গুলশানের রাস্তায় ফুল বিক্রিরত অবস্থায় এক মেয়ে পথশিশুকে কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে মো. আব্দুল্লাহ (৩৯)। বিক্রির উদ্দেশ্যে শিশুটিকে প্রথমে আটকে রাখা হয় নিজের আলমারি তৈরীর কারখানায়। সেখান থেকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রির ব্যর্থ চেষ্টা করা হয়। আটকে রাখায় শিশুটি রুগ্ন হয়ে যাওয়ায় গৃহকর্মীর উদ্দেশ্যে ক্রেতা শিশুটিকে গ্রহনে অস্বীকৃতি জানায়। পরে শিশুটিকে নিজের বাসায় আটকে রেখে গৃহকর্মীর কাজ করানো হতো। দীর্ঘ ৪ বছর ধরে এ ধরনের বন্দি অবস্থা থেকে শিশুটি মুক্তি পায় গত রোববার রাতে। র্যাব ৩ এর একটি টিম শিশুটিকে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকার একটি বাসা থেকে উদ্ধার করে।
গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৩ এর সিও লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে গুলশান আজাদ মসজিদের সামনের ফুটপাতে আব্দুল্লাহ শিশুটিকে ফুল বিক্রি করতে দেখেন। একদিন শিশুটিকে নতুন পোশাক কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে একটি মার্কেটে নিয়ে যান। নতুন পোশাকসহ বিভিন্ন ধরনের খেলনা কিনে দিয়ে শিশুটিকে আব্দুল্লাহ তার স্টিলের কারখানায় নিয়ে যান। কারখানায় নিয়ে গিয়ে শিশুটিকে ৭/৮ দিন রাখা হয়। এরপর তাকে স্থানীয় এক দালালের কাছে গৃহকর্মী হিসেবে ২০ হাজার টাকায় বিক্রির জন্য বায়নাপত্র করা হয়।শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে আব্দুল্লাহ শিশুটিকে তার নিজ বাসায় নিয়ে যান। এরপর তাকে দিয়ে গৃহকর্মীর সব ধরনের কাজকর্ম করাতে থাকেন। শিশটির ওপর চলতে থাকে নির্যাতন।
শিশুটির বাবা-মা গুলশান থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। ডায়েরি করার চার বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও কোনো খোঁজ না পেয়ে তারা র্যাব-৩ এ পুনরায় একটি অভিযোগ করেন। এর প্রেক্ষিতে র্যাব-৩ এর একটি দল গতরাতে রাজধানীর খিলগাঁও এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এসময় চার বছর আগে অপহরণ হওয়া শিশুটিকে উদ্ধার করে অপরহণকারী আব্দুল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়।
চার বছর আগে অপহরণকালে শিশুটির বয়স ছিল ১২ বছর। বর্তমানে তার বয়স ১৬ বছর। শশুটির বাবা রিকশা চালান। মা গৃহকর্মী হিসেবে মানুষের বাসায় কাজ করেন। শিশুটির দুই ভাই-বোন রয়েছে। তারাও রাস্তায় ফুল ও স্টিকার বিক্রি করে বাবা-মাকে সাহায্য করে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন