সাংবাদিক জামাল খাশোগী হত্যার মামলা থেকে সউদী আরবের প্রধানমন্ত্রী, যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে দায়মুক্তি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মোহাম্মদ দায়মুক্তির যোগ্য, এমন বিবেচনায় গত বৃহস্পতিবার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে জো বাইডেন প্রশাসন।
সউদী আরবের বিশিষ্ট সমালোচক খাশোগী ২০১৮-র অক্টোবরে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরের সউদী কন্স্যুলেটের ভেতরে খুন হন। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বলেছে, তাদের বিশ্বাস যুবরাজ মোহাম্মদ খুনের আদেশটি দিয়েছিলেন। কিন্তু আদালতে পেশ করা এক নথিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, সউদী আরবের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর নতুন ভূমিকার কারণে দায়মুক্তি পান তিনি।
খবরটি প্রকাশ্যে আসার কয়েক মিনিটের মধ্যেই এর প্রতিক্রিয়ায় খাশোগীর সাবেক বাগদত্তা ও তার খুনের মামলার বাদি হাতিজে জেঙ্গিস টুইটারে লিখেছেন, ‘আজ জামাল আবার মারা গেল’।
বিবিসি জানিয়েছে, জেঙ্গিস ও খাশোগী প্রতিষ্ঠিত মানবাধিকার গোষ্ঠী ‘ডেমোক্র্যাসি ফর দ্য আরব ওয়াল্ড নাউ’ এ খুনের জন্য সউদী যুবরাজের কাছে অনির্দিষ্ট ক্ষতিপূরণ চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে মামলা দায়ের করেছিল। অভিযোগে ‘অপহরণ, আটকে রাখা, মাদক প্রয়োগ ও নির্যাতন এবং যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী সাংবাদিক ও গণতন্ত্রের সমর্থক খাশোগীকে হত্যার দায়ে’ সউদী নেতা মোহাম্মদ ও তার কর্মকর্তাদের অভিযুক্ত করা হয়।
২০১৭ সালে যুবরাজ মোহাম্মদকে তার বাবা সউদী আরবের বাদশা সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সউদ যুবরাজ হিসেবে অভিষিক্ত করেন। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে মোহাম্মদকে (৩৭) প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। খাশোগী হত্যায় তার কোনো ভূমিকা নেই বলে মোহাম্মদ দাবি করে আসছেন।
হোয়াইট হাউজের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র লিখিত এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইনের দীর্ঘস্থায়ী নীতি অনুযায়ীই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইনি এ সিদ্ধান্তটি নিয়েছে। মামলার অভিযোগের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই’।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের আইনজীবী ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়ার জেলা আদালতে পেশ করা এক নথিতে বলেছেন, ‘যুবরাজ মোহাম্মদ একটি বিদেশি সরকারের বর্তমান প্রধান হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের বিচারের আওতা থেকে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়মুক্তি পান। রাষ্ট্রপ্রধানের দায়মুক্তি মতবাদ সুপ্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক প্রথা’। তবে এ দায়মুক্তি দেওয়ার মাধ্যমে বাইডেন প্রশাসন যুবরাজ মোহাম্মদকে নির্দোষ হিসেবে রায় দিচ্ছে না বলে জোর দিয়ে জানিয়েছে।
পরে হাতিজে জেঙ্গিস টুইটারে লিখেছেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকে হয়তো বিচারের আলো আসবে, কিন্তু আবার টাকা সামনে চলে এল। এটি এমন একটি বিশ্ব যেটি জামালও চিনতো না আমিও চিনি না’। সূত্র : রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন