খেলা হবে-খেলা হবে। ফাইনাল হবে ডিসেম্বরে। খেলা হবে আন্দোলনে-দুর্নীতির বিরুদ্ধে। হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে। ভোট চুরির বিরুদ্ধে। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে। আর আসল খেলা হবে নির্বাচনে। মোকাবিলা হবে ভোট চুরির বিরুদ্ধে। এদেশে ১৫ জানুয়ারি মার্কা নির্বাচন আর হবে না। গতকাল সোমবার দিনাজপুর গোর-এ-শহীদ ময়দানে দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সাবধান বানী উচ্চারণ তিনি কর্মীদের উদ্দেশ্যে করে বলেন, আপনারা সবাই দলকে এক করে রাখুন। ঐক্যবদ্ধ রাখুন। ত্যাগী নেতাদের গুরুত্ব দেন। বিপদের সময় বসন্তের কোকিলদের লাইট জালিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না। ত্যাগিদের সে সময় খুঁজে পাবেন। বসন্তের কোকিলদের নিজেদের লোক বানাবেন না। চেয়ার পড়ে গেলে কেউ সালাম দিবে না। এই জোয়ার ভাটার দেশে কখন কি হয়, তা আমরা জানি না। একমাত্র আল্লাহই জানেন। শেখ হাসিনা আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পায় না উল্লেখ করে তিনি বলেন ৭৫ এর পরে বাংলাদেশে শেখ হাসিনার মত সরকার প্রধান আসেনি। দেশের সাধারণ মানুষ কষ্টে আছেন। স্বল্প আয়ের মানুষ কষ্টে আছেন জেনে শেখ হাসিনার ঘুম হারাম হয়ে গেছে। তিনি সাধারণ মানুষদের জন্য কাজ করেন, চিন্তা করেন। এই জন্য প্রতিদিন রাতে ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘন্টা ঘুমান। আমারা ভাগ্যবান, শেখ হাসিনার মত নেতাকে পেয়েছি।
তিনি আরো বলেন, সুষ্ঠুভোট হবে। ভয় পাবেন না। শেখ হাসিনা রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন। অন্যান্য দেশে যেভাবে ক্ষমতাসীন সরকার দায়িত্ব পালন করে, সেভাবে শেখ হাসিনা সরকার রুটিন দায়িত্ব পালন করবে। আসল দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। কমিশনের অধীনেই একটা নিরপেক্ষ ভোট ইনশাআল্লাহ হবেই।
ওবায়দুল কাদের মির্জা ফকরুল ইসলামকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনার বাড়ি তো ঠাকুরগাঁওয়ে। সমাবেশ কাকে বলে তা আজকে দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল ও সমাবেশ দেখে যান। আপনারা কথায় কথায় বলেন, আপনাদের সমাবেশে ঢল নেমেছে। কথায় কথায় তরঙ্গ নেমেছে। কিন্তু ঢল কাকে বলে, নদী আর সাগরের তরঙ্গ কাকে বলে তা আজকে দিনাজপুরে আপনি দেখে যান। আপনারা সমাবেশের তিন দিন আগে থেকে হাণ্ডি, পাতিল, বিছানা, বালিশ নিয়ে নাটক শুরু করেন। সেই নাটকের অংশ থাকে মশার কয়েল। হায়রে নাটক। হুশিয়ার করে বলেন, উস্কাকানি দেবেন না। উস্ককানি দিলে কিন্তু খবর আছে। আওয়ামী লীগ কর্মীরা মাঠ ছেড়ে দেয়নি, সতর্ক পাহাড়ায় আছে কে কী করে তা দেখার জন্য। আপনারা আমাদের উপরে হামলা করবেন আর আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ললিপপ খাব! এটা কি হয়? খেলা হবে হবে খেলা। প্রস্তুত হয়ে যান। সোহরাওয়াদী উদ্যানের নাম শুনলে আপনাদের গাঁ জ্বলে কেন? কারণ এই সোহরাওয়াদী উদ্যানেই পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পন করেছিল।
তিনি বলেন, বিএনপি বলে আমরা তাদের সমাবেশে বাঁধা দেয়ার জন্য ছাত্রলীগের সমাবেশ দিয়েছি ৮ ডিসেম্বর। নেত্রী বললেন দরকার নেই। তারা সমাবেশ করুক, আমরা ছাত্রলীগের সমাবেশ ৬ তারিখে এগিয়ে এনেছি। এটা আপনাদের আন্দোলনের ফসল নয়, এটা শেখ হাসিনার উদারতা। উদার নৈতিকতার ফসল।
দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মন্ত্রী এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান এমপি’র সভাপতিত্বে আরো বিশেষ অতিথি বক্তব্য রাখেন গন সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী শ্রমিক নেতা শাজাহান খান এমপি, আওয়ামী লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, মনোরঞ্জন শীল গোপাল এমপি, সাবেক মন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি, সিবলি সাদিক এমপি, এডভোকেট জাকিয়া তাবাসসুম জুঁই এমপি প্রমুখ।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আপনি বার বার বলেন খেলা হবে। কিন্তু গতবার ঠাকুরগাঁওয়ে নির্বাচনে মির্জা ফখরুলকে হারিয়েছেন রমেশ চন্দ্র সেন। আপনাদের সাথে আমরা খেলব না। এখন থেকে আপনাদের সাথে ছাত্রলীগ খেলবে। চাইলে যুবলীগও খেলতে পারবে।
তিনি বলেন, বিএনপি সমাবেশের নামে পিকনিক করছে। তারা তো কোন ধরনের সমাবেশ করছে না। কুমিল্লায় সমাবেশের তিন আগে থেকে তাদের নেতাকর্মীরা সেখানে পিকনিক শুরু করে দিয়েছিল। কুমিল্লায় সমাবেশে ১০০ গরু জবাই করে পিকনিক খেয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন