জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ে ‘যৌন নিপীড়ন’ এর অভিযোগে সহকারী প্রক্টর মাহমুদুর রহমান জনির সাময়িক বরখাস্ত ও অপসারণের দাবি জানিয়েছে শিক্ষকদের একাংশ। সেইসাথে অভিযোগ তদন্তে স্ট্রাকচারাল কমিটি গঠনের জন্য ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বেধে দিয়েছে সংক্ষুব্ধ শিক্ষকরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ^বিদ্যালয়ের কলা অনুষদের শিক্ষক লাউঞ্জে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে প্রফেসর মানস চৌধুরী বলেন, ‘সহকারী প্রক্টর মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে গুরুত্ববহ দুটি অভিযোগ হলো শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টরের পদ ব্যবহার করে ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ছাত্রীর সাথে যৌন সম্পক স্থাপন এবং শিক্ষক হিসেবে নিয়োগে প্রভাব বিস্তার। অন্য অভিযোগটি হলো আরেক ছাত্রীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন ও তাকে গর্ভপাত ঘটাতে বাধ্য করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ^বিদ্যালয়ের বিধিঅনুযায়ী এগুলো নৈতিক স্খলন ও অসদাচরণজনিত অপরাধ। এসব ঘটনার সত্যতা স্পষ্ট হয়ে উঠে বেশ কিছু ছবি, স্ক্রীনশট এবং অডিও ক্লিপের মাধ্যমে।’
সংবাদ সম্মেলনে তিনটি দাবি পেশ করেন ইতিহাস বিভাগের প্রফেসর আনিছা পারভীন জলি। তিনি বলেন, আগামী ৮ ডিসেম্বরের সিন্ডিকেটে স্ট্রাকচারাল কমিটি গঠন করতে হবে, প্রাথমিক সত্যতা থাকায় অভিযুক্তকে সকল পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা এবং তদন্ত সাপেক্ষে জনিকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিতে হবে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর কামরুল আহসান, শিক্ষক সমতির সদস্য প্রফেসর সোহলে রানা, প্রফেসর মোস্তাফিজুর রহমান চয়নসহ প্রমুখ।
এদিকে বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি বরাবর অভিযোগের আশু তদন্তের আহবান জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরাম। এতে একটি গ্রহণযোগ্য তদন্ত কমিটি গঠনের পাশাপাশি অভিযুক্ত শিক্ষকের অপসারণের দাবি জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে প্রফেসর কামরুল আহসান বলেন, এতসব মারাক্তক অভিযোগের প্রাথমিক সতত্য নিশ্চিত সত্তে¡ও মাহমুদুর রহমান জনির সহকারী প্রক্টর পদে বহাল থাকা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাকে বিঘিœত করছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হওয়া বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত অনুসন্ধানে জানা যায়, জনি একটি অডিওতে পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের এক ছাত্রীকে জোরপূর্বক গর্ভপাতের বিষয়ে নির্দেশনা দিচ্ছেন। সেইসাথে শিক্ষক পদে সদ্যনিয়োগপ্রাপ্ত আরেক ছাত্রীর সাথে নিজের বিছানাকক্ষ ও অফিসকক্ষে অন্তরঙ্গ ছবি আছে।
এব্যাপারে প্রফেসর আনিছা পারভীন জলি বলেন, সহকর্মী হিসেবে জনিকে যতদূর জেনেছি তাতে এসব অডিও ক্লিপ, ছবি ও স্ক্রীনশটের প্রাথমিক সত্যতা আছে। এসব কিছু প্রমাণ করে জনির দ্বারা যৌন নিপীড়ন সংগঠিত হয়েছে। তাছাড়া জনি এখনো এসব তথ্যপ্রমাণকে অস্বীকার করেনি। তাই বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসনকে তার অপসারণ দ্রæত নিশ্চিত করতে হবে।’
এসব বিষয়ে মাহমুদুর রহমান জনি বলেন, ‘এসব তথ্য মিথ্যা ও বানোয়াট। বিশ^বিদ্যালয়ের একটি অংশ আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। সাইবার ক্রাইম ইউনিটের সাথে পরামশ করেছি অচিরেই এদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন