চীন ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়েছে। একটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের একটি কোম্পানি কলম্বো কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে বিভ্রান্ত করায় এবং দ্বীপ দেশটিতে সার সরবরাহ না করায় দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
কলম্বো গেজেট জানিয়েছে, একটি চীনা কোম্পানি শ্রীলঙ্কার পক্ষ থেকে অনুমোদন ছাড়াই সারের একটি চালান পাঠিয়েছিল, যেটি পরে এরউইনিয়ার মতো ক্ষতিকারক জীবাণু দ্বারা দূষিত বলে প্রমাণিত হয়। সেই ঘটনা থেকেই এ সমস্যার শুরু।
ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতির ইস্যুতে চীনা কোম্পানি কিংডাও সিউইন বায়োটেক গ্রুপ কো লিমিটেডের কাছ থেকে জৈব সার নেওয়ার আদেশ বাতিল করেছে শ্রীলঙ্কা সরকার। কিন্তু বেইজিং তার জৈব সার প্রকল্প চালিয়ে যাওয়ার জন্য কলম্বোর ওপর চাপ তৈরি করছে।
কলম্বো গেজেট জানিয়েছে, সার আমদানি ইস্যুটির সর্বশেষ অবস্থা হলো শ্রীলঙ্কার কৃষিমন্ত্রী বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য এবং কিংডাও সিউইন বায়োটেক গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেডের একতরফা সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার জন্য চীনা রাষ্ট্রদূতের কাছে যেতে মন্ত্রিসভায় প্রস্তাব তুলেছিলেন।
চীনা কোম্পানি কিংডাও সিউইন বায়োটেক গ্রুপ কো লিমিটেড তার কার্যকারিতা নিরাপত্তার চার্জ বাদ দিয়ে ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর দেশটির শানডং কিংডাওয়ের আদালত থেকে একতরফাভাবে একটি রায় পেয়েছে।
ডেইলি মিরর জানিয়েছে, চীনা সার কোম্পানি কিংডাও সিউইন বায়োটেক গ্রুপ শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বিরোধে জড়িত। তারা সরে যেতে অস্বীকার করেছে এবং দাবি করেছে যে শ্রীলঙ্কা উভয়পক্ষের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির বিষয়টিকে সম্মান করবে।
কলম্বো গেজেট জানিয়েছে, কূটনৈতিক এই সমস্যা সমাধানের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে প্রয়োজনীয় সুপারিশ জমা দেওয়ার জন্য শ্রীলঙ্কার কৃষিমন্ত্রী একটি মন্ত্রী পর্যায়ের সাব কমিটি করার কথাও বলেছিলেন।
শ্রীলঙ্কার বিজ্ঞানীরা সতর্ক করেছেন যে চীনের জৈব সার তাদের দেশের কৃষির জন্য একটি বিপর্যয় হবে। কারণ নমুনায় এরউইনিয়া পাওয়া গেছে। এই জীবাণু ফসলের মারাত্মক ক্ষতি করে।
এদিকে, চীনা কোম্পানি বলেছে যে তার জৈব সার পণ্যগুলো চুক্তির সমস্ত বিষয় মেনে চলে এবং প্রকল্পটি চালিয়ে যাওয়ার জন্য তা সম্পূর্ণরূপে যোগ্য।
কলম্বো গেজেট জানিয়েছে, কলম্বো চালানটি প্রত্যাখ্যান করায় এই সার প্রায় তিন মাস শ্রীলঙ্কায় পড়ে থাকে এবং পরে জাহাজটি চীনে ফিরে যায়। এ ঘটনার পর পিপলস ব্যাংক অব শ্রীলঙ্কাকে লেটার অব ক্রেডিট সম্মান না করার জন্য কালো তালিকাভুক্ত করেছে চীন।
বিষয়টি হাইকোর্ট পর্যন্ত পৌঁছায় এবং সেই অনুযায়ী পিপলস ব্যাংক জৈব সারের নতুন এক চালানের বিনিময়ে চাইনিজ ফার্টিলাইজার কোম্পানিকে ৬.৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়েছে।
এসব ঘটনার পর চীন এবং শ্রীলঙ্কার যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমদানির অনুমতি নিয়ে জটিলতার কারণে জাহাজটি ফেরত পাঠানো হয়েছে। অণুজীবের উপস্থিতির কারণে ফেরত পাঠানো হয়নি। এএনআই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন