আগামী ২ নভেম্বরকে সামনে রেখে বগুড়া জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে সাজ সাজ রব। ওই দিন বগুড়া জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন ও সম্মেলন। প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণার মাঝেই দলের জেলা নেতৃত্ব এবং নির্বাচন পরিচালনা কমিটির বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। বেশিরভাগ অভিযোগ-অনুযোগ, ক্ষোভ বিক্ষোভ প্রতিফলিত হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
কিছু কিছু অভিযোগ পেয়ে তারেক রহমানসহ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ক্ষুব্ধ ও অসন্তুষ্ট বলেও শোনা গেছে। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ উঠেছে ভোটার তালিকা নিয়ে। সম্প্রতি বগুড়া জেলা বিএনপির বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও বগুড়া জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি ৪০ বছর ধরে ফ্রন্ট লাইনার বিএনপি নেতা সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন। ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের মনোনয়ন ফরম কিনে জমা দেওয়ার আগের মুহূর্তে জানতে পারেন আসন্ন নির্বাচনে তাকে ভোটারই করা হয়নি।
অভিযোগ উঠেছে বগুড়া জেলা মহিলা দলের সাবেক সংসদ সদস্য, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নুর আফরোজ জ্যোতি, শাজাহানপুর উপজেলার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বৃহত্তর বগুড়া সদর উপজেলা বিএনপির নির্বাচিত সভাপতি সরকার বাদল সহ একই ধরনের বেশ কয়েকজন পরীক্ষিত নেতাকে আসন্ন নির্বাচনে ভোটারই করা হয়নি।
সভাপতি পদে মনোনয়ন ফরমের দাম এক লাখ, সাধারণ সম্পাদক পদে ৭৫ হাজার এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। দলীয় সূত্র বলছে, মনোনয়ন ফরমের এমন দামের একটাই উদ্দেশ্য, যেন নির্বাচনে গুটি কয়েক মুখ ছাড়া অন্য কেউ যাতে অংশ নিতে পারে। আর এই কথা বলেছেন পোড় খাওয়া বিএনপি নেতা মাইদুল ইসলাম গফুর।
এদিকে সভাপতি প্রার্থী জেলা বিএনপির আহŸায়ক রেজাউল করিম বাদশার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তিনি ১০৮ ইউনিয়ন, ১১ উপজেলা ও ১০ পৌরসভা নির্বাচনে যারা সভাপতি, আহŸায়ক বা সাধালন সম্পাদক ও সদস্য সচিব পদে আছেন তাদের কাউকে সংবিধানের দোহাই দিয়ে ভোটার করতে দেননি। অথচ তার প্রত্যক্ষ তত্ত¡াবধানে ভোটার তালিকা তৈরির পর নিজে পদে থাকা অবস্থায় তারেক রহমানের দোহাই দিয়ে সভাপতি পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন। এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হলে তিনি নিজে পদত্যাগ করেন মনোনয়ন ফরম কেনার আগ মুহূর্তে।
তারেক রহমানকে তারই ঘনিষ্ঠ একজন সাবেক এমপি বিষয়টি জানালে তারেক রহমান নাকি বিরক্ত ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত হয়েছেন বলে শোনা গেছে। এসব বিষয় অবহিত হয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপির নেতারাও অসন্তুষ্ট বলে জানা গেছে। অপরদিকে বগুড়া জেলা বিএনপির আহŸায়ক হিসেবে চিহ্নিত সংষ্কারবাদী নেতা জি এম সিরাজকে আহŸায়ক হিসেবে ঘোষণার পর তার বিরোধিতার কারণে বগুড়া পৌরসভার ৪ জনপ্রিয় কাউন্সিলর সিপার আল বখতিয়ার, পরিমল চন্দ্র দাস, শাহ মেহেদী হাসান হিমু ও তৌহিদুল ইসলাম বিটুকে বহিষ্কার করা হয়।
এদের মধ্যে সিপার ছাড়া বাকি ৩ জনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হলেও একই সাথে বিগত পৌরসভা নির্বাচনে তাদেরকে দলের মনোনয়ন দেওয়া হলেও ভোটার তালিকায় এই নেতার নাম নেই। দলের তৃণমূল থেকে প্রায় সবাই নাম না থাকাটা বিস্ময়কর বলছেন। এই চার নেতাই নির্বাচনে যেন ভোট দিতে পারেন সেজন্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন সাধারণ কর্মীরা।
অভিযোগগুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহŸায়কসহ অন্যরা কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। এদিকে মনোনয়নপত্র চূড়ান্ত ও প্রতীক বিতরণের কাজ শেষ হওয়ার পর শুরু হয়েছে ভোটের প্রচারণা। কর্মীদের মধ্যে সাজ সাজ রব উঠেছে। বগুড়ার ঐতিহাসিক শহীদ টিটু মিলনায়তনে আসছে ২ নভেম্বর নির্বাচন ও সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন