প্রচন্ড শীতে গোটা চুয়াডাঙ্গা জেলা এলোমেলো হয়ে পড়েছে। শীত ও কুয়াশাচ্ছন্ন জেলার মানুষ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। বেলা বাড়লেও সূর্যের দেখা মিলছেনা। স্বাভাবিক কর্মজীবন হয়ে পড়েছে দুর্বিসহ। নিউমোনিয়ায় শিশু ও বৃদ্ধসহ ৫জনের মৃত্যু হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেনীর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল হাসান জানান, এ জেলায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড থাকায় প্রচন্ড শীত অনুভূত হচ্ছে। জেলা ব্যাপী শৈত্য প্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। শনিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৯৫ শতাংশ। দৃষ্টি সীমা ৫০০ মিটার। এর আগে এদিন সকাল ৬টায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিলো। ওই সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিলো ৯৭ শতাংশ। গত ২০ দিন থেকে এ জেলায় ক্রমাগত তাপমাত্রা কমছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া থাকায় সূর্যের দেখা মিলছেনা। দিনে শীত কম হলেও রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা কমে হাঁড় কাঁপানো শীত অনূভূত হচ্ছে। এর ফলে জনজীবনে দূর্ভোগ বাড়ছে। এ আবহাওয়া আরো কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালে শীতজনিত রোগ নিউমোনিয়ায় শিশু ও বৃদ্ধসহ এপর্যন্ত ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা কয়েকজন শিশু রোগীর স্বজনেরা জানান, এ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা.আতাউর রহমান সময়মত তার অফিসে আসেন না। যদিও বা আসেন, তার কাছে চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শ নিতে গেলে তিনি উগ্র আচরণ করেন। হাসপাতালের শিক্ষানবীশ সেবিকারাও চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করছে। তাদের ব্যাপারে বলার জন্য কেউই এ হাসপাতালে থাকে না। এ হাসপাতালে বর্তমানে বেশীভাগ ঔষুধই বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে। খেয়াল খুশিমত রোগীদের খাবার সরবরাহ করা। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়কের কারনেই এক অরাজগ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে এ হাসপাতালে। এ প্রসঙ্গে কথা বলতে তত্ত্বাবধায়ক ডা.আতাউর রহমানের মোবাইল ফোনে কল দিলে সাংবাদিক পরিচয় শুনে তিনি কলটি কেটে দিয়ে ফোনটি বন্ধ করে দেন।
বৈরী আবহাওয়ার কারনে সকাল থেকেই যানবাহন চলাচল কম করছে। যাত্রী সংখ্যা কম থাকায় পরিবহনের সিডিউল বাতিল করা হচ্ছে। রাস্তাঘাটে, হাটেবাজারে জনসমাগম লক্ষ্য করা যাচ্ছেনা। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের কেনাবেচা কম। টানা কয়েক দিনের শীতের কারনে উপার্জন করতে না পারায় মানুষ তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকটা না খেয়ে দিন যাপন করছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন অধিদপ্তর সুত্রে জানা যায়, ২১ হাজার ১০০টি কম্বল বিতরণের পর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান ৩০ হাজার কম্বলের চাহিদা পত্র পাঠিয়েছেন। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন তার তহবিল থেকে ১০ লাখ টাকা দিয়ে ২ হাজার ৮৮৮টি কম্বল কিনেছেন যা জেলার সদর ও আলমডাঙ্গা উপজেলার শীতার্ত মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন