক খালি করে চলে গেছে। এর জবাব কে দেবে? আমরা ভোটের আগে মানুষের দ্বারে দ্বারে যাই, আশ্বাস দেই ভোট চাই। আর আওয়ামী লীগ সরকার ভোটের আগে ভারত যায়, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রে যায়। তারা জনগণের ভোটে বিশ্বাস করে না। ষড়যন্ত্র করে বিদেশী শক্তির সহযোগিতা নিয়ে কিভাবে ক্ষমতায় যাওয়া যায় তারা সেই চেষ্টা করে। তিনি বলেন, সেইগুড়ে বালু। প্রত্যেকবার ২০১৪ সাল হবে না, ২০১৮ সাল হবে না। ২০২৩ সালে, আমরা হয় মরবো, না হয় গণতন্ত্রকে উদ্ধার করবো।
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর বিএনপির পশ্চিম জোনে উত্তরা-পশ্চিম থানার কামারপাড়া ব্রিজ এলাকায় জ্বালানি-নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য মূল্যবৃদ্ধি, লোডশেডিং, গণপরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে ভোলায় নুরে আলম, আব্দুর রহিম ও নারায়ণগঞ্জে শাওন নিহত হওয়ার প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানার কামারপাড়া ব্রিজ এলাকায় সমাবেশে যোগ দিতে আসার পথে বাধার মুখে পড়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের লাঠিপেটা করেছেন এবং ধাওয়া দিয়েছেন বলে সমাবেশে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতারা। সমাবেশে শেষে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, স্থানীয় ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগসহ ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা সমাবেশে আসার পথে আমাদের নেতাকর্মীদের হামলা চালিয়েছে, বাধা দিয়েছে। এতে ২৫-৩০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এর মধ্যে ৩ জনের অবস্থা গুরুতর। এতো বাধার পরও আমরা সমাবেশ সফল করেছি।
সমাবেশে ইকবাল হাসান মাহমদু টুকুও অভিযোগ করে বলেন, এই মিটিংয়ে আসার পরে আওয়ামী দাঙ্গাবাহিনী আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে, এতে আমাদের ২৫-৩০ জন ছেলের রক্ত ঝড়িয়েছে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান টুকু।
পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশ্যে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনী রাজারবাগে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে ছিল। সেদিন আমি তাদের সাথে ছিলাম। কিন্তু আমি যখন দেখি সেই পুলিশ ভাইয়েরা কথায় কথায় জনগণের ওপর গুলি চালায়, তখন আমরা কষ্ট পাই। এই পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ করেছিল। এই পুলিশ এখন মানুষের বুকে গুলি চালিয়ে রক্ত বের করে। আমি কিন্তু সব পুলিশ ভাইদের দোষ দিচ্ছি না। সিংহভাগ পুলিশ বন্দুক তাক করতে চায় না। কিন্তু চাকরির ভয়ে তারা এই কাজ করে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, বিএনপি আন্দোলন করে জনগণের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য, ভোটাধিকার ফিরে পাবার জন্য। জনগণের ভোটে বিএনপি যদি ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ পায়, একা যাবে না। এখন যারা আন্দোলন সংগ্রাম করছেন তাদের সাথে নিয়ে সরকার গঠন করবে। নতুন বাংলাদেশ উপহার দেবে-এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার।
খালেদা জিয়ার কাছ থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, জনগণের ভাষা বুঝতে পেরে গণতন্ত্রের মাতা খালেদা জিয়া সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা যুক্ত করেছিলেন। সেই নির্বাচনে পরাজয় বরণ করে বিরোধী দলের আসনে বসেছিলেন। আপনারাও খালেদা জিয়ার কাছ থেকে শিক্ষা নিতে পারেন। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা মেনে নিয়ে নির্বাচন দিন। দেখেন কে হারে, কে জিতে।
সমাবেশে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাজাহান ওমর বীরউত্তম, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নাল আবেদিন ফারুক, কেন্দ্রীয় নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল,কামরুজ্জামান রতন, তাবিথ আউয়াল, নাজিম উদ্দিন আলম, ইয়াছিন আলী ঢাকা মহানগরের উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন