গতকাল রোববার সকালে রংপুর শহরের ৮ তলা মসজিদ এলাকা থেকে একটি অটো রিকশাযোগে মডার্ন মোড়ের দিকে যাচ্ছিলেন একজন সাংবাদিক। তিনি মডার্ন মোড় থেকে বাসযোগে রংপুর ছেড়ে নিজের কর্মস্থলে ফিরবেন। যাওয়ার পথে অটোরিকশা চালককে জিজ্ঞেস করলেন গত শনিবার বিএনপির গণসমাবেশে কত লোক সমাগম হয়েছিল?
চালক বললেন, কত হইবে, দুই লাখ। আট ডিস্ক্রিট থাকি এই লোক কি এমন বেশি। চালকের কথার কাউন্টার দিলেন, বলেন কি বাহে, কালেক্টরি ঈদগাহ মাঠ ছাড়ি আধা টাউন খালি লোক আর লোক। পরিবহন ধর্মঘট না থাকিলে আরো ফির কত লোক যে হইলোহিনি আল্লায় জানে! কাউন্টার দেওয়া ওই অটোরিকশা যাত্রীর মতই
রংপুরের সব শ্রেণি পেশার মানুষের মধ্যেই হঠাৎ বিএনপির প্রতি একধরনের সহানুভূতির সৃষ্টি হয়েছে।
কিন্তু কেন? জানতে চাইলে রংপুর মহানগরে ৮ বছর ধরে চাকরি সূত্রে অবস্থানকারী একজন বেসরকারি অফিসের কর্মকর্তা এমদাদুল হক বলেন, ধারণা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট এরশাদের ইন্তেকালের পর হয়তো জাপা কেন্দ্রীক পলিটিক্যাল ক্রেজে ভাটা পড়বে। বাস্তবে ঘটেছে ঠিক তার উল্টোটাই। জাপার প্রতি রংপুরবাসীর ভালোবাসা বেড়েছে।
গত ২৯ অক্টোবর বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ কর্মসূচির ঘোষণা আসলে রংপুরের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে তেমন কোন আগ্রহ লক্ষ্যনীয় হয়ে ওঠেনি। কিন্তু যেইনা সমাবেশের ঠিক আগ মুহুর্তে সরকারি ইঙ্গিতে পরিবহন ধর্মঘট ডাক দেওয়া হল। সেইসাথে বিএনপির প্রস্তাবমত রংপুর জিলা স্কুল মাঠে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হল না। তখন থেকেই মূলত বিএনপির প্রতি রংপুরবাসীর মনে সৃষ্টি হয়েছে সহানুভূতি।
শুধু এমদাদুল হকই নয় রংপুরের স্থানীয় লোকজনের সাথেও কথা বললে দেখা গেছে, বিএনপির শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচি বানচালের জন্য পরিবহন ধর্মঘট আহ্বানের বিষয়টি খুবই ক্ষুব্ধ করেছে বলে মনে করছেন সেখানকার সিনিয়র সাংবাদিক সালেকুজ্জান।
গত বৃহস্পতিবার থেকেই রংপুরের পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো থেকে দলেদলে মানুষ এসে এখানে অবস্থান নিলে স্থানীয় লোকজন কিন্তু তাদের খাবার, পানি, টুকিটাকি অন্যান্য কিছু দিয়ে বেশ সহযোগিতা করেছে বলে বাইরে থেকে রংপুরে আগত গণমাধ্যমকর্মীদের দৃষ্টিতে পড়েছে।
ঠিক এই পরিস্থিতিটাই শনিবারের সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে কর্মসূচির সমন্বয়ক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ১৯৭৯ সালে শহীদ জিয়ার হাত ধরে রংপুরে বিএনপির উত্থান ঘটেছিলো। এই গণসমাবেশের সফলতার পর ফের এখানে বিএনপির নবযাত্রার লক্ষ্মণ প্রষ্ফুটিত হয়েছে। ঘটনাটিকে তিনি ধান থেকে চারা গজানোর সাথে তুলনা করেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন