পূর্ব প্রকাশিতের পর
উত্তর : চার. যৌনাঙ্গকে হারাম থেকে সংযত রাখা: অর্থাৎ বিবাহিত স্ত্রী এবং দাসীদের ছাড়া সব পর নারী থেকে যৌনাঙ্গকে হেফাজত রাখা এবং স্ত্রী ও দাসীদের সাথে কামবাসনা পূর্ণ করার ক্ষেত্রেও শরীয়তের বিধিমালা মেনে চলা। হায়েজ, নেফাস এর সময় এবং নিষিদ্ধ স্থানে সহবাস করা থেকে বিরত থাকা। পাশাপাশি নিজের কামবাসনা পূর্ণ করার এদুটি বৈধ পথ ছাড়া অন্যকোন উপায়ে যৌনাচার করা থেকে নিজেকে বিরত রাখা। যারা এই দুইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে পবিত্র কুরাআানে তাদেরকে তিরস্কৃত না হওয়ার ঘোষণা করা হয়েছে। আর যারা অবৈধ পথে যৌনাচার করবে তারা হবে সীমালঙ্গনকারী। (সূরা মু’মিনুন-৪-৫)
পাঁচ. আমানত রক্ষা করা: আমানত একটি ব্যাপক শব্দ। হুকুকুল্লাহ এবং হুকুকুল ইবাদ সম্পকৃত যেকোন আমানত এর অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহর হক সম্পকৃত আমানত হলো, আল্লাহর সকল আদেশগুলো পালন করা আর নিষেধ গুলো বর্জন করা। আর বান্দার হক সম্পৃক্ত আমানত হলো, কারো কাছে কেউ কোন অর্থ-সম্পদ জমা রাখলে তা যথাযথ হেফাজত করা এবং যথাসময়ে তা প্রত্যাবর্তন করা। এছাড়া কেউ কারো কাছে কোন গুপন কথা বললে সেটা গুপন রাখাও একটি আমানত। শরীয়ত সম্মত অনুমতি ব্যতিরেকে কারও গোপন তথ্য ফাঁস করা আমানতে খেয়ানত করার নামান্তর। আমানত রক্ষা করা মুমিনের আলামত আর তা খেয়ানত করা মুনাফিকের আলামত।
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেনঃ মুনাফিকের আলামত তিনটি। এক. যখন কথা বলে মিথ্যা বলে। দুই. যখন ওয়াদা করে ভঙ্গ করে। আমানত রাখা হলে খেয়ানত করে। (বুখারী-৩২)
ছয়. ওয়াদা পূর্ণ করা: বিভিন্ন সময় মানুষ কোন কাজ করা বা কাউকে কোন কিছু দেয়ার ওয়াদা করে থাকে। শরীয়তের দৃষ্টিতে এমন ওয়াদা পূর্ণ করাও জরুরী। শরীয়ত সম্মত ওজর ব্যতিত তা খেলাপ করা জায়েয নয়। তেমনিভাবে যাপিত জীবনে মানুষ প্রয়োজনে একে অপরের সাথে দ্বীপাক্ষিক বিভিন্ন চুক্তি করে থাকে এবং উভয়পক্ষ তা পূর্ণ করাকে আবশ্যক মনে করে। এমন চুক্তি পূর্ণ করা ফরয এবং তা ভঙ্গ করা হারাম। আয়াতে একতরফা ওয়াদা বা দ্বীপাক্ষিক চুক্তি উভয় প্রকার অঙ্গীকারকে পূর্ণ করার কথা বলা হয়েছে । পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেন, হে ঈমানদারগণ! তোমরা অঙ্গীকার পূর্ণ করো...। (সূরা মায়দা-১) হাদিস শরীফে ওয়াদা ভঙ্গকারীর দ্বীন নেই বলে হুশিয়ারি করা হয়েছে।
হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুব কম ভাষণ আমাদের সামনে দিয়েছেন এবং তাতে বলেছেন, যার আমানত নেই তার ঈমান নেই। আর যার ওয়াদা ঠিক নেই তার দ্বীন নেই। (মিশকাতুল মাসাবীহ-৩৫)
সাত. নামাযে যত্নবান হওয়া: নামাযের প্রতি যত্নবান হওয়ার অর্থ হলো পাঁচ ওয়াক্ত নামাযকে যথা সময়ে মুস্তাহাব ওয়াক্তে আদায় করা এবং নামাযের পাবন্দি করা। যথাসময়ে নামায আদায় করাকে হাদীস শরীফে উত্তম আমল বলা হয়েছে। হযরত ইবনে মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম, কোন আমল আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়? তিনি বললেন, যথা সময়ে নামায আদায় করা। (বুখারী-৫০২)
উল্লেখিত সাতগুণে গুণান্বিত ব্যক্তিদেরকে পবিত্র কুরআনে সফলকাম এবং জান্নাতুল ফেরদাউসের উত্তরাধিকারী বলে ঘোষণা করেছেন। আল্লাহ আমাদেরকে এ গুণগুলো অর্জন করার তাওফিক দিন।
উত্তর দিচ্ছেন : মুফতি ইমামুদ্দীন সুলতান। মুহাদ্দিস-জামিয়া ইমদাদিয়া আরাবিয়া শেখেরচর,নরসিংদী
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন