বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, জিয়াউর রহমান ১৫ আগস্টের মাষ্টারমাইন্ড, তাঁর পুত্র হাওয়া ভবনের যুবরাজ ২১ আগষ্ট শেখ হাসিনা হত্যা চেষ্টা, আইভি রহমান সহ ২৩ জনের প্রাণহানির প্রধান নায়ক। তার নির্দেশে হরকাতুল জেহাদ নেতা মুফতি হান্নান সেদিন গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল। বর্তমানে অর্থপাচার মামলায়, যেখানে পিবিআই আমেরিকা থেকে এসে স্বাক্ষ্য দিয়ে গেছে। যার নির্দেশে গ্রেনেড হামলা হয়েছে। সে ২০০৮ সালে মুছলেকা দিয়ে আর রাজনীতি করবে না বলে ফখরুলের নেতা পাড়ি জমিয়েছে টেমস নদীর তীরে লন্ডনে। সেই থেকে পলাতক। সেখানে বসে থেকে হুংকার ছুঁড়ে।
এ সময় তিনি বিএনপির মহাসচিবকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ফখরুল সাহেব- তারেক রহমান গতকালও ঢাকায় এক ক্যাডারের সঙ্গে কনভারসেনে বলেছেন। আপনারা অনেকেই শুনেছেন। বলেছে- তোমরা রাস্তা ছাড়বে না। বলেছে- হাসিনা পালানোর পথ খুঁজছে। হাসিনার মন্ত্রীরা পালানোর পথ খুজঁছে। তোমরা রাস্তা ছাড়বে না। এখান থেকে বলছে- ঢাকা সিটির ৩ ভাগ লিডার আমাদের দখলে। হুংঙ্কার। ফখরুল সাহেব খেলা হবে, হবে খেলা। দেখা যাবে কত ধানে কত চাউল। অপেক্ষা করুন, ডিসেম্বর মাস বিজয়ের মাস, স্বাধীনতার মাস, ফখরুল সাহেব রাস্তা দখল করবেন ? আমরা আকাশ থেকে পড়িনি, মাঠি খুড়ে উঠিনি। জনগনের মাঝখান থেকে এসেছি। কাজেই আমাদের ভয় দেখানো যাবে না। খেলা হবে। আগামীকাল মহাসমাবেশ কাকে বলে চট্টগ্রাম বুঝিয়ে দেব। শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধের স্বপক্ষে ডাক দিয়ে যাবেন।
শনিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুর ৩টায় ময়মনসিংহ নগরীর ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরও বলেন, ময়মনসিংহ সৈয়দ নজরুল ইসলামের দেশ, রফিক উদ্দিনের দেশ, শামসুল হকের দেশ, ব্রহ্মপুত্র বিদৌত এই জেলা। রাজশাহীর মহাসমাবেশ হচ্ছে, পুরো রাজশাহী বিভাগ নিয়ে। আর এখানে একটি জেলা, একটি মহানগর। এখানে লাখো জনতার ঢল নেমেছে এই সম্মেলনে। ময়মনসিংহ মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়েছে।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, রাজশাহী দেখলাম। এখন আবার ঢাকা। কবে ১০ তারিখ। তার আগেই নয়াপল্টন এলাকায় তাঁবু গড়ছেন। হান্ডি পাতিল, বিছানা বালিশ কম্বল। সঙ্গে মশার কয়েলও। সব নিয়ে এসেছেন ৭দিন আগে থেকে তারা ঢাকায় এসেছে। কোথায় পেল এত টাকা। অর্থ পাচার কারা করে। কামাল হোসেন বলেন অর্থ পাচারের কথা। অর্থ পাচারে তারেক রহমান দন্ডিত হবার কথা বলেন না। নিজের ইহুদি জামাতার মাধ্যমে অর্থ পাচার করেন কামাল হোসেন। ট্রাক্স ফাঁকির মামলায় পড়েছিল। আদালত থেকে খালাস নিয়ে ট্রাক্স জমা দিয়েছিল, এই সেই কামাল হোসেন। ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়। তখন কামাল হোসেন গাড়ীতে আসেন হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালে। এসে গাড়ী থেকে নেমে হোটেলের ভেতরে চলে যান। পরে শুনি তিনি পেয়ারে পাকিস্তান চলে গেছেন। এই সেই কামাল হোসেন রাজনীতির রজস্য পুরুষ। যারা টাকা পাচার করেছে, তারা যে দলেরই হোক। সবার অর্থের উৎস খুজা হচ্ছে। শেখ হাসিনার পক্ষে এই বার্তা দিয়ে গেলাম।
কুমিল্লায় বিএনপির মহাসমাবেশে ৭১টি মোবাইল চুুরি হয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ জন্য ৭১টি মামলাও হয়েছে। বিএনপির বিরুদ্ধে বিএনপি। এভাবেই তারা ভোট চুরি করে। খেলা হবে হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে, লটপাটের বিরুদ্ধে। আন্দোলন হবে। রাজপথে শহরে, জেলা, থানায়, ওয়ার্ড পাড়া মহল্লায় আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা অবস্থান নিবে সর্তকতার সাথে। আক্রমন হলে পাল্টা আক্রমণ হবে কিনা, সেটা সময়ই বলে দিবে। দেখি তারা রাস্তায় কয়দিন থাকে। আমরা রাজপথ থেকে ক্ষমতায়। আমরা আকাশ থেকে পড়িনি, মাঠি খুড়ে উঠিনি। জনগনের মাঝখান থেকে এসেছি। কাজেই আমাদের ভয় দেখানো যাবে না। কামাল হোসেন বলেছেন- শেখ হাসিনা বাইরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে, শেখ হাসিনার মন্ত্রীরা বাইরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। একই দিনে লন্ডনে তারেক রহমান যা বলেছেন, ঢাকায় কামাল হোসেনও তাই বলেছেন। ড. কামাল সব সময় একটি ভিসা পকেটে রাখেন। জনসভায় আছেন, ভিসা আছে বাইরে চলে যাবেন। এ কোন নেতা। রাজনীতির রহস্য পুরুষ। খেলা হবে, ময়মনসিংহ প্রস্তুত। আগামীকাল মহাসমাবেশ কাকে বলে চট্টগ্রাম বুঝিয়ে দেব। শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধের স্বপক্ষে ডাক দিয়ে যাবেন।
সম্মেলনে প্রথম অধিবেশনে ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলমের স্বাগত বক্তব্যের পরপরই প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এ সময় অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত রয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি মন্ডলীর সদস্য ও কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ এমপি, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম এমপি, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সংস্কৃতি সম্পাদক বাবু অসীম কুমার উকিল এমপি, সদস্য মারুফা আক্তার পপি, রেমন্ড আরেং প্রমূখ।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে জাতীয় সংগীত পরিবেশন মধ্যে দিয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পরে পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
পরে বিকালে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি ঘোষণা করেন ওবায়দুল কাদের। এই নতুন কমিটিতে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হয়েছেন মহানগর আওয়ামীলীগের সদ্য সাবেক সভাপতি এহতেশামুল আলম ও দ্বিতীয় দফায় সাধারন সম্পাদক হয়েছেন অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল।
এছাড়াও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি হয়েছেন ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো: ইকরামুল হক টিটু ও দ্বিতীয় দফায় সাধারন সম্পাদক হয়েছেন মোহিত উর রহমান শান্ত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন