জেলবন্দী প্রখ্যাত মিসরীয় অ্যাক্টিভিস্ট আলা আবদেল-ফাতাহ পূর্ণ অনশন ধর্মঘট শুরু করেছেন। তার সমর্থকেরা বলছেন, তিনি হয় মৃত্যুবরণ করবেন কিংবা মুক্তি পাবেন। মিসরের শার্ম আল-শেখে কোপ২৭ শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্বনেতাদের উপস্থিতিকে সামনে রেখে তিনি এই অনশন শুরু করেন।
আবদেল-ফাতাহ তার পরিবারকে এক চিঠিতে জানান, তিনি মঙ্গলবার জিরো-ক্যালোরি অনশন ধর্মঘট শুরু করেছেন। তিনি এমনকি ৬ নভেম্বর থেকে পানি পর্যন্ত পান করবেন না। ওই দিনই লোহিত সাগরীয় নগরীতে বিশ্ব জলবায় সম্মেলন শুরু হবে।
তিনি ওই চিঠিতে লিখেন, 'আমি সঠিক সময়ে আমার মুক্তি এবং সকল বন্দীর মুক্তির সংগ্রাম শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'
তার বোন মোনা সেইফ সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা এক ভিডিও বিবৃতিতে বলেন, ওই সিদ্ধান্ত অপ্রতিরোধ্য।
তিনি বলেন, 'তার ভাই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে তারা যদি তাকে চিরদিনের জন্য বা মৃত্যু পর্যন্ত কারাগারে রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়, তা হলে তিনি অন্তত যুদ্ধ করবেন, আক্রমণে নেতৃত্ব দেবেন।'
স্পষ্টবাদী ভিন্নমতালম্ব ও যুক্তরাজ্যের নাগরিক আবদেল-ফাতাহ ২০১১ সাল মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সময় খ্যাতিমান হয়ে ওঠেন। ওই আন্দোলনেই মিসরের দীর্ঘ সময়ের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের পতন ঘটে।
তাকে ২০১৪ সালে প্রথমবারের মতো কারাদণ্ড দেয়া হয় বেআইনি সমাবেশে অংশ নেয়া এবং এক পুলিশ অফিসারকে আঘাত হানার দায়ে। পাঁচ বছর কারাদণ্ড ভোগ করার পর ২০১৯ সালে তিনি মুক্তি পান। তবে ওই বছরই তাকে আবার গ্রেফতার করা হয় আরেকটি সরকারবিরোধী বিক্ষোভের সময়।
ভুয়া খবর ছড়ানোর জন্য ২০২১ সালের ডিসেম্বরে তাকে আবারো পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। তার বিরুদ্ধে সামাজিক মাধ্যমের অপব্যবহার এবং 'সন্ত্রাসী' গ্রুপে যোগ দেয়ার অভিযোগও আনা হয়েছে। উল্লেখ্য, মিসরীয় কর্তৃপক্ষ মুসলিম ব্রাদারহুডকে ২০১৩ সালে 'সন্ত্রাসী' সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে।
গত কয়েক মাস ধরেই ৪০ বছর বয়স্ক ব্লগার আংশিক ধর্মঘট করে আসছেন। তিনি দিনে মাত্র ১০০ ক্যালরি গ্রহণ করছেন। ফলে তার স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
তার পরিবার আশঙ্কা করছে, তাকে মুক্তি না দিলে তিনি অনশনে মারা যাবেন। সূত্র : আলজাজিরা
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন