শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী বিশ্ব

এরদোগান-পুতিন অভিন্ন অবস্থান

| প্রকাশের সময় : ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : ঝানু রুশ কূটনীতিক আন্দ্রেই কারলভের হত্যাকা- নিঃসন্দেহে রাশিয়া ও তুরস্ককে একটা বড় রকমের ঝাঁকুনির মধ্যে ফেলেছে। সংশয় দেখা দিয়েছে দুই দেশের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে। আন্তর্জাতিক রাজনীতির প্রতি আগ্রহ রয়েছে এমন মানুষদের আগ্রহের কেন্দ্রে এখন রুশ-তুর্কি সম্পর্ক। তাদের প্রশ্ন, দুই দেশের সম্পর্ক ঠিক কোন পথে ধাবিত হচ্ছে? আশঙ্কা থাকলেও এখনও পর্যন্ত এ হত্যাকা- রাশিয়া ও তুরস্কের সম্পর্কে নতুন কোনও সংকট তৈরি করেনি। উল্টো এ খুনের ঘটনায় একই ভাষায় কথা বলেছেন দুই দেশের নেতারা। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেব এরদোগান এবং ভøাদিমির পুতিন যেন পরস্পরের বক্তব্যেরই প্রতিধ্বনি করেছেন। তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যেই রাশিয়ার দূতাবাসের বাইরে জড়ো হয়েছিলেন চার রুশ নারী। তারা সেখানে গিয়েছিলেন ১৯ ডিসেম্বর সোমবার বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত রাশিয়ার কূটনীতিক আন্দ্রেই কারলভের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে। তুরস্কে নিয়োজিত রাশিয়ার এই রাষ্ট্রদূতকে তারা ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন। এই নারীদের একজন লারিসা লাটকোভা তার্ককান। তিনি তুরস্কে রাশিয়ান কালচারাল অ্যাসোসিয়েশনে কর্মরত এই নারী বলেন, এটা আমাদের সবার জন্য; রাশিয়ার সব মানুষের জন্য একটা বিশাল ট্রাজেডি। তিনি ছিলেন একইসঙ্গে একজন চমৎকার মানুষ এবং একজন মেধাবী কূটনীতিক। তুরস্কের বিবিসি’র প্রতিনিধি মার্ক লোয়েন তার কাছে জানতে চান, এ হত্যাকা-ের ঘটনায় রুশ সরকারের ক্ষোভ বা ক্রোধ তিনি বুঝতে পারেন কি না? এমন প্রশ্নে কিছুক্ষণের জন্য থামেন লারিসা লাটকোভা তার্ককান। এরপর বললেন, আমি মনে করি, আমি এটা বুঝতে পারি। কিন্তু এই মুহূর্তে কথা বলা আসলেই কঠিন।তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেব  এরদোগান বলেছেন, দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিনষ্ট করার লক্ষ্যেই এই হত্যাকা- ঘটানো হয়েছে। এটা একটা উস্কানিমূলক কাজ, যার উদ্দেশ্য দুই দেশের সহযোগিতায় সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠার যে প্রক্রিয়া চলছে সেটাকে বাধাগ্রস্ত করা। যারা তুরস্ক-রাশিয়ার সুসম্পর্ক বিনষ্ট করতে চাইছেন তাদের লক্ষ্য অর্জিত হবে না। রিসেপ তাইয়্যেব এরদোগান যে ভাষায় বলেছেন বাস্তবতা যদি তাই হয়; তাহলে এ হত্যাকা-কে ঘিরে রুশ-তুর্কি সম্পর্কে নতুন করে বৈরিতার যে আশঙ্কা করা হয়েছিল সেটা ভুল প্রমাণিত হবে। এটা অভিন্ন শত্রু হিসেবে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাশিয়া ও তুরস্ককে আরও কাছাকাছি নিয়ে আসবে। আর এর মধ্যদিয়ে দুই দেশ বৃহত্তর পরিসরে পারস্পরিক সহযোগিতার প্রতি উৎসাহিত হবে; এতদিন যেটা কৌশলগত সম্পর্কের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। রাশিয়ার সঙ্গে তুরস্কের লড়াই নতুন নয়। এর ব্যাপ্তি চার শতকের। দুই দেশের সর্বশেষ সামরিক সংঘাতের ১০০ বছর পরও তাদের পারস্পরিক বিতর্ক, বাদানুবাদ অব্যাহত থাকে। বিশেষ করে তুরস্কের প্রতিবেশী দেশ সিরিয়ার প্রায় অর্ধযুগের গৃহযুদ্ধে পুরোপুরি বিপরীত অবস্থান নেয় রাশিয়া ও তুরস্ক। সিরিয়ায় সামরিক অভিযানেও জড়ায় মস্কো ও আঙ্কারা। রাশিয়া যেখানে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে বদ্ধপরিকর; সেখানে তুরস্ক যে কোনও মূল্যে আসাদের পতন চায়। এমনকি গতবছরই রাশিয়াকে উদ্দেশ্যে করে এরদোগান বলেছিলেন, আইএস-এর বিরুদ্ধে হামলার অজুহাত তুলে সিরিয়াতে বাশার আল আসাদ বিরোধীদের উপর আক্রমণ চালানো আগুন নিয়ে খেলার সামিল। বিবিসি, আল জাজিরা, দ্য গার্ডিয়ান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন