বকেয়া বেতনের দাবিতে রাজধানীতে পোশাকশ্রমিকরা ১৪ ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ চালিয়ে গেলেও কারখানার মালিকপক্ষ কাউকে দেখা যায়নি। ফলে সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা। তারা বলছেন, কারখানার মালিক নিজে অথবা তাদের প্রতিনিধি এসে কোনো সুরাহা না করলে আন্দোলন চলবে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বেতনের দাবিতে আরামবাগ মোড় ও কমলাপুর মোড়ে অবস্থান নেন শ্রমিকরা। তাদের আন্দোলনের কারণে আরামবাগ হয়ে মতিঝিল, কমলাপুর ও সায়েদাবাদ এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এসময় তারা বেতনের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শ্রমিকদের সড়কে অবস্থান করতে দেখা যায়। একই সময় সড়কেও যানজট তীব্র রয়েছে। তবে আন্দোলনকারীরা নিজ উদ্যোগে অ্যাম্বুলেন্স যেতে সহযোগিতা করছেন।
গত রাত সাড়ে ৭টায় ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের ডিসি হায়াতুল ইসলাম খান ইনকিলাবকে বলেন, শ্রমিকরা সকালে তাদের খাবার নিয়ে কাজের উদ্দেশ্যে কারখানায় আসেন। তারা কারখানায় এসেই এটি দেখেন বন্ধ, এতে ক্ষোভে তারা আন্দোলন করছেন। তাদের আন্দোলনের যৌক্তিকতা আছে, আমরা চেষ্টা করছি মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগের। আশা করছি দ্রুতই সমাধান করা সম্ভব হবে।
শ্রমিকরা জানান, বকেয়া বেতন পরিশোধ না করেই ওলিও অ্যাপারেল লিমিটেড নামের কারখানা হঠাৎ বন্ধ করে দেয় মালিকপক্ষ। কারখানার মালিক সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মুর্শেদি। এখানে প্রায় দুই হাজার শ্রমিক কাজ করেন।এর আগে সকাল ৮টায় কাজে যোগদান করতে এসে শ্রমিকরা দেখতে পান কারখানাটিতে তালা ঝুলছে। শ্রমিকদের কারখানা বন্ধ করার কথা জানানো হয়। এতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তারা। এরপরই সড়কে এসে বিক্ষোভ শুরু করেন।
সেই আন্দোলন প্রায় ১৪ ঘণ্টা ধরে চললেও ওলিও অ্যাপারেলসের কোনো কর্মকর্তা শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা করতে আসেননি। কোনো প্রতিনিধিও পাঠানো হয়নি বলে জানান শ্রমিকরা।
জমিস নামে এক শ্রমিক বলেন, মালিক নিজে এসে অথবা তাদের প্রতিনিধি থেকে আশ্বাস পেলে তারা আন্দোলন থেকে সরে আসবেন। অন্যথায় দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত চলবে আন্দোলন।
আন্দোলনরত এক শ্রমিক বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে কারখানাটিতে কর্মরত আছি। আমাদের বলা হয়েছিল কারখানা দক্ষিণখানে নেয়া হবে। তবে স্থানান্তরের এক মাস আগে জানানো হবে এবং আগের সব বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে। কিন্তু আজ কারখানায় এসে দেখি বন্ধ।
এদিকে অফিস শেষে যানজটের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছে মানুষ। আসিফ আহমেদ নামে সরকারি ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, শ্রমিকদের পাওনা বুঝিয়ে দিলে তো তারা আর আন্দোলন করে না। তারা শ্রম দিয়েছেন, কেন বেতন দেবেন না।
আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, যৌক্তিক আন্দোলন হবে কিন্তু এতো সময় ধরে গুরুত্ববহ এলাকায় কেন চলবে। সরকারের উচিত এখন পোশাক কারখানাটির মালিককে গ্রেফতার করে শ্রমিকের বকেয়া বেতন পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন