পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীতে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি দরুদ ও সালামে সরব ছিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। দিনটি উপলক্ষে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এই মহামানবের জীবনী চর্চায় মত্ত হন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। পাশাপাশি তারা পরস্পর শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন বিনিময় করেন। বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় জীবনের সর্বক্ষেত্রে নবীজীর পূর্ণ অনুসরণের প্রতি আহ্বান জানানো হয় অগণিত পোস্ট থেকে।
বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জন্মবার্ষিকী স্মরণে প্রতি বছর পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপিত হয় এবং রবি-উল-আউয়াল মাসে পালন করা হয়। ইসলামী চন্দ্র ক্যালেন্ডারের তৃতীয় এই মাসটি চাঁদ দেখার সাথে সাথে শুরু হয়। এ উপলক্ষে নবীজির মৃত্যুবার্ষিকীও পালন করা হয়।
এ দিন এমন এক মহামানবের আবির্ভাবের দিন, যে কোনো বিচারেই যাঁর চেয়ে শ্রেষ্ঠ আর কারোর আবির্ভাব ঘটেনি এই পৃথিবীগ্রহে। যাঁর প্রভাব তাঁর কর্মকালে, জীবদ্দশায় যেমন তৎকালীন দুনিয়া অনুভব করেছে তেমনি ১৪শ’ বছর পরেও বিশ্বব্যাপী অনুভূত হচ্ছে। প্রলয়দিন পর্যন্ত সম গুরুত্বের সঙ্গে তা অনুভূত হতে থাকবে। তাইতো বিশ্ব মানবতার এই মুক্তির দূতের আদর্শ চর্চায় আজ সরব ছিল সামাজিক যোগোযোগ মাধ্যমগুলো।
ফেসবুকে ইয়াসিন মুন্সি লিখেছেন, ‘‘আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)। বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতায় দিনটি পালন করা হচ্ছে। এই আজকের পালনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলে তা পরিপূর্ণতা হবে না। বরং তাঁর গুণাবলী অর্জন এবং তা সর্বক্ষেত্রে তার বহিঃপ্রকাশ করার মাঝেই তাঁকে প্রকৃত ভালোবাসা নিহিত। নবীজিকে ভালোবাসা মানে তাঁর কোনো উম্মতকে কষ্ট, ক্ষতি, অকল্যাণ তথা হক্ নষ্ট না করা। তাঁর প্রকৃত উম্মত হতে হলে, তাঁকে খুশি করতে হলে তাঁরই মতো কর্ম ও আচরণ করা উচিত। সকলের মঙ্গল কামনায়। সৃষ্টিকর্তা সকলের প্রতি সহাই হোক।’’
ঈদে মিলাদুন্নবীর শুভেচ্ছা জানিয়ে লােইলি খান লিখেছেন, ‘‘সকল মুসলিম উম্মাহর প্রতি পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর আন্তরিক শুভেচ্ছা। শুকরীয়া আল্লাহ পাক এর মহান দরবারে যে তিনি আমাদের নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উম্মত করেছেন। আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে তাঁর খাস বান্দা এবং নবীজির খাস উম্মত হওয়ার তৌফিক দান করুন, আমিন।’’
হাবিবুর রহমান হাবিব লিখেছেন, ‘‘আজ পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ)। মানবতার মুক্তিদূত বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ সা:-এর জন্ম ও ওফাত দিবস। সাড়ে ১৪০০ বছর আগে ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের হিজরি ১২ রবিউল আউয়াল মক্কার কুরাইশ বংশে জন্মলাভ করেন সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ এ রাসূল সা:। ইসলামের সুমহান দ্বীন ও জীবনবিধান প্রচার শেষে ৬৩ বছর বয়সে ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে ১১ হিজরির এ দিনে ইন্তেকাল করেন তিনি। এ জন্য দিনটি বিশ্বের মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ এ মহামানবের জন্ম ও মৃত্যু একই দিনে হলেও মুসলিমরা দিনটিকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সা: বা জন্ম-উৎসবের দিন হিসেবে পালন করে থাকে।’’
প্রায় সাড়ে ১৪শ’ বছর আগে এই দিনে আরবের পবিত্র মক্কার মরু প্রান্তরে মা আমিনার কোল আলো করে জন্ম নিয়েছিলেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)। আবার এই দিনে তিনি মহান আল্লাহ তা‘আলার ডাকে সাড়া দিয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে যান। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) হলেন বিশ্ব শান্তির অগ্রদূত। তার সার্বজনীন শান্তির বার্তা দুনিয়ার সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে। সমাজে সাম্য ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় তাঁর আদর্শের কোনো বিকল্প নেই।
আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কোরআনুল কারীমে বলেছেন, আমি আপনাকে পুরো জগদ্বাসীর জন্য রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছি। (সূরা আম্বিয়া, আয়াত নং-১০৭)। জীবনের সব ক্ষেত্রের জন্যই প্রিয়নবী (সা.) আমাদের আদর্শ। কোরআন মাজীদে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনেই তোমাদের জন্য রয়েছে উত্তম আদর্শ। (সূরা আহজাব, আয়াত নং-২১)।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন