রাজধানীর মৌচাক-মালিবাগ এলাকায় পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা, হামলা ও বিস্ফোরণের অভিযোগে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে তিন থানায় চারটি মামলা দায়ের হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে ও গতকাল শনিবার পুলিশ বাদী হয়ে রামপুরা থানায় একটি, খিলগাঁও থানায় দুটি ও শাহজাহানপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করে।
ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের ডিসি হায়াতুল ইসলাম খান বলেন, গত শুক্রবার জামায়াতে ইসলামী অনুমতি না নিয়েই গণমিছিল শুরু করে। মিছিল থেকে জনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা কাজে নিয়োজিত থাকা পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা করা হয়। অনেক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনার পর রাতে ও সকালে তিন থানায় চারটি মামলা হয়।
খিলগাঁও থানার ওসি মো. ফারুকুল আলম বলেন, খিলগাঁও থানায় দুটি মামলা হয়েছে। দুজন গ্রেপ্তার হয়েছে। দুই মামলার বাদী এসআই রেজাউল ইসলাম। দুই মামলায় ৭৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও অনেককে আসামি করা হয়েছে। শাহজাহানপুর থানার ডিউটি অফিসার জানান, পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। আসামি অজ্ঞাত।
রামপুরা থানার ডিউটি অফিসার এসআই রহমান জানান, একটি মামলা হয়েছে। মামলা নং ৩। বাদী এসআই মারুফ হোসেন। মামলার আসামি হাতেনাতে গ্রেপ্তার চারজনসহ অজ্ঞাত আরো অনেকে। অন্যদিকে পুলিশের ওপর যে হামলা করেছে সেটি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
শনিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, জামায়াতে ইসলামী পুলিশের কাছ থেকে গণমিছিলের অনুমতি নেয়নি। আমরা বিষয়টি খুব গুরুত্ব সহকারে নিয়েছি। যেহেতু তারা বিনা অনুমোদনে একটা মিছিল বের করেছে, পুলিশের ওপর হামলা করেছে। সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তাসহ আরও পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। হামলাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে মামলা মোকদ্দমা করে তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়ার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি, এভাবে বেআইনি কাজ করা ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলার বিষয়ে কাউকে বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া হবে না।
পুলিশের ওপর হামলার ঘটনার পেছনে গোয়েন্দা নজরদারির ব্যর্থতা রয়েছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গোয়েন্দা নজরদারি ছিল না বিষয়টি এ রকম নয়। আমরা তথ্য পেয়েছিলাম তারা বায়তুল মোকাররমের সামনে থেকে মিছিল করবে। কিন্তু তারা রামপুরা আবুল হোটেলের সামনে থেকে মিছিল করার চেষ্টা করলে পুলিশের বাধা পেয়ে মৌচাক-মালিবাগে এসে মিছিলটি করে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে মগবাজার থেকে জামায়াতে ইসলামীর একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি মৌচাক মোড়ে পৌঁছালে পুলিশের বাধায় কিছুটা পিছু হটে। পরে তারা মালিবাগের দিকে এগিয়ে গেলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ ও টিয়ার শেল ছোড়ে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন