শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

ঢাকা-ডামুড্যাগামী লঞ্চ দুর্ঘটনায় ৩ যাত্রীর মৃত্যু

লঞ্চ জব্দ, দুই কর্মচারি আটক

শরীয়তপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৩ অক্টোবর, ২০২২, ২:৪০ পিএম

ঢাকা-ডামুড্যাগামী যাত্রিবাহী লঞ্চের সাথে সেতুর ধাক্কায় ৩ যাত্রী মারা যাওয়ার ঘটনায় স্বর্ণদ্বীপ প্লাস লঞ্চটি জব্দ করেছে পুলিশ। লঞ্চের দুই শ্রমিককে আটক করা হয়েছে।
নিহত সাগর আলী, শাকিল আহমেদ শান্ত ও তানজিলের মরদেহ গোসাইরহাট উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স থেকে ময়না তদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। আর আহত সাগর (১৮) ও হীরাকে (২৪) চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
২৩ অক্টোবর ররিবার ভোর রাত সাড়ে ৪টার দিকে গোসাইরহাট উপজেলার সাইখ্যা নামক স্থানে মেঘনার শাখা জয়ন্তিয়া নদীতে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। নিহত সাগর আলী, শাকিল আহমেদ শান্ত ও তানজিল গাজিপুরের একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিক।
গোসাইরহাট থানা সূত্র জানায়, শনিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার সদরঘাট থেকে স্বর্ণদ্বীপ প্লাস লঞ্চটি যাত্রী নিয়ে শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলা সদরের উদ্দেশ্যে ছেরে আসে। ভোর রাতের দিকে মেঘনা নদী থেকে লঞ্চটি জয়ন্তিয়া নদীতে প্রবেশ করে। তখন নদীতে জোয়ার চলছিল। যার ফলে পানির উচ্চতা বেড়ে যায়। অসতর্ক ভাবে লঞ্চ চালানোর কারণে গোসাইরহাটের সাইখ্যা এলাকায় সেতুর সাথে লঞ্চের ধাক্কা লাগে। লঞ্চের তৃতীয় তলায় থাকা পানির ট্যাংকির সাথে সজোরে ধাক্কা লাগে। ওই পানির ট্যাংকি ছিটকে ঘুমন্ত যাত্রীদের ওপর পরে যায়। ঘটনাস্থলেই তিন যাত্রী মারা যান। এসময় আরো ২ জন আহত হয়েছে।
পুলিশ খবর পেয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। আর লঞ্চের মাষ্টার নুরুজ্জামান ও চালক ইমরান হোসেন বেপারীকে আটক করেছে। গোসাইরহাট থানা পুলিশ লঞ্চটি জব্দ করে গোসাইরহাটের পট্টি ঘাটে আটকে রেখেছে।
নিহত যাত্রীরা গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুর এলাকার শাহ আলী মোল্লার ছেলে তানজিল (২২), তার বন্ধু জামালপুরের বোরহান আলীর ছেলে সাগর আলী (২৩) ও টাঙ্গাইলের নাজিম উদ্দিনের ছেলে শাকিল আহমেদ শান্ত (২৩)।
নিহত তানজিলের ভাই প্রতক্ষ্যদর্শী সজিব মোল্যা বলেন, পারিবারিক একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য সকলে মিলে গ্রামে যাচ্ছিলাম। সাথে আমার ভাইয়ের বন্ধুরা ছিলেন। তারা লঞ্চের তৃতীয় তলায় ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ সাইখ্যা এলাকায় সেতুর সাথে লঞ্চের ধাক্কা লাগে। চিৎকার চেচামেচি শুনে আমরা দ্বিতীয় তলা থেকে সেখানে ছুটে যাই। পানির ট্যাংকির নিচে ভাই ও তার বন্ধুদের রক্তাক্ত দেহ পরে থাকতে দেখি। সেখানেই তাদের মৃত্যু হয়।
গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম সিকদার বলেন, দুর্ঘটনায় নিহতদের লাশ ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। এর পর মরদেহ পরিবারের কাছে হাস্তান্তর করা হবে। আর লঞ্চ জব্দ করা হয়েছে। লঞ্চের মাস্টার ও চালককে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
স্বর্ণদ্বীপ প্লাস লঞ্চের মালিক আব্দুল জব্বার মুঠোফোনে বলেন, ২০ বছর ধরে আমার লঞ্চটি ওই রুটে চলাচল করছে। কখনো এমন হয়নি। দুর্ঘটনার বিষয়টি গণমাধ্যমের খবরে আমি জেনেছি। লঞ্চের শ্রমিকরা আমাকে কিছুই জানায়নি। তারা লঞ্চটি ঘাটে নোঙ্গর করে পালিয়ে গেছে। দুর্ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত কিছুই জানি না।
গোসাইরহাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাফী বিন কবির বলেন, লঞ্চ দুর্ঘটনার কথা জানার সাথে সাথে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করা হয়। নিহত ৩ যাত্রীর দাফনের জন্য তাদের পরিবারকে ২৫ হাজার করে টাকা দেয়া হবে।
আর আহত একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা সহায়তা দেয়া হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন