থেমে গিয়েছিল মাওয়ের ‘লং মার্চ’। পারেননি চৌ এন-লাই। হু জিনতাও-য়ের আমলেও অধরা থেকে গিয়েছে ‘এক চীন’ গড়ার স্বপ্ন। আজও সদর্পে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে চিয়াং কাই শেকে-র তাইওয়ান বা ‘রিপাবলিক অফ চায়না’। কিন্তু শি জিনপিংয়ের ধূমকেতু সুলভ উত্থান ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্রটির পক্ষে ঝড়ের অগ্রদূত হয়ে দেখা দিয়েছে। খোদ তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট মনে করছেন, লালফৌজের আক্রমণ সময়ের অপেক্ষা মাত্র!
সম্প্রতি ‘দ্য আটলান্টিক’-য়ের এক প্রশ্নের উত্তরে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন জানান, আগামী দিনে চীনের আগ্রাসনের সম্ভাবনা অত্যন্ত প্রবল। এই দাবির পক্ষে যথেষ্ট কারণ রয়েছে বলেই তিনি মনে করেন। তার কথায়, “এটা বাস্তব (চীনা আক্রমণ)। আমাদের উপর বিপদ নেমে আসতে পারে। এটা কোনও হুজুগ নয়। (এই হামলার) আশঙ্কা করার যথেষ্ট কারণ মজুত রয়েছে।” তবে আক্রমণ হলে তাইওয়ান কড়া জবাব দেবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি। ‘আর টি নিউজ’-কে তিনি বলেন, “যদি তারা (লালফৌজ) চরম কোনও পদক্ষেপ করে তাহলে যে মূল্য দিতে হবে সেই কথা যেন ভেবে দেখুন শি জিনপিং। এনিয়ে তাকে দু’বার ভাবতে হবে।”
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, চীনা আগ্রাসনের প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধের কথা তুলে ধরেন সাই ইং-ওয়েন। প্রাক্তন সোভিয়েত দেশটির মতোই, বেইজিংয়ের বিরুদ্ধেও আমেরিকা ও পশ্চিমের সামরিক সাহায্য মিলবে বলেই আশাপ্রকাশ করেন তিনি। তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট বলেন, “পশ্চিমের দেশগুলি বিশেষ করে আমেরিকা কিন্তু ইউক্রেনকে সাহায্য করছে। ওই যুদ্ধে (রাশিয়ার বিরুদ্ধে) পশ্চিমের দেশগুলিকে সংঘবদ্ধ হতে দেখেছি আমরা।”এদিকে, ব্রিটিশ বাণিজ্য নীতি মন্ত্রী গ্রেগ হ্যান্ডসের তাইওয়ান সফরকে কেন্দ্র করে প্রবল ক্ষোভপ্রকাশ করেছে চীন। কমিউনিস্ট দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র চাও লিচিয়ান স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন, তাইওয়ানের সঙ্গে কোনও দেশের কূটনৈতীক সম্পর্ক মেনে নেয়া হবে না।
বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, শি জিনপিংয়ের ক্ষমতায় ফিরে আসা তাইওয়ানের জন্য অশনি সংকেত। কারণ, এই পদক্ষেপই স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, ভবিষ্যতে দ্বীপরাষ্ট্রটিকে নিয়ে বড়সড় কোনও পরিকল্পনা করছেন জিনপিং। ফলে আরও একটা যুদ্ধ ঘটে যাওয়া অসম্ভব নয়। আপাতত ঘুঁটি সাজাচ্ছেন তিনি। দল ও সেনার অন্দরে দুর্নীতি দমনের নামে বিরোধের কোণঠাসা করে ফেলেছেন জিনপিং। তাই তার পরিকল্পনায় বাধা দেয়ার মতো কেউ নেই। সূত্র: রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন