বিশ^ ব্যাপী যখন মানুষ নিজের অধিকার থেকে বঞ্চিত।ন্যায,বিচার,চুরি ডাকাতি,সন্ত্রাসি কর্ম কান্ড,খুন খারাবি বিরতিহীন চলছে। জন মানব সামাজিকতা হারাছে। জালিম কতৃক দুর্বলরা জুলুমের শিকার হচ্ছে। কোথাও নিরাপদ আশ্রয় খুজে পাচ্ছে না। চলছে জোর যার মুলুক তার। ঠিক সেই সময়ে পথ হারা মানুষকে সত্য-সোজা পথে পরিচালনার জন্য আল্লাহ তাআলা এক জন মহা মানব, বিশ^ নবী (দ) কে এ নশর পৃথিবীতে প্রেরন করেন। তিনি (দ) পথিবীতে এসে সব মানুষের অধিকার ফিরেয়ে দিলেন। মহান আল্লাহ তাআলা সৃষ্টিগত কৌশলে নারী-পুরুষকে আলাদা বৈশিষ্ট-স্বভাব দিয়ে সৃষ্টি করেন। দাম্পত্য জীবনে প্রেম,ভালোবাসা,মায়া-মমতা,অনুগ্রহ আর অফুরন্ত সুখ-শান্তি সহ নিয়ামত রাজীর ভান্ডার ভরিয়ে দিলেন।এরশাদ হচ্ছে- ‘হে মানব সমাজ তোমরা তোমাদের রবকে ভয় কর,যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এক নফস থেকে। আর তা থেকে সৃষ্টি করেছেন তার স্ত্রীকে এবং তাদের থেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী’।(আন নিসা)।
পবিত্র আল কোরআন যদি প্রশ্ন করি নারী কে? নারীর অধিকার কি? নারীর পরিচয়,নারীর অধিকার ও বিধি-বিধান সম্পকে প্রজ্ঞাময় আল কোরআনে বিস্তারিত ব্যাখা বিশ্লেষন রয়েছে। পুরুষের বিপরিত লিঙ্গ নারী। নারীরা পুরুষের অর্ধাঙ্গিনী,স্ত্রী। এক জন মা,কন্যা ইত্যাদি। এরশাদ হচ্ছে-‘আর আল্লাহ তোমাদের জন্য তোমাদের থেকে জোড়া সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের জোড়া থেকে তোমাদের জন্য পুত্র ও নাতিদের সৃষ্টি করেছেন’।(নহল)।মহান আল্লাহ নিধারিত বিষেশ কিছু গুনাবলী ও বৈশিষ্ট দিয়ে নারী-পুরুষকে সৃষ্টি করেন। যখন তারা মৌলিক গুনাবলি ও বৈশিস্টের সীমানা ছড়িয়ে পড়েন তখনই তারা বিভ্রান্তির জালে আটকা পড়েন। বিশ^ নবী (দ) বলেন,‘নিশ্চয় নারীকে সৃষ্টি করা হয়েছে পাজরের বাকা হাড় থেকে’। নারী- পুরুষের পার্থক্য কেবল লিঙ্গগত নয়, প্রতিটি অঙ্গ-প্রতঙ্গ,কর্ম-কৌশলে,পার্থক্য রয়েছে।পুরুষের কাজ ঘরের বাইরে, নারীর কাজ ভিতরে। নারী প্রজন্মেন পর প্রজন্ম জন্ম, সন্তান লালন পালন ও স্বামীর সম্পদ রক্ষায় নিন্দ্রা হীন প্রহরী ন্যায় দায়ীত্ব পালন করবে। ইসলাম ধর্মে নারীরা নবী, রাসুল, মসজিদের ইমাম ,সমাজের নেতা হওয়ার অধিকার রাখে না। এ সব দায়ীত্ব মহিলাদের জন্য হারাম।এরশাদ হচ্ছে-‘পুরুষকে নারীর উপর ম্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি’।হ্যা সব ক্ষেত্রে পরিচালনার দায়ীত্ব পুরুষের উপর। ইসলামী আইনে কোন নারী নিজের স্বামীকে ইচ্ছাকৃত তালাক দেয়ার অধিকার রাখেনি না। তবে স্বামী যদি অনুমতি প্রদান করেন তবেই তালাক দিতে পারবেন।
আজ ইসলামী সংস্কৃতি,অপ সংস্কৃতির কালো মেঘে ঢাকা পড়ে আছে। কালের আর্বতন-বিবর্তনে আর সময়ের পরিবতর্নে অনেক ঘটনা ঘটছে। জাহেলি যুগে নারীরা পিতার সম্পদে কোন অধিকার ছিল না। বিশ^ নবী (দ) নারীকে তাদের হারানো সেই অধিকার ফিরিয়ে দিলেন। একজন নারী, পিতা-মাতা ও স্বামীর সম্পদের অংশীদার হলেন। এরশাদ হচ্ছে-‘একজন পুরুষের অংশ দু’জন নারীর অংশের সমান। আর যদি শুধু নারীই হয় দু’এর অধিক,তাহলে তাদের জন্য ওই ত্যাজ্য মালের তিন ভাগের দুই ভাগ। আর যদি একজনই হয়, তাহলে তার জন্য অর্ধেক’ (নিস্)া। স্বামীর সম্পদে স্ত্রীর অংশ রয়েছে। এরশাদ হচ্ছে-‘স্ত্রীদের জন্য তোমাদের ত্যাজ্য সম্পত্তির এক চর্তুর্থাংশ যদি তোমাদের কোন সন্তান না থাকে। আর যদি তোমাদের সন্তান থাকে তাহলে তাদের জন্য হবে ওই সম্পত্তির আট ভাগের এক ভাগ’(নিসা-১২)। ছেলের সম্পদে মা অংশ পাবেন। এরশাদ হচ্ছে-‘মৃতের কোন পুত্র থাকলে পিতা-মাতার প্রত্যেকের জন্য (সন্তানের)ত্যাজা সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ । যদি পুত্র না থাকে এবং পিতা-মাতাই ওয়ারিশ হয়,তবে মাতা পাবেন তিন ভাগের এক ভাগ’। (নিসা-১১)। মহাপন আল্লাহ তাআলা নারীর অধিকার দিয়েছেন সর্বক্ষেত্রে। আল্লাহ তাআলা ঘোষনা করেন,‘নারীরা তোমাদের পোষাক-পরিচ্ছদ এবং তোমরাও নারীদের পোষাক –পরিচ্ছদ’।বিশ^ নবী (দ) বলেন,‘যাকে চারেেট জিনিস দান করা হয়েছে,তাকে দুনিয়া ও আখেরাতের শ্রেষ্ঠ্য বস্তু দান করা হয়েছে। কৃতজ্ঞ আত্না,যিকির কারী রসনা,বিপদে ধৈর্য্যধারী শরীর ও বিশ^স্ত নারী’। ‘পৃথিবীর সব কিছুই সম্পদ,সম্পদগুলোর মধ্যে নারীই হলো সর্ব শ্রেষ্ঠ সম্পদ’। ‘যে ব্যক্তি দুটি কন্যা সন্তানকে বয়োস প্রাপ্ত হওয়া পর্যন্ত লালন পালন করবে সে ও আমি কিয়ামতের দিন এতটুকু কাছা কাছি থাকব’।‘তোমাদের মধ্যে যারা নিজের স্ত্রীর কাছে ভালো তারা ইসলামের কাছেও ভালো। আমি আমার স্ত্রীদের কাছে ভালো ব্যক্তি’। ‘সচ্চরিত্র ও স্বীয় স্ত্রীদের প্রতি সহৃদয় ব্যক্তি নিশ্চয় পুর্ণ ইমানদার’। ‘যখন স¦ামী-স্ত্রীর পরস্পরের সাথে প্রেম চাউনির বিনিময় করে,তখন আল্লাহ পাক উভয়ের দিকে করুনার দৃষ্টি দেন।অতপর যখন স্বামী-স্ত্রী হাত ধারন করে, তখন তাদের আঙ্গুলির ফাক দিয়ে পাপ রাশি ঝরে পড়ে’।
বর্তমান সমাজে মুখোশ ধারি এক শ্রেনীর মানুষ রয়েছে। যারা বিভিন্ন কলা কৌশলে নারীকে পর্দার বাইরে আনার আপ্রাণ চেষ্টা চালাছে।পর্দাই হচ্ছে নারীর মর্যাদা ও সম্মান।পর্দা হচ্ছে শান্তির ঝর্ণা ধারা।এরশাদ হচ্ছে-‘মহিলারা যেন বড় চাদরের ঘোমটা দ্বারা তাদের চেহারা আবৃত করে রাখে’।(নুর-৩০)। ‘যখন তোমরা(পুরুষরা) নিজেদের ব্যবহারের জন্য তাদের (মহিলাদের) নিকট হতে কোন জিনিস চাইবে,তখন পর্দার আড়াল হতে চাইবে’।(আহযাব-৫৩)।পর্দা করা ফরজ। এক শ্রেনীর নাফরমান মানুষ সমাজে বসবাস করে, যারা পর্দা কে নিয়মিত অস্বীকার করে যাচ্ছ্।ে এরশাদ হচ্ছে-‘হে রাসুল! মুমিন পুরুষগণকে বলে দিন,তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনমিত রাখে এবং যৌন পবিত্রতা রক্ষা করে চলে। এটাই হলো তাদের জন্য পবিত্রতম পন্থা’। ‘হে রাসুল! আপন বিবি,কন্যা,এবং মুমিন মহিলাদের বলে দিন,তারা যেন তাদের পবিত্র শরীর ও মুখ মন্ডল হিজাব দ্বারা আবৃত করে রাখে। ইহাতে তাহাদিগকে চেনা সহজতর হইতে হইবে। ফলে তাহাদিগকে উত্ত্যক্ত করা হইবে না। আল্লাহ ক্ষমাহশীল,পরম দয়ালু’।(আহযাব-৫৯)। আল্লাহ আরো বলেন,‘মহিলারা তাদের পা মাটির উপর এমন ভাবে ফেলবে না,যাতে পুরুষদের নিকট তাদের গোপন সৌন্দর্য্য প্রকাশ হয়ে পড়ে’(নুর ৩১)।
আমরা মানুষ। মানুষের জন্য মহান আল্লাহ পোষাক পরিষেদের ব্যবস্থা করেছেন। মুসলমানের জন্য পর্দা করা ফরজ। পর্দা ছাড়া নারীর অস্তিত্ব বিলীন। যারা নারী অধিকারের কথা বলেন,তারা নিজেরাই স্ত্রীর অধিকার, স্ত্রীকে মোহর রানা থেকে বঞ্চিত করে রাখেন। যৌতুক ছাড়া বিবাহ করেন না। ভন্ড ধারী মানুষরা নিজের সম্পদ ছেলের নামে দলিল করে মেয়েদের কে সম্পদ থেকে বঞ্চিত করে।এ ছাড়াও তারা পর্দার মা-বোনকে মিটিং,সভা,সমাবেশ,মিছিলে সামনে দাড় করে রাখেন। পুরুষ নামের নর পশুটি থাকে মিছিলের পিছনে। যত ঝড়-ঝাপটা,মারা মারি,সব নারীর উপর এসে পড়ছে। নারীরা নিজের অধিকার আদায় করতে এসে, অধিকার হারিয়ে বাড়ি ফিরছে। এটা কোন ধরনের সংস্কৃতি। আসলে আল কোরআন দিয়েছে নারীর অধিকার। পৃথিবীতে কোন জাতি,গোষ্টি বা সম্প্রদায় নারীর অধিকার প্রতিষ্টা করতে পারেন নি। তারা বার বার ব্যর্থ হচ্ছে। ইসলাম ধর্মই একমাত্র নারীর অধিকার নিশ্চিত করেছে। ইসলাম শান্তির ধর্ম,সাম্যের ধর্ম। এ ধর্মে কোন প্রকার ভেদা ভেদ নেই। আমরা নারী অধিকারের পাশা পাশি সব অধিকার ফিরে পেতে চাই। সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই সবার ন্যার্য অধিকার। (লেখক-গ্রন্থকার,সহকারী অধ্যাপক আরবী,সাংবাদিক)।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক আরবী, গ্রন্থকার,
পঞ্চগড় নুরুন আলা নুর কামিল মাদ্রাসা
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন