বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

দলবাজরাই সুবিধাভোগী,

চাকরি

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০৩ এএম

ক্ষমতাসীন দলের আদর্শে বিশ্বাসী প্রমাণে মরিয়া হয়ে উঠেছেন প্রজাতন্ত্রের একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারী
সরকারি চাকরি করেও অনেকেই রাজনৈতিক দলের পদে রয়েছেন : সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নানা ভোগান্তিতে
জবাবদিহিতা না থাকায় সুবিধাবাদী সরকারি কর্মকর্তারা রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন : আলি ইমাম মজুমদার
প্রশাসনের কিছু কিছু কর্মকর্তার অসহিষ্ণুতা মাঠ প্রশাসনের ভাবমর্যাদা ক্ষতিগ্রস্ত করছে : আবু আলম মো. শহিদ খান
প্রশাসনে দলবাজ কর্মকর্তারাই সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। চাকরির শর্তে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘রাজনীতি’ নিষিদ্ধ হলেও এখন যে যত বেশি দলবাজ, সে ততবেশি সুবিধাভোগী হচ্ছেন। প্রমোশন, বড় বড় প্রকল্পের কাজ, পছন্দের পোন্টিং সবকিছুতেই দলবাজ কর্মকর্তারা এগিয়ে যাচ্ছেন। ফলে মেধাবী, প্রতিশ্রুতিশীল ও দক্ষ কর্মকর্তারা হয়ে পড়ছেন কোণঠাসা। তাদের কেউ ওএসডি হচ্ছেন আর ভাগ্য ভালো হলে গুরুত্বহীন জায়গায় পোষ্টিং দেয়া হচ্ছে। এতে করে মাঠপ্রশাসনে অনেক কর্মকর্তা অপ্রীতিকর ঘণ্টার জন্ম দিচ্ছেন। বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে সরকারকে। অথচ কয়েক বছর আগেও দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে দেখা যেত। কেউ কোনো দলের সমর্থক হলেও তা প্রকাশ করতেন না। অথচ এখন আওয়ামী লীগ নেতাদের মতোই সচিব থেকে শুরু করে ডিসি, ইউএনওদের মধ্যে প্রতিযোগিতা কে কত বড় আওয়ামী লীগ প্রেমী।

এদিকে সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রশাসনে জবাবদিহিতা এবং জনদুর্ভোগ কমাতে মাঠপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে বিভাগীয় পর্যায়ে বৈঠক করছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। এরই মধ্যে ঢাকা বিভাগসহ ৫টি বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে সভা করেছেন। আজ বিকেলে সিলেটে যাচ্ছেন। শুক্রবার সিলেট বিভাগে মাঠপ্রশাসনের বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শিক্ষা অফিসার, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সভা করবেন বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

জানতে চাইলে সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহিদ খান ইনকিলাবকে বলেন, মাঠপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের অপেশাদার বা অকর্মকর্তাসুলভ আচরণ কাম্য নয়। সংবিধানের ২১ (২) অনুচ্ছেদ এবং অন্যান্য আইনবিধি অনুসরণ করেই সব গণকর্মচারীকে তার দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে সবাই অসহিষ্ণু নন। কেউ কেউ অসহিষ্ণু হয়ে উঠছেন, যা মাঠপ্রশাসনের ভাবমর্যাদা ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বলা যায়, আগের তুলনায় অসহিষ্ণুতা বেড়েছে।

বিএনপি সরকারে শেষ সময়ে জ্বালানি উপদেষ্টার বাসায় বৈঠকে থাকা সরকারি কর্মকর্তাদের সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা অনুযায়ী সরকারি চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হলেও বর্তমান প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারী সরকারি চাকরি করেও রাজনৈতিক দলের পদ নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। এসব কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছে না জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এদিকে মাঠপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের বেপরোয়া আচরণের কারণে সুবিচার ও সুশাসন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষ এবং কর্মকর্তাদের কারণে বিব্রত প্রশাসন। প্রশাসনে দলবাজ কর্মকর্তারা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছেন। অন্যদিকে নানা ধরনের ভোগান্তিতে পড়েতে হচ্ছে কর্মচারীদের। বিএনপির আমলে উপদেষ্টার বৈঠকে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মচারী মোজাহিদুল ইসলাম চাকরি হারিয়েছেন। বর্তমানে প্রশাসনে কর্মকর্তারা নানা দুর্নীতি ও অপরাধ করেও চাকরি হারাতে হচ্ছে না। আবার সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা লঙ্খন করে অনেক ডিসি ও ইউএনওরা রাজনৈতিক দলের নেতাদের মতো বক্তব্য দিচ্ছেন। এ নিয়ে সমালোচনা ও হচ্ছে। তরে রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি ছাড়া সরকারি কর্মকর্তারা দলীয় অনুষ্ঠানে বক্তব্য বা বক্তব্য দিতে থাকতে পারে না মনে করেন প্রশাসন বিশেষজ্ঞরা।

আগামী মাসে জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে। এরই মধ্যে ডিসি পদে এসব কর্মকর্তার সাক্ষাৎকার নেয়া শেষ হয়েছে। যাদের নিয়োগ দেয়া হবে তাদের সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের তথ্য সংগ্রহ করছেন গোয়েন্দারা। এমনকি তাদের পরিবারের সদস্যদের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার বিষয়টিও যাচাই করা শেষ বলে জানা গেছে। দুটি গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে পৃথকভাবে কাজটি করেছে। নির্বাচনের প্রায় দেড় বছর আগে এ ধরনের গোয়েন্দা তৎপরতায় মাঠপ্রশাসনে কর্মকর্তাদের মধ্যে একধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। অনেকে বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ।

বর্তমানে প্রশাসনে সিনিয়ন সচিব ও সচিব পদে রয়েছেন ৭৬ জন কর্মকর্তা, সচিব পদমর্যাদায় গ্রেট-১ পদে ১৯ জন, অতিরিক্ত সচিব পদে রয়েছেন ৪৩৫ জন, যুগ্মসচিব পদে ৭১৭ জন, উপসচিব পদে রয়েছেন্র্র্র্র্র্র্র্রÑ ১ হাজার ৬৩৭ জন, সিনিয়র সহকারী সচিব রয়েছেন ১ হাজার ৮৭৮ জন, সহকারী সচিব ১ হাজার ২১১ জন, বিভাগীয় কমিশনার ৮ জন, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ১২ জন, জেলা প্রশাসক ৬৪ জন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ৫৩১ জন কর্মকর্তা প্রশাসনে দায়িত্ব পালন করছেন। এসব কর্মকর্তার মধ্যে ১১ জন সচিব, ১০২ জন অতিরিক্ত সচিব, ১৬০ যুগ্মসচিব এবং ৩৩২ জন উপসচিব এবং ৩১২ জন সিনিয়র সচিব কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে মন্তব্য করেন না। বাকিরা বেশিরভাগেই সরকারি ও বিরোধীদলের রাজনৈতিক দলের সম্পৃক্ত রয়েছেন যা জনপ্রশাসনের পিএসিসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেনি।

এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম ইনকিলাবকে বলেন, মাঠপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেয়া হয়। কেউ অভিযোগ না করলে তা আমলে নেয়ার সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সাবেক সচিব আলি ইমাম মজুমদার ইনকিলাবকে বলেন, সরকারি চাকরিজীজীরা রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। এই নীতিমালা আগে থেকেই আছে। কিন্তু এটা কেউ কেউ মানছেন না। তবে সরকারি চাকরিজীবীদের স্বামী বা স্ত্রী সক্রিয় রাজনীতি করতে পারবে না। এ ধরনের বিধিমালা করা সঠিক হবে না। কারণ এতে ব্যক্তির নাগরিক অধিকার খর্ব হবে। তবে আসল সমস্যা হলো স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতার প্রশ্নে। কোনো সরকারি চাকরি যেন তার রাজনীতিবিদ স্বামী বা স্ত্রীর ক্ষমতা ব্যবহার করে বাড়তি বা অবৈধ সুবিধা নিতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রাজনীতি থেকে দূরে রাখার সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারণ যারা সরকারে যান, তারা প্রশাসনকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করেন। এর সুবিধা নিয়ে কিছু অতি উৎসাহী, সুবিধাবাদী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।

এদিকে দেশে সুশাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং জনদুর্ভোগ কমাতে মাঠপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে বিভাগীয় পর্যায়ে বৈঠক করছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। এরই মধ্যে ঢাকা বিভাগসহ ৫টি বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে সভা করেছেন। আজ বিকালে সিলেটে যাচ্ছেন। শনিবার সিলেট বিভাগে মাঠপ্রশাসনের বিভাগীয় কমিশনার, ডিসি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, শিক্ষা অফিসার, জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এবং পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে সভা করবেন বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

জানা গেছে, মাঠপ্রশাসনসহ মন্ত্রণালয়ে প্রশাসন ক্যাডারে দক্ষ, মেধা ও সৃজনশীলতা নিয়ে উদ্বিগ্ন নীতি নির্ধারকরা। যে নথি তিন-চার দিনে অনুমোদন হওয়ার কথা কর্মকর্তাদের দক্ষতা, বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতার অভাবে তা অনুমোদন পেতে অনেক ক্ষেত্রে চার-পাঁচ মাসও লেগে যাচ্ছে। এতে সেবাপ্রার্থীদের ভোগান্তি যেমন হয়, তেমনি সরকারের কাজের গতিও মন্থর হয়, প্রকল্প বাস্তবায়নেও বিলম্ব ঘটে। ফাইল যথা সময়ে নিষ্পত্তি, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, সভা আহŸান, নতুন প্রকল্প গ্রহণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে সরকারের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের কর্মকর্তারা প্রায়ই প্রশ্নের মুখোমুখি হচ্ছেন। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ভালো আচরণের পাশাপাশি প্রচুর বিব্রতকর আচরণের নজির রয়েছে। সবই গণমাধ্যমে না এলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থাকায় কিছু কিছু ঘটনা প্রকাশ হচ্ছে। এসব ঘটনায় বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়ছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাতে আবারও ক্ষমতায় আসেন, সে জন্য গত ১৭ সেপ্টেম্বর সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের বিরুদ্ধে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়ে আইনি নোটিশ দেয়া হয়। পরে নির্বাচন কমিশন থেকে ডিসি রিটার্নিং কর্মকর্তা পরিবর্তন করে। তবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

গত ২১ আগস্ট মাদারীপুরের ডাসারে আওয়ামী লীগের দলীয় অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমীন ইয়াছমীন বক্তব্য রাখেন ডাসার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমীন ইয়াছমীন। এ ব্যাপারে মাদারীপুর আইন সহায়তা কেন্দ্র লিগ্যাল এইড অ্যাসোসিয়েশন সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ‘সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালা ১৯৭৯-এর ২৫ উপবিধি (সংশোধিত) ২০০২ সালের সংশোধিত বিধি মোতাবেক সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে পারবে না এবং রাজনৈতিক কর্মকাÐে অংশগ্রহণ করা থেকে তাদের বিরত থাকতে বলা হয়েছে। নির্বাহী কর্মকর্তা শারমীন ইয়াছমীন বলেন, ‘আমি প্রধান অতিথি ছিলাম এবং ডাসার থানার ওসি বিশেষ অতিথি ছিলেন। সাধারণত দলীয় কোনো কর্মসূচিতে আমরা যাই না। যেহেতু ডাসার একটি নবগঠিত উপজেলা ও শোকের একটি ঘটনা। তাই এ দুটি কারণেই আমি অনুষ্ঠানে গিয়েছি।

ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী (ইউএনও) কর্মকর্তা রেজাউল করিম স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর ও বিজয় দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করেছেন। গত ১৬ ডিসেম্বর বিকালে প্রধানমন্ত্রীর শপথবাক্য পাঠ অনুষ্ঠানে যোগদানের জন্য পীরগঞ্জের ইউএনও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের আহŸায়ক রেজাউল করিম লাল-সবুজ রঙের পাঞ্জাবি কিনে মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে উপহার হিসেবে বিতরণ করেন। ওই পাঞ্জাবি পরে তিনিসহ অন্য মুক্তিযোদ্ধারা শপথবাক্য পাঠ অনুষ্ঠানে অংশ নিলেও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা খয়রাত আলী, মুক্তিযোদ্ধা দবির উদ্দীন, কফিল উদ্দীন ও সলেমানসহ আরও কয়েকজন ইউএনও’র কাছে উপহারের পাঞ্জাবি চাইতে গেলে তিনি তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে তাড়িয়ে দেন। ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী (ইউএনও) কর্মকর্তা রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে তদন্ত হয়েছে।

এদিকে নাটোরের সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল কর্মকর্তা সৈয়দ মুর্তজা আলী বাবলু। সরকারি বিধিমালা অনুযায়ী, সরকারি চাকরি করে কেউ দলীয় রাজনীতি করতে না পারলেও তিনি ব্যাংকের পাশাপাশি জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন ২০১৪ সাল থেকে।
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুরের কারিগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত। তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বে আছেন। নিয়মিত অংশ নেন দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে।

গত বছর সাংবাদিক পিটিয়ে বড় আলোচনায় আসেন কুড়িগ্রামের তখনকার ডিসি সুলতানা পারভীন ও তার অধীন তিন ম্যাজিস্ট্রেট নাজিম উদ্দিন, রিন্টু বিকাশ চাকমা ও এস এম রাহাতুল ইসলাম। ডিসিসহ অন্যদের ওই জেলা থেকে প্রত্যাহার করলেও তাদের বিরুদ্ধে হওয়া বিভাগীয় মামলা শেষ হয়েছে। আবার তাকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। তাই তিনি কুড়িগ্রামে রাতের বেলায় সাংবাদিকের বাসার দরজা ভেঙে তাকে তুলে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালানোর সাহস দেখাতে পেরেছেন।

নাটোরের সাবেক ডিসি গোলামুর রহমান তারই অধীনে থাকা এক নারী ম্যাজিস্ট্রেটকে যৌন-হয়রানির অভিযোগে ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে ওএসডি হন। সুস্পষ্ট প্রমাণ থাকার পরও গোলামুর রহমানকে শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়নি। বর্তমানে তিনি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্বে আছেন।

গত ২০১৮ সালের ১০ জানুয়ারি ‘ম্যাডাম’ না বলায় স্থানীয় এক সংবাদকর্মীর ওপর চটে যান পাবনার বেড়ার ইউএনও ফারজানা খানম। উত্তেজিত হয়ে এ সময় ইউএনও সাংবাদিককে বলেন, ‘আপনি কতদিন ধরে সাংবাদিকতা করেন। আপনি জানেন না একজন ইউএনওকে স্যার বা ম্যাডাম বলতে হয়?’ ২০১৯ সালের ১৫ মে সিলেটের ফেষ্ণুগঞ্জে ‘ম্যাডাম’ না ডাকায় সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) সঞ্চিতা কর্মকারের বিরুদ্ধে এক মাছ ব্যবসায়ীকে লাথি মারার অভিযোগ ওঠে। এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর মাছ ড্রেনে ফেলে দেন এ সরকারি কর্মকর্তা।

 

 

 

 

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
Harunuzzaman Shobuj ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:৪৩ এএম says : 0
আমলারাও রাজনীতিবিদ। তাদের পদ-পদবি রাজনীতির মাধ্যমেই অর্জিত। তাদের রাজনীতিবিদ হিসেবে না দেখে নিরপেক্ষভাবে দেখার ফলে এই বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়।
Total Reply(0)
Masum Billah ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:৪৫ এএম says : 0
বাংলাদেশের আমলাদের মতো এতো স্বার্থপর, দূর্নীতিবাজ, লুটপাটকারী, তেলবাজ, তোষামোদকারী আর বৈষম্যসৃষ্টিকারী আমলা পৃথিবীর আর কোনো দেশে নাই। আমলারা জনগণের চাকর। এই চাকরগুলো রাজনৈতিক বক্তব্য প্রদান করে বৈষম্য সৃষ্টি করছেন। আমলাদের বৈষম্যমূলক চক্রান্তকে রুখে দিতে হবে।
Total Reply(0)
HàBíb Islåm ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:৪৪ এএম says : 0
প্রশাসন নির্ভর নির্বাচন করে,সরকার নিজেই দুর্বল হয়ছে যার কারণে আমলারা এতো শক্তিশালী হয়ে গেছে,তাদের মধ্য ভাব সৃষ্টি হয়েছে, "মুই কি হুনুরে"
Total Reply(0)
Saleque Mohammad ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:৪৫ এএম says : 0
সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসন ছাড়া আধুনিক রাষ্ট্র পরিচালনা করা অসম্ভব। তবে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দল একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের দেশের দলগুলির নেতারা ততটা যোগ্য না। দলের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরাও তেমন একটা প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত না। অপরদিকে সিভিল ও মিলিটারি আমলারা অত্যন্ত দক্ষ ও সুশৃঙ্খল। তাদের কে নির্দেশ দিয়ে কাজ আদায় করার মতো যোগ্য দল ও নেতা নেই বললেই চলে। কমিউনিস্ট ও জামাতের মতো দলের কিছুটা প্রশিক্ষণ আছে তবে তাদের পক্ষে বৃহত্ শক্তিবর্গের ছায়া না থাকায় তাদের পক্ষে কিছু করা সম্ভব না। তবে ভবিষ্যতে হয়তো অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে!
Total Reply(0)
Arafat Rahman Biplob ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:৪৪ এএম says : 0
এটা ভবিষ্যৎ রাজনীতির জন্য অনেক ভালো। অন্তত একজন মূর্খ থেকে একজন আমলা কে রাজনীতিক হিসাবে মানতে আমাদের কোন সমস্যা নেই।
Total Reply(0)
Nur A Alam Riyad ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:৪৬ এএম says : 0
সবাই রাজনীতি করতে পারবে .আমলারা এখন চাকুরি অবসর এর আগেই রাজনীতিবিদ এমপি মন্ত্রী হতে চায়.শুধু আলেম ওলামা হুজুর রা করতে চাইলে আর বক্তব দিলে দোষ?
Total Reply(0)
Nur A Alam Riyad ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:৪৬ এএম says : 0
সবাই রাজনীতি করতে পারবে .আমলারা এখন চাকুরি অবসর এর আগেই রাজনীতিবিদ এমপি মন্ত্রী হতে চায়.শুধু আলেম ওলামা হুজুর রা করতে চাইলে আর বক্তব দিলে দোষ?
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন