চাকরির পরীক্ষা দিতে গিয়ে হেনস্তা হওয়ার অভিযোগ নতুন নয়। অনেক সময় চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগপত্র পাওয়ার জন্য কুপ্রস্তাবেও রাজি হতে হয়। অনিচ্ছা সত্ত্বেও শারীরিক সম্পর্কে জড়াতে হয়। কিন্তু দিন কয়েক আগে বিমান সেবিকার চাকরির ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে তরুণীদের সঙ্গে যা ঘটল, তা একেবারে অনন্য। ভয়ংকর এক অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকলেন স্পেনের মাদ্রিদ শহরের তরুণীরা।
চোখে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে চাকরির ইন্টারভিউ দিতে গিয়েছিল একঝাঁক তরুণী। স্বপ্ন ছিল ডানা মেলে আকাশে উড়বে। বিমান সেবিকা হবে। বিমান সেবিকা বা এয়ার হোস্টেজ পদে নিয়োগের জন্য শারীরিক গড়ন পরখ করে নেওয়া হয়। এটা সকলের জানা। কিন্তু আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থা কুয়েত এয়ারলাইন্সের ইন্টারভিউতে চাকরিপ্রার্থীদের শারীরিক গঠন পরীক্ষা নিয়ে চরম বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কাঁদতে কাঁদতে ইন্টারভিউ দিয়ে বেরিয়েছেন বহু চাকরিপ্রার্থী, এমনই অভিযোগ। কিন্তু কী এমন ঘটেছিল স্পেনের মাদ্রিদ শহরের বিমানবন্দরের কাছে মেলিয়া বড়জাস নামক হোটেলে?
একাধিক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, ইন্টারভিউ চলাকালীন তরুণীদের পোশাক খুলতে বাধ্য করা হয়ছিল। এমনকী, খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা হয় তাদের অন্তর্বাস। কাউকে কাউকে তো আবার অন্তর্বাস খোলানো হয় বলেও অভিযোগ। ইন্টারভিউ দিতে আসা তরুণীদের অভিযোগ, তাদের সঙ্গে কুকুরের মতো আচরণ করা হয়েছে। বহু চাকরিপ্রার্থীর স্রেফ শারীরিক গড়ন দেখে আবেদন বাতিল করা হয়। কারওর ওজন বেশি, কারওর চশমা আছে, কারওর মুখে ব্রণ আছে, কারওর আবার ভ্রুতে দাগ আছে, এই অজুহাতে ইন্টারভিউ না নিয়েই অনেককে ফেরত পাঠানো হয় বলে দাবি। অভিযোগ, এক চাকরিপ্রার্থী ৭ রকমের ভাষা জানতেন। কিন্তু স্রেফ ওজন বেশি, তাই তাকে নিয়োগপত্র দেয়া হয়নি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে চাকরিপ্রার্থী মারিয়ানা তার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। ইন্টারভিউ চলাকালীন তার পোশাক খুলিয়ে অন্তর্বাস খুঁটিয়ে দেখেন এক মহিলা। একই অভিজ্ঞতা হয়েছে বিয়ানকা নামে এক চাকরিপ্রার্থীরও। তাকে তো অন্তর্বাসও খুলতে বলা হয়েছিল। এমনকী, বলা হয় বড় করে হাঁ করতে। পরীক্ষা করে দেখা হয় তার দাঁতের গড়ন। ইন্টারভিউ শেষে কাঁদতে কাঁদতে ফিরে আসেন তারা। একাধিক রিপোর্ট পেতেই নড়েচড়ে বসেছে স্পেনের শ্রমমন্ত্রক। তারা তদন্ত শুরু করেছে। তবে এ নিয়ে কুয়েত এয়ারওয়েজের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। সূত্র: এভিয়েশন২৪।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন