আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আপনাদের ভূমিকা দেশী-বিদেশী সকলে পর্যবেক্ষণ করছে। কেউ রেহাই পাবেন না; অনেকে বলছে পালিয়ে যাবে। এখন আর বিদেশে পালিয়ে গিয়েও রক্ষা হয়না। মঈনউদ্দিন-ফখরুদ্দিন বিদেশে গেছে, কিন্তু ঘর থেকে বের হওয়ার আগে চারদিকে খোঁজ নেয় কোনো বাংলাদেশী সেখানে জমায়েত হয়েছে কিনা। তারা বিদেশে গিয়েও রক্ষা পাচ্ছেন না। পালিয়ে গিয়েও শেষ রক্ষা পাবেন- একে বারে ভুল ধারনা। মানবাধিকার লঙ্খনের জন্যও আপনারদের বিচার হবে। কোনো বিচার থেকে আপনারা রেহাই পাবেন না। এখনও সময় আছে বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করবেন না। বিশ্বে জনগণের বিরুদ্ধে যারা অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করেছেন তারা দেশেও রেহাই পাইনি, বিদেশেও পাননি।
ঢাকা মহানগরে ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ধোলাইখালে কাজী কমিউনিটির সামনে ঢাকা জোন-৬ (সূত্রাপুর, গেন্ডারিয়া, ওয়ারী, কোতয়ালী থানা) বিএনপির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। এতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সিনিয়র সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর পরিচালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ঢাকা মহানগরের উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, বিএনপি নেতা রওনকুল ইসলাম টিপু, ইসাহাক সরকার, মকবুল হোসেন টিপু প্রমুখ।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আমরা রাস্তায় নেমে গেছি। আমাদের পরিবারকে বলেছি, আমাদের জীবনের চিন্তা করবা না, দেশকে মুক্ত করার আন্দোলনে আছি। তিনি বলেন, আমরা কেউ ফিরে যাব না। জীবিতও যাব না, আমাদের নুরে আলম, আবদুর রহিম ও শাওন তারা কেউ মৃত্যুবরণ করেনি। তারাও আমাদের সাথে, আমাদের হৃদয়ে, আমাদের আন্দোলনে আছে। আমরা শেখ হাসিনার পতন ঘটিয়ে আমরা বাড়ি ফিরে যাব। এই যে রাস্তায় নেমেছি হয় জীবন দিয়ে যাব, অথবা বেঁচে থাকলে দেশকে মুক্ত করব। আমাদের পরিবারকে বলেছি, আমাদের জীবনের চিন্তা করবা না।
তিনি আরো বলেন, এখন দেশ বাঁচানোর আন্দোলনে যারা শহীদ হবেন, আগামীর বাংলাদেশে যে গণতন্ত্র ফিরে আসবে, যে মুক্ত বাংলাদেশ গড়বো, তারেক রহমান সাহেব বাংলাদেশে জাতীয় সরকারের কথা বলেছেন,গণতন্ত্র, শান্তি, ন্যায় বিচার, মানুষের জীবনযাত্রার মানউন্নত করে,অর্থনৈতিক মুক্তির মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশকে নতুন জীবন দিবেন। তারেক রহমান যে মুক্তির কথা বলেছেন, তার একটি রূপরেখাও আপনারা পাবেন। আমরা বাংলাদেশের মানুষের কাছে সবকিছু পরিচ্ছন্ন রাখব। এই আন্দোলনে কোনো কিছু অজানা থাকবে না। কী জন্য আন্দোলন করছি, তাও বলে দেব। জাতীয় সরকার এই দেশের জনগণের জন্য কী কী করবে এটাও পরিষ্কারভাবে তুলে ধরব। একেবারে পরিচ্ছন্নভাবে আন্দোলন এগিয়ে যাবে। দেশ গঠনের কাঝ এগিয়ে যাবে। জনগণকে সাথে নিয়ে সেই কাজ সমাপ্ত করবো। গুলি আসুক, লাঠি আসুক কেউ পিছনে যাব না, সামনে এগিয়ে যাব-এটা হচ্ছে আজকের শপথ।
সমাবেশে বিপুল নেতাকর্মীদের উপস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, পুরান ঢাকা আজ দেখিয়ে দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সন্ত্রাসী হামলার (মিরপুরে হামলা) পরে আমি এই সমাবেশকে প্রতিবাদ সমাবেশ হিসেবে গণ্য করছি। সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদ হিসেবে হাজারো জনতা এখানে জমায়েত হয়েছেন। আপনারা জবাব দিয়েছেন সন্ত্রাসীদের, আওয়ামী পুলিশদের। আজকে আমরা আশান্বিত হয়েছি। এই আন্দোলন তার সঠিক পথে যাবে।
আমীর খসরু বলেন, আমরা যে আন্দোলন নেমেছি এটা পুরান ঢাকা ছাড়াও সারাদেশে জনগণের ঢল নেমেছে, জনতার বাধ ভেঙ্গে গেছে। আওয়ামীলীগ মৃত্যু সজ্জায় গিয়েছে? আওয়ামী লীগের রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে গেছে। যে কোনো সময় আওয়ামী লীগের মৃত্যু সংবাদ পাবেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে। বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই দখলদার, অবৈধ, অনির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করার। বাংলাদেশের জনগণ শপথ নিয়েছে । সেই ভয়ে যারা ভীত হয়ে জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন সেটা আওয়ামী সন্ত্রাসী হোক অথবা আওয়ামী পুলিশ হোক, তাদেরকে বলছি, এখান থেকে আপনাদের বেরিয়ে আসার সুযোগ নেই। যারা দেশে আওয়ামী পুলিশের ভূমিকা পালন করছেন, তাদেরকে বলতে চাই, বাংলাদেশের সংবিধানে আপনাদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব হচ্ছে দেশের মানুষের জীবনের সুরক্ষা দেওয়া, সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করা, গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করা। কিন্তু আমরা দেখছি, কেউ কেউ আওয়ামী পুলিশ বাহিনী হওয়ার যারা চেষ্টা করছেন অথবা হয়ে গেছেন। এটা শুধুমাত্র বাংলাদেশের সংবিধানের লঙ্ঘন নয়; এটা আন্তর্জাতিক ক্রাইমের আওতায় পড়ে। আপনারা দেখেছেন পুলিশ প্রধানসহ কিছু লোকের অবস্থা কী হয়েছে। ###
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন