বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিক্ষাঙ্গন

তুরস্কের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা রাজনীতি নিয়ে মাথা ঘামায় না

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৯ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আমি ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে তুরস্কে এসেছি। উদ্দেশ্য একটাই-ভবিষ্যতে একজন নিবেদিত গবেষক হতে চাই যা দেশ-জাতির কল্যাণে আসবে। বাংলাদেশিদের ডরমিটরি ক্যাম্পাস থেকে দূরে থাকায় তাদের ক্লাসে যেতে প্রায় ১. ৩০-২.০০ ঘণ্টা লেগে যায়। তবে সমস্যা হয় না কারণ  এখানে ছাত্রদের জন্য হাফ ভাড়া। দুপুরেরটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটিরিয়া থেকে স্বল্প মূল্যে খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। আমার এখনো ল্যাব শুরু হয়নি আর আমি পিএইচডি ছাত্র হওয়ায় আমার ক্লাস কম থাকে। হোম ওয়ার্ক বেশি থাকে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফরমাল অফিস শেষ হয় বিকাল ৪.০০টা। তবে যাদের ল্যাব থাকবে তাদের নির্দিষ্ট কোন সময় নেই। এ দেশে ডরমিটরির রুমে পড়ার কোন ব্যবস্থা নেই। পৃথক একটি স্টাডি রুম থাকে সেখানে গিয়ে ছাত্ররা পড়ে আর অনেকে লাইব্রেরিতে গিয়ে পড়ে। এখানে সারা রাত বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি খোলা থাকে।
তার্কিশ খাবার যদিও স্বাস্থ্যসম্মত কিন্তু প্রাথমিকভাবে কোন বাঙালি তেমন কিছু খেতে পারবে না। তবে আমরা এখন অনেকটা অভ্যস্ত হয়ে গেছি।
এ দেশে প্রত্যেক শহরে কিছু এনজিও, আন্তর্জাতিক ছাত্র সংগঠন, সরকারি সংস্থা, রাজনৈতিক সংগঠন আছে যারা বিভিন্ন উপলক্ষে আমাদের মত বিদেশি শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন শহরে ঘুরতে নেয়, পিকনিক করে। বিভিন্ন জাদুঘরেও নিয়ে যান শিক্ষকরা। এ ক্ষেত্রে ইজমীর শহরে ইফেস, আগোরাসহ নাম করা বিভিন্ন প্রতœস্থানে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। এখানে থিওরিটিক্যাল এর সাথে সাথে প্রাকটিক্যাল থাকে সমানভাবে। যেটা আমরা বাংলাদেশে তেমন পাই না।
প্রায় প্রত্যেকটি ডিপার্টমেন্টে ল্যাব রয়েছে। ১ম বর্ষ থেকে তেমন ল্যাব না থাকলেও পরের বছর থেকে ল্যাব করতে হয়। আর এ দেশের মানুষ খুবই বন্ধুভাবাপন্ন খুবই হেল্পফুল তারই ধারাবাহিকতায় শিক্ষকরা বন্ধুর মত আচরণ করেন। এখানকার শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ নিয়মতান্ত্রিকভাবে চলে। পুরো বছরে তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ৯ মাস চলে সেপ্টেম্বর-জুন পর্যন্ত। বাকি ৩ মাস সামার ভেকেশান থাকে। তবে আবার সামার স্কুল হয়ে থাকে। তবে আমার বিভাগে শিক্ষকগণ প্রত্মতাত্ত্বিক উৎখননে চলে যান। কেননা এখানে সামারে কোন বৃষ্টি হয় না।
বছরের শুরুতেই সকল পরীক্ষার রুটিন এবং খাতা দেখে নাম্বার জামা দেওয়ার তারিখ দিয়ে দেওয়া হয়। তাই এখানে কোন সেশন ঝট নেই। এই শহরে আমরা প্রায় ১৪-১৫ জন বাঙালি আছি। প্রায় ৫০-৬০টি দেশের ছাত্রদের সাথে মেশার সুযোগ হয়েছে।
এখানে প্রায় সময় বাংলাদেশ সম্পর্কে বিভিন্ন স্থানে সেমিনার করি আমরা কিন্তু তারা সকল খরচ বহন করে। সাথে বাঙালি খাবার থাকে। আমরা সকল বাঙালি সেমিনারে বাঙালি পোশাক পরে যাই এবং বাঙালি কালচার তুলে ধরার চেষ্টা করি। আমি তুর্কি সরকারি বৃত্তি পেয়ে এসেছি। আমাদের খাওয়া, থাকা এবং স্বাস্থ্য বীমা ফ্রি। এছাড়া প্রতি মাসে পিএইচডি শিক্ষার্থী হিসেবে ১২০০ লিরা পাই। যা বাংলাদেশি টাকায় ২৭০০০ টাকার মতো। তাতেই সব কিছু ভালোই চলছে।
ষ মোহাম্মদ মাহমুদুল হাছান খান
দোকুজ এইলুল বিশ্ববিদ্যালয়, ইজমীর, তুরস্ক থেকে

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন