বাংলাদেশে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর নিপীড়নের বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে অবিলম্বে তা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে একজন নিহত ও অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হওয়ার ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার সংস্থাটি এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানায়।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক ইয়ামিনি মিশ্রা ওই বিবৃতিতে বলেন, পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘাতে একজন নিহত ও অর্ধশতাধিক ব্যক্তির আহত হওয়া ঘটনা প্রমাণ করে মানুষের জীবনের প্রতি বাংলাদেশ সরকারের সম্মানবোধ নামমাত্র। এতে বোঝা যায়, বাংলাদেশ সরকার মানুষের জীবনের প্রতি খুব কমই গুরুত্ব দেয়। পাশাপাশি এই বার্তাও দেয় যে, যারা মানবাধিকার চর্চা করার সাহস দেখাবে, তারা ভয়াবহ পরিণতির মুখোমুখি হবে।
বিবৃতিতে ইয়ামিনি মিশ্রা দাবি করেন, যে কোনো পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারকে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ বন্ধ করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে হবে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজনৈতিক কর্মীদের গণগ্রেপ্তার, হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখানোর প্রচুর ঘটনা ঘটছে। বিষয়টি উল্লেখ করে অ্যামনেস্টির বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আমরা কর্তৃপক্ষের দমন-পীড়ন উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে দেখছি। কর্তৃপক্ষ রাজনৈতিক কর্মীদের গণগ্রেপ্তার চালাচ্ছে, সহিংসতা, ভীতি প্রদর্শন ও হয়রানি করছে। এসব ঘটনায় আমরা গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।
মিশ্রা বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যেক নাগরিকের মানবাধিকার রক্ষার রাজনৈতিক অঙ্গীকার প্রদর্শন করতে হবে। প্রত্যেকের মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা অপরিহার্য। মত প্রকাশ, সংগঠন ও সভাসমাবেশ করার অধিকারের নিশ্চয়তা দিতে হবে। একই সময়ে তিনি রাজনৈতিক কর্মীদের গণগ্রেপ্তার, হয়রানি ও ভয়ভীতি দেখানোর ঘটনায় জড়িতদের পুঙ্খানুপুঙ্খ ও কার্যকর তদন্ত করার আহ্বান জানান।
অ্যামনেস্টি ছাড়াও বাংলাদেশে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-দমন-পীড়নের খবরে উদ্বেগ জানিয়েছেন সভা-সমাবেশের অধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার ক্লেমেন্ট ভউল। তিনি বলেছেন, তারা বাংলাদেশের ঘটনাগুলোর ওপর বিশেষ নজর রাখছেন। এর আগে ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি উইন লুইস একটি বিবৃতিতে বলেন, জাতিসংঘ বাংলাদেশের সব মানুষের সমান অধিকার, মর্যাদা ও স্বাধীনতার মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে অতীতের মতোই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন