মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে গতকাল রাজধানীতে বিজয় র্যালি করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। র্যালি পূর্ব সমাবেশে দলটির নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন এই বলে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের টানাপোড়ন হলে বিচার চাওয়ার বিএনপি কে?
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগের যৌথ আয়োজনে এই র্যালিতে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ক্ষমতাসীন সরকারের সম্পর্কের কোনো টানাপোড়ন নেই। আমেরিকান দূতাবাসের সঙ্গে আমাদের কোনো টানাপোড়ন হলে তা কূটনৈতিক উপায়ে ফয়সালা করব। বন্ধুরাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিবাদ সৃষ্টি করতে উসকানি দিচ্ছে বিএনপি। যদি কোনো বিষয়ে টানাপোড়ন হয় তার বিচার চাইবে যুক্তরাষ্ট্র। তাদের সঙ্গে আমাদের কথা হবে। আপনারা (বিএনপি) কে?
ওবায়দুল কাদের বলেন, মার্শা বার্নিকাট চলে গেছেন কত আগে, যুক্তরাষ্ট্র কিছু বলে না। অথচ বিএনপি আজকে আগ বাড়িয়ে সেই পুরনো কথা বলছে। বাংলাদেশে দায়িত্বরত কূটনৈতিকদের নিরাপত্তার কোনো অভাব নেই দাবি করে সেতুমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ সকল দূতাবাসকে আশ্বস্ত করছি কূটনীতিকদের জন্য নিরাপত্তার কোনো অভাব নেই। বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার বাংলাদেশে সবাই নিরাপদে থাকবেন।
আওয়ামী লীগের নতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনোদিকে কান দেবেনে না। আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান। আমাদের বিরোধী দলকে ধন্যবাদ দেই। তাদের (বিএনপি) শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছে, আগামী ২৪ ডিসেম্বর আমাদের জাতীয় সম্মেলন। তাই তাদের ২৪ ডিসেম্বরের কর্মসূচি ঢাকায় গণমিছিল ৩০ ডিসেম্বর নিয়ে গেছে। নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, খেলা হবে, ভোট চুরির বিরুদ্ধে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে। লুটপাটের বিরুদ্ধে। হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে। একাত্তরের খুনি, পঁচাত্তরের খুনি, ২১ আগস্টের খুনি, ৩ নভেম্বরের খুনিদের বিরুদ্ধে। খুনিদের রক্ষা নেই, রুখবে এবার বাংলাদশ আওয়ামী লীগ। এই অপশক্তিকে রুখতে হবে, শপথ নিন।
আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ১০ ডিসেম্বর বিএনপি পরাজিত হয়েছে। পরাজয় মেনে নেয়ার এই ধারাবাহিকতায় আগামী নির্বাচনেও পরাজিত হবে। আমাদের শপথ হচ্ছে পাকিস্তানের দোসর, চর বিএনপি-জামায়াত অপশক্তির কবর রচিত করতে হবে। তাদেরকে নির্মূল করার পাশাপাশি আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব।
দলের আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বানিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায়। এরা সন্ত্রাসী শক্তি। এই অশুভ শক্তিকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যেকোনো মূল্যে প্রতিহত করে বাংলাদেশকে উন্নত, মর্যাদাশীল রাষ্ট্রে পরিণত করবো।
বিজয় শোভাযাত্রা পূর্ব সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, ঢাক মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি প্রমূখ।
বর্ণাঢ্য র্যালিটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ, এলিফ্যান্ট রোড এবং মিরপুর রোড হয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি-বিজড়িত বাসভবন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক ‘বঙ্গবন্ধু ভবন’ প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়।
এর আগে, মহান বিজয় দিবসের র্যালিকে সফল করার লক্ষ্যে দুপুর ১২টার পর থেকে মহানগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাদ্য বাজনাসহ উৎসবমুখর পরিবেশে খণ্ড খণ্ড মিছিল আসতে শুরু করেন। রমনার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশের (আইইবি) গেটের সামনে দুইটি ট্রাকে অস্থায়ী মঞ্চ করা হয়। অস্থায়ী মঞ্চে র্যালি পূর্ব সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের নেতারাসহ মহানগর উত্তর-দক্ষিণের নেতারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন