অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বাহিনীর ভয়াবহ তান্ডবে অন্তত ছয় ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ২১ জন। সংঘর্ষ চলমান থাকায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফিলিস্তিনের কর্মকর্তাদের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে আল-জাজিরা। ফিলিস্তিনি ফাতাহ আন্দোলনের এক মুখপাত্র জানান, মঙ্গলবার ভোরে ইসরাইলি বাহিনী নাবলুস শহরে প্রবেশ করলে ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনী ও সশস্ত্র যোদ্ধাদের সাথে সংঘর্ষ হয় তাদের। এদিকে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে নাবলুসে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে একজন নিরস্ত্র বেসামরিকও রয়েছেন। এছাড়া রামাল্লায় ইসরাইলি সেনার গুলিতে নিহত হয়েছেন আরেক ফিলিস্তিনি।
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র নাবিল আবু রুদেইনেহ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস নাবলুসে আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে এই আগ্রাসন বন্ধ করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে যোগাযোগ করছেন।’ এসব হামলার জন্য ইসরাইলি বাহিনীর বিপজ্জনক ও ধ্বংসাত্মক পরিণতি হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। তবে ইসরাইলি বাহিনী হামলার বিষয়ে কিছু জানায়নি। তারা বলেছে, তাদের বাহিনী নাবলুসে অভিযানে আছে। স¤প্রতি ইসরাইলি বাহিনী ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংঘাত আরও বেড়েছে। বিশেষ করে পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বাহিনীর অভিযানকে কেন্দ্র করে বেড়েছে এই সংঘাত। অপর এক খবরে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কাছে (আইসিসি) ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলের সম্ভাব্য ‘যুদ্ধাপরাধ’ তদন্তের আহŸান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। নতুন এক প্রতিবেদনে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, গত আগস্টে গাজায় সুনির্দিষ্ট আক্রমণ (প্রিসিশন) নিয়ে ইসরাইল দম্ভ করেছে। তারা ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের ওপর অন্তত তিনটি সুনির্দিষ্ট হামলার ঘটনা তদন্ত করেছেন। লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, ইসরাইলের তথাকথিত প্রিসিশন হামলার অন্যতম ভুক্তভোগীদের মধ্যে চার বছর বয়সী শিশু, মায়ের কবরে ভ্রমণরত কিশোর রয়েছে। এছাড়া বাড়িতে মায়ের সাথে চা পানের সময় চারুকলার একজন শিক্ষার্থী নিহত হন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড তাদের প্রতিবেদনের সাথে এক বিবৃতিতে বলেছেন, আগস্টে ইসরাইলের হামলা তিনদিন স্থায়ী হলেও অধিকৃত জনগণের ওপর নতুন করে ট্রমা এবং ধ্বংসযজ্ঞ উন্মোচণ করেছে। বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, আমরা যে তিনটি ভয়াবহ হামলা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি সেগুলো অবশ্যই যুদ্ধাপরাধ হিসেবে তদন্ত করতে হবে। অবৈধ আক্রমণের সকল ভুক্তভোগী এবং তাদের পরিবার ন্যায়বিচার এবং ক্ষতিপূরণ পাওয়ার দাবি রাখে। সূত্র : আল-জাজিরা, হারেৎজ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন