নীলফামারীর ডিমলায় স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) লোকজনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এসময় স্থানীয়রা নদী খননের ব্যবহৃত স্কেভেটর ও ঠিকাদারের ঘর পুড়িয়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে পুলিশ। গতকাল শনিবার দুপুরে উপজেলার বুড়ি তিস্তা নদীর ছোটপুল এলাকায় নদীর সীমানা নির্ধারণকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষ হয়।
নীলফামারীর ডিমলায় বুড়িতিস্তা নদী খনন কাজে বাধা প্রদান করেছেন ডিমলা সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কুঠির ডাঙ্গাসহ পার্শ্ববর্তী জলঢাকা ও ডোমার উপজেলার (আংশিক) বাসিন্দারা। ভুতকুড়া নামক স্থানে একনেক ক্যাট প্রকল্পের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করাকালে হঠাৎ প্রায় ২/৩ হাজার লোক ‘কৃষক বাঁচাও দেশ বাঁচাও’ সেøাগান দিয়ে সাদা গেঞ্জি পড়ে ও মাথায় কাফনের কাপড় বেধে ঠিকাদারের অস্থায়ী সেডে অতর্কিত হামলা চালায়।
জানা যায়, সেখানে থাকা ১টি মোটরসাইকেল ও ১টি মাটি কাটা স্কেভেটর ভেকু গাড়ীতে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধরা। এছাড়া তারা ২টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে, ৬ সিলিন্ডার ৩টি মেশিন ও ৩২ হর্স ২টি মেশিন আগুনে পুড়িয়ে দেয় এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের একটি টিনের ঘর ভাঙচুর করে। ডিমলা থানা পুলিশসহ পার্শ্ববর্তী জলঢাকা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণে আনেন। ডিমলা ফায়ার সিভিল ডিফেন্স এর ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার মোজাম্মেল হকের নেতৃত্বে দ্রুত ঘটনাস্থল এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ঘটনাস্থল পরির্দশন করেন নীলফামারী সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ, ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন, ডোমার-ডিমলা সার্কেল আলী মোহাম্মদ আব্দুল্লা, ডিমলা থানা ওসি লাইছুর রহমান, জলঢাকা থানার ওসি ফিরোজ কবির, ওসি (তদন্ত) বিশ্বদেব রায়সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। এ বিষয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের স্টান্ডার ইঞ্জিনিয়ারিং মমিনুর রহমান খান বলেন, ৬৪টি জেলায় অভ্যন্তরিন ছোট নদী, খাল এবং জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্পের অধীনে ১২শ’ একর জমির মধ্যে ৫শ’ একর জমি ক্যাট প্রকল্পের আওতায় বুড়ি তিস্তা নদী খননে দৈর্ঘ্য- ৪.৫০ কি.মি. ও প্রস্থ ২.৫০ কি.মি. এবং ব্যারেজে খনন ৬ হেক্টরের মধ্যে ১ লক্ষ ৪ হাজার কৃষি জমি ৯ ফিট গভীরতায় প্রায় ৯০ কোটি টাকা বরাদ্দে কাজ উদ্বোধনকালে অনাকাঙ্খিত ঘটনাটি ঘটে।
এ বিষয় এলাকাবাসি জানান, তারা পাকিস্তান আমল থেকে জমি চাষাবাদ করে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছেন। এখানে ৩টি উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার জনসংখ্যা বসবাস। সংশ্লিষ্ট কর্তৃক তাদেরকে কোন নোটিশ ছাড়াই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে খনন কাজ শুরু করেন। কাজটি শুরু করলে পরিবার পরিজন নিয়ে মাথা গুজার ঠাঁই পাবেন না। ইতোপূর্বে জমি নিয়ে হাইকোর্টের ২টি মামলা নীলফামারী নিম্ন আদালতে চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে ইউএনও বেলায়েত হোসেন ও ডোমার-ডিমলা সার্কেল আলী মোহাম্মদ আব্দুল্লা বলেন, পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক আছে এবং বর্তমানে কাজ স্থগিত রয়েছে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন