দিনের পর দিন ভবঘুরের মতো এখানে-সেখানে ঘুরে বেড়াতেন ফয়সাল আহমদ (৩৫)। একসময়ে বেওয়ারিশ হিসেবে সিলেটের সুরমা নদীতে পড়েছিলো তার লাশ। গত সোমবার নদী থেকে তার গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর লাশের সঙ্গে থাকা এনআইডি কার্ড ও সিআইডির চেষ্টায় নিশ্চিত হওয়া যায় মারা যাওয়া যুবকের পরিচয়। পরে ঢাকার কেরানীগঞ্জে মারা যাওয়া ফয়সালের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ। কিন্তু ফয়সালের মা কিংবা স্ত্রী কেউই তার লাশ নিতে আগ্রহ দেখাননি।
এরপর ফয়সলের ঠিকানা হয়েছে সিলেটের মানিকপীর (রহ.) এর কবরস্থানে। গতকাল মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) রাতে পুলিশের হেফাজতে লাশটি দাফন করা হয়েছে।
সিলেট কোতোয়ালি থানার এসআই মো. আজিজুল হক জানান, ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে সোমবার সকালে নগরীর শেখ ঘাট এলাকার সুরমা নদী থেকে একটি লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় প্যান্টের পকেটে একটি জাতীয় পরিচয়পত্র (নম্বর ২৬১৩৮৯৪২৮৩৬১০) পাওয়া যায়। এনআইডি কার্ডে মারা যাওয়া যুবকের নাম ছিলো ফয়সল আহমদ। বাড়ি কেরানীগঞ্জ থানার কুশিয়ার বাগ এলাকায়। বাবার নাম আব্দুল মোতলিব ও মায়ের নাম আখি বেগম।
এনআইডি কার্ডের সঙ্গে একটি চিরকুটও পাওয়া যায়। সেখানে মা আখি বেগমের মোবাইল ফোন নম্বর লিখে রেখেছিলেন ফয়সাল। পরে পিবিআই ও সিআইডি'র প্রচেষ্টায় লাশটি ফয়সাল আহমদের বলেই শনাক্ত হয়। পরে মৃতদেহের সঙ্গে থাকা (আখি বেগমের) মোবাইল ফোন নম্বরে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানায় পুলিশ। একই সঙ্গে লাশটি নিয়ে যেতে অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু আখি বেগম ছেলের লাশ নিতে অসম্মতি জানান।
তিনি আরও জানান, ফয়সালের মায়ের কাছ থেকে তার স্ত্রীর ফোন নম্বর নিয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনিও লাশ নিতে পুলিশের কাছে অসম্মতির কথা জানান।
এসআই আজিজুল হক জানান, এটি কোনো অস্বাভাবিক বা রহস্যজনক মৃত্যু বলে মনে হয়নি আমাদের কাছে। কারণ মারা যাওয়া যুবকের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিলো না।
পরিবারের বরাত দিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, প্রায় ৫ বছর আগে ফয়সাল বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। পরে আর বাড়ি ফিরেননি। এরপর থেকেই তিনি ভবঘুরের মতো এখানে-সেখানে ঘুরে বেড়াতেন। এক পর্যায়ে ওই যুবকের স্ত্রী স্বামীর বাড়ি ছেলে চলে যান। লাশ নিতে আমরা বারবার যোগাযোগ করলেও কেউই রাজি হননি। তাই সিলেটের মানিকপীর টিলায় ওই যুবকের লাশ গতকাল রাতে দাফন করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন