ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে হটিয়ে ভোটাধিকার আদায়ে রাজপথ দখল করতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বুধবার (০৯ নভেম্বর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, গত ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে যুক্তরাজ্য বিএনপি অয়োজিত জনাকীর্ণ এক আলোচনা সভায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমান এই নিশিরাতের গণশত্রু সরকারকে হটিয়ে ভোটাধিকার আদায় করতে রাজপথ দখলের জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহবান জানিয়েছেন। তাঁর এই আহবানে সাড়া দেয়ার জন্য আমি প্রতিটি দেশপ্রেমিক জনতার প্রতি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি। তিনি বলেন, এক্ষুনি এই সর্বভূক লুটেরা খুনি দুঃশাসক দুরাচারী সরকারকে হঠাতে না পারলে দুর্ভিক্ষ-মনন্তরে প্রাণ হারাতে হবে বেঘোরে। গুম, খুন, লুটপাট, ভোট ডাকাতি, কেন্দ্রীয় ব্যাংক লুট, অর্থ পাচার, চাপাবাজি, মিথ্যাবাজি, সীমাহীন মূল্যস্ফীতি, ধোকাবাজির রাজত্ব চলছে সারাদেশে। এখনি দেশের রাজকোষ খালি হয়ে গেছে। ব্যাংকগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। তেল গ্যাস কিনতে পারছে না, বিদ্যূৎ দিতে পারছে না। মিল-কল কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ভয়াবহ খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। শেখ হাসিনা দেশ চালাতে পারছেন না। লুটেপুটে চেটেপুটে অর্থনীতি, ব্যাংক, রিজার্ভ সব খেয়ে ফেলেছে। কত টাকা ব্যাংক রিজার্ভ আছে তা নিয়ে সরকার নিয়মিত মিথ্যা বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছে। অনেক ব্যাংক দেউলিয়ার পথে, তারা গ্রাহককে বড় অংকের টাকা দিতে পারছে না। সরকার ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে না পেরে রিজার্ভের স্বর্ণ নিলামে বিক্রি করছে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া জনগণ বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে ছুটে আসছে সকল হামলা মামলা বাধা-বিপত্তিকে উপেক্ষা করে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নামে মিথ্যাচার প্রপাগান্ডাই করা হয়েছে আওয়ামী লীগের রাজনীতির প্রধান লক্ষ্য।
রিজভী বলেন, তারেক রহমান বলেছেন, মাফিয়া সরকারের সকল বাধা বিপত্তি পেরিয়ে বিএনপি আয়োজিত মহা-সমাবেশে যারা অংশ নিচ্ছেন তারা 'গণতন্ত্রের যোদ্ধা'। একের পর মহাসমাবেশগুলো সফল করে জনগণ বার্তা দিয়েছে তারা আর নিশিরাতের ভোট ডাকাত সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায়না।
তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, শেখ মুজিবের শাসনামলে ৭৪ সালে যেভাবে দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল আওয়ামী লীগের দুর্নীতি লুটপাট টাকাপাচার অবিচার অনিয়মের কারণে দেশে এখন আবারো দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি। আওয়ামী লীগ মানেই দুর্ভিক্ষ আর দুর্নীতি। তাই আজ সরকারের গুম-খুন-অপহরণ-জুলুম-নির্যাতন, অন্যায়-অবিচার, লুটপাট ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দেশের জনগণ জেগে উঠেছে। আওয়ামী লীগের জুলুম অত্যাচারের বিরুদ্ধে জনগণকে রাজপথ দখলে রাখার আহবান জানিয়ে তারেক রহমান আবারো বলেন, বাংলাদেশ যাবে কোন পথে ফয়সালা হবে রাজপথ। স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে শহীদ জিয়া যেভাবে ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন করেছিলেন, ৭৫ সালের ৭ নভেম্বর যেভাবে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, গণআন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে 'মাদার অফ ডেমোক্রেসি' বেগম খালেদা জিয়া যেভাবে দেশে গণতান্ত্রিক শাসন কায়েম করেছিলেন, একইভাবে মাফিয়া চক্রের কবল থেকে দেশ উদ্ধার করে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার আদায়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজপথ দখলের দায়িত্ব বিএনপিকেই নিতে হবে। বিএনপির চলমান এই আন্দোলনে দেশে-বিদেশে প্রতিটি গণতন্ত্রকামী মানুষের সমর্থন রয়েছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দেশনায়ক তারেক রহমান সকল বিভাগে মহাসমাবেশ শেষে বিশ্ব মানবাধিকার দিবসে আগামী ১০ ডিসেম্বর রাজধানী ঢাকায় যে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে তাতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী প্রায় এক কোটি প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে তাদের প্রত্যেকের পরিবার থেকে কমপক্ষে একজনকে অংশগ্রহণের আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রবাসীরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কষ্টার্জিত অর্থ থেকে প্রবাসীরা দেশে বৈদেশিক মুদ্রা পাঠায়, আর আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজ নেতা মন্ত্রীরা সেই সব ডলার 'কুইক রেন্টাল' সহ বিভিন্ন উপায়ে দেশ থেকে বিদেশে পাচার করে দেয়। মাফিয়াদের কাছ থেকে নিজেদের কষ্টার্জিত রেমিটেন্স রক্ষা করতে চাইলে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলনে দেশের জনগণের পাশাপাশি প্রবাসীদেরকেও শামিল হতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে তারেক রহমানের প্রশ্ন তুলে ধরে রুহুল কবির রিজভী বলেন, জনগণ জানতে চায়, নিজ দেশের মাটিতে কুইক রেন্টাল বানিয়ে তাদের কাছ থেকে বিদ্যূৎ ক্রয় করে কিংবা ক্যাপাসিটি চার্জ হিসেবে কেন ডলারে পেমেন্ট দেয়া হয়েছে ? বিদেশে কুইক 'টাকা পাচারে'র সুযোগ করে দিতেই 'ফরেন রিজার্ভ' তসরুপ করে শেখ হাসিনা দলীয় দুর্নীতিবাজদেরকে ডলারে পেমেন্ট দেয়ার ব্যবস্থা করেছে। প্রশাসন বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহবান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বছরের পর বছর ধরে প্রশাসনের কিছু মানুষ মাফিয়া সরকারের পক্ষে অতি উৎসাহীর ভূমিকা পালন করেছেন। তাদের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান বলেন, অনেক হয়েছে, এবার ক্ষান্ত দিন, এবার শান্ত হোন। আপনারা মাফিয়া সরকারের অবৈধ আদেশ মানতে বাধ্য নন। আপনারা জনগণের বুকে আর একটি গুলিও চালাবেন না। জনগণের দিকে আর বন্দুক তাক করবেন না। মনে রাখবেন, রাজপথে নেমে আসা গণতন্ত্রকামি জনগণ আপনাদের শত্রু নয়, তারা নিজেদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। তারা আপনাদের ভোটাধিকারও প্রতিষ্ঠা করতে চায়। সেনাবাহিনী, জনপ্রশাসন কিংবা পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের আহবান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, 'প্রশাসনের প্রিয় ভাই বোনেরা, মাফিয়া সরকার এতদিনের নানা বিষয় আপনাদের সামনে হাজির করে আপনাদেরকে ভয় দেখিয়ে বলতে চাইছে বিএনপি রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে আপনাদের বিপদ হবে। তাদের এমন অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হওয়ার অবকাশ নেই। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্টদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, গণতান্ত্রিক সরকার ক্ষমতায় আসলে কারো বিরুদ্ধে বেআইনি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবেনা।
রিজভী বলেন, গত একযুগে নতুন প্রজন্মের প্রায় আড়াই কোটি তরুণ ভোটারকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ইচ্ছে থাকা স্বত্তেও তাদের প্রায় কেউই ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। এ প্রসঙ্গে দেশের তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে তারেক রহমান বলেন, 'তোমাদের মনে রাখতে হবে, ভোটাধিকার একজন নাগরিকের মানবাধিকার। ভোটাধিকার প্রতি নাগরিকের মানবিক মর্যাদার প্রতীক। সুতরাং এবার ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হলে ভবিষ্যতে আরো ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে হবে। অতএব এই মানবিক মর্যাদা তথা ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে তরুণদেরকে রাজপথ দখল করতে হবে। সরকার গত ১৫ বছরে দেশের রাজনীতি অর্থনীতিসহ প্রতিটি সেক্টর ধ্বংস করে দিয়েছে। সুতরাং প্রতিটি সেক্টরকেই রিবিল্ড তথা পুনর্গঠন কিংবা সংস্কার করতে হবে। তবে জনরায়ে ক্ষমতায় গেলে মাফিয়া সরকারের দুর্নীতি দুঃশাসনে ক্ষত বিক্ষত এই রাষ্ট্রটির মেরামত বিএনপি এককভাবে করবেনা। বরং বর্তমানে মাফিয়া সরকার বিরোধী চলমান আন্দোলনে যারা রাজপথে সক্রিয় রয়েছেন, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আন্দোলনকারী সেইসব দলগুলোর বিজয়ী কিংবা বিজিত সবাইকে নিয়েই বিএনপি জাতীয় সরকার গঠন করবে। জাতীয় সরকারের মাধ্যমেই দেশের প্রতিটি সেক্টরের প্রয়োজনীয় সংস্কার করবে।
তিনি বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, দেশে প্রবাসে অনেক জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিত্ব রয়েছেন যারা প্রচলিত রাজনীতির ডামাডোল থেকে নিজেদের দূরে রাখতে চান। কিন্তু সেইসব জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিত্বদের যোগ্যতা মেধা অভিজ্ঞতা রাষ্ট্রের প্রয়োজন। ফলে দেশের স্বার্থে জ্ঞানী-গুণী ব্যক্তিত্বদের মেধা ও যোগ্যতা কাজে লাগাতে বিএনপি পার্লামেন্টে উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা করবে। তারেক রহমান বলেন, সরকার দেশকে যেভাবে খারাপের চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে গেছে একমাত্র বিএনপির পক্ষেই সেই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। কারণ যতবারই দেশ বিপদে পড়েছে একমাত্র বিএনপির নেতৃত্বেই দেশ আবার সঠিক ধারায় ফিরেছে। স্বাধীনতা পরবর্তী আওয়ামী শাসনামলে আন্তর্জাতিক বিশ্বে বাংলাদেশ 'বটমলেস বাস্কেট' হিসেবে কুখ্যাতি পেয়েছিলো। তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ ঘুচিয়ে স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া সেই বাংলাদেশকে একটি মর্যাদাশীল এবং স্বাবলম্বী রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন। স্বাধীনতা পরবর্তী আওয়ামী শাসনামলে ক্ষমতাসীন দুষ্টচক্রের সীমাহীন লুটপাট আর দুর্নীতির কারণে ১৯৭৪ সালে দেশে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয়েছিল। সেই দুর্ভিক্ষপীড়িত বাংলাদেশ স্বাধীনতার ঘোষকের শাসনামলে কৃষি বিপ্লবের মাধ্যমে শুধুমাত্র খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতাই অর্জন করেনি বিদেশে চাল রপ্তানি করতেও সক্ষম হয়েছিল।
শেখ হাসিনা বিএনপিকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, যেভাবে হেফাজতকে দমন করা হয়েছে একইভাবে বিএনপিকে দমন করা হবে। শেখ হাসিনার এই হুমকির কথা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, এই ধরণের হুমকি দিয়ে শেখ হাসিনা স্বীকার করে নিয়েছেন, তার হুকুমেই হেফাজতের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। জনরায়ে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হবে। শুধু তাই নয়, বিডিআর পিলখানায় সেনা হত্যাযজ্ঞেরও বিচার করা হবে। খালেদা জিয়াকে আবারো জেলখানায় পাঠিয়ে দেয়া হবে, শেখ হাসিনার এই হুমকি প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, খালেদা জিয়া আমার মা, তবুও আমি এই কথার জবাব দেবোনা। 'মাদার অফ ডেমোক্রেসি'র প্রতি মাফিয়া নেত্রীর এই হুমকির সমুচিত জবাব দেবে দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, গত ১৫ বছর ধরে লুটপাট করে দেশের টাকা পাচার করে দেশকে ফতুর করে দিয়ে এখন মাফিয়া নেত্রী মানুষকে কৃচ্ছতা সাধনের উপদেশ দেন। জনগণ আর এমন ভ-ামি সহ্য করতে রাজি নয়। তিনি বলেন, দেশের জনগণের দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে-অন্ধকারে। এমন দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতির মধ্যেই মাফিয়া চক্র জনগণকে আরো জানিয়ে দিয়েছে আগামী দিনে নাকি আরো ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ আসছে। আওয়ামী লীগ দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে অকার্যকর করে দিয়েছে। বিচার বিভাগকে একটি 'জোকারি-মকারী' প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। আদালতে এখন সাগর-রুনি হত্যাকা-ের বিচার হয়না। বরং মাফিয়া চক্রের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় কেউ কিছু লিখলে সেটির বিচার করতেই যেন বিচারকদের বেশি আগ্রহ।
রিজভী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন, আওয়ামী মাফিয়া চক্রের দুর্নীতি দুরাচার আর অনাচারের বিরুদ্ধে কেউ যাতে মুখ খুলতে না পারে, এ কারণে মানুষকে গুম-অপহরণ করে আটকে রাখতে রাজধানীতে শেখ হাসিনার নির্দেশে গড়ে তোলা হয়েছে গোপন বন্দিশালা 'আয়নাঘর'। তিনি বলেন, বিএনপির সকল রাজনৈতিক ক্ষমতার উৎস্য জনগণ, আর শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন চক্রের ক্ষমতার উৎস আয়নাঘর।
তিনি আরো বলেন, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতেই, ৭ নভেম্বরের পরাজিত অপশক্তি এখন 'মহাজোটে'র নামে 'একজোট' হয়েছে। এই অপশক্তি এখনো দেশের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এই অপশক্তি দেশে গণতন্ত্র হত্যা করেছে, মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে, দেশে সন্ত্রাসবাদের জন্ম দিয়েছে। ২১ আগষ্টের ঘটনা ঘটিয়েছে। অসাংবিধানিক 'ওয়ান ইলেভেনের' সৃষ্টি করেছে। ২১ আগস্ট এবং ওয়ান ইলেভেন একই সূত্রে গাঁথা। একটি ওয়ান ইলেভেন সৃষ্টির প্রেক্ষাপট তৈরী করার জন্যই পরিকল্পিতভাবে ২১ আগষ্টের ঘটনা ঘটানো হয়েছিল।
তারেক রহমান বলেন, আগামীর নির্বাচন হবে খুনি লুটেরা টাকা পাচারকারী দুর্নীতিবাজ মাফিয়া চক্রের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকামী মানুষের নির্বাচন।
রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদসহ তাদের নেতারা প্রতিনিয়ত বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্পর্কে মনগড়া মিথ্যাচার অপপ্রচার করে আসছেন। তারেক রহমানের যুগান্তকারী সফল নেতৃত্বে এবং নির্দেশনায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অভাবনীয় জনজোয়ার দেখে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে আবোলতাবল বকছেন তারা। পতনের ভয়ে আর্তনাদ করছেন। দুর্নীতির উলম্ফন এবং উন্নয়নের ফানুস উড়িয়ে কোন কাজ হচ্ছে না দেখে প্রায় প্রতিদিন শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের এবং হাসান মাহমুদরা অসত্য, বিভ্রান্তমূলক, মনগড়া ও মিথ্যাচার করছেন। প্রতিনিয়ত তারা লোক হাসানোর পাত্র হচ্ছেন। চারিদিকে দুর্নীতির বৈচিত্রময় বিন্যাস আড়াল করতেই গত দুই দশকের বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগ তারেক রহমানের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে বহুমাত্রিক মিথ্যাচার অপপ্রচার অব্যাহত রেখেছে। এটির মাধ্যমে মূলত: দেশের ওপর চলছে আওয়ামী সমষ্টিগত দখলদারী। শুধু তাই নয়, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এমনকি ‘মাদার অফ ডেমোক্রেসি’ বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে আদালত থেকেও তারা ফরমায়েশী রায় বের করেছে। মিথ্যার বাড়াবাড়ীর কোন বিজয় হতে পারে না। এবারই সরকারকে আঁকড়ে থাকা মসনদ থেকে সরে যেতে হবে।
ওরা আত্মবিশ্বাস হারিয়েছে। তাই কথাবার্তায় শুধুই দম্ভের বিকৃত প্রকাশ। আওয়ামী লীগ যতই ষড়যন্ত্র করুক, আজকের বাস্তবতা হচ্ছে, মাফিয়া সরকারের শত বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করেও সারাদেশে বিএনপির মহাসামবেশগুলোতে মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করে দেশের সচেতন জনগণ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্পর্কে আওয়ামী লীগের এইসব মিথ্যাচার-অপপ্রচার বিশ্বাস করেনা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন