শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

ঠান্ডাজনিত রোগে এক সপ্তাহে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৭ শিশুর মৃত্যু

দক্ষিণাঞ্চল যুড়ে অব্যাহত শীতের কামড়ে বিপন্ন জনজীবন

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৮ জানুয়ারি, ২০২৩, ৩:৪২ পিএম

অব্যাহত শীতের প্রকোপে প্রতিদিন নানা জটিলতা নিয়ে বিপুল সংখ্যক শিশু সরকারী-বেসরকারী হাসপাতালে আসছে। শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শনিবারের ছবি।


দক্ষিণাঞ্চল যুড়ে শীতের কামড়ে গত এক সপ্তাহে বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ৭ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলে ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে সরকারী হাসপাতালগুলোতেই সাড়ে ৩ হাজার শিশু ভতি হয়েছে। এ্যাজমা, নিউমোনিয়া ও ঠান্ডা জনিত জ্বরে আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে স্বজনদের উপচে পড়া ভীড়ে দক্ষিনাঞ্চলের সববৃহত এ সরকারী হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সরা হিমশিম খাচ্ছেন। রোগীদের সামাল দেয়ার স্থান না থাকলেও কনকনে ঠান্ডায় কাউকে মেঝতেও রাখা যাচ্ছে না। তারপরেও অনেক শিশু রোগীকে মেঝেতেই আশ্রয় নিতে হয়েছে। এমনকি এক বেডে দু থেকে তিনজন শিশু রোগীকে স্থান দিতে হচ্ছে । ফলে একটি বেডকে ঘীরে তিনজন মা সহ স্বজনের ভিড়ে আরো বেশি অসুস্থ পড়ছে শিশুরা।
দক্ষিণাঞ্চল যুড়ে শীতের কামড় রোববারেও অব্যাহত ছিল।শনিবারে বরিশালে তাপমাত্রার পারদ মৌসুমের সব নিম্নে ৯.৮ ডিগ্রী সেলসিয়াসে নেমে যায়। যা স্বাভাবিকের ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস নিচে। সাথে উত্তর-পশ্চিমের হীমেল হাওয়া আর দিন ও রাতের তাপমাত্রার তারতম্য কমে যাওয়ায় শীতের অনুভুতি তীব্রতর হচ্ছে। গত সপ্তাহ খানেকেরও বেশী সময় ধরে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল শীতের কামড়ে বিপযস্ত। সূযের দেখা মিলছে অনেক বেলায়। আবহাওয়া বিভাগে থেকে সোমবার সকালের পরের ৪৮ ঘন্টায়ও রাতের তাপমাত্রা হ্রাস পাবার সম্ভবনার কথা বলা হয়েছে।
এদিকে শের বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের ৩টি ইউনিটের ১৫ জন নার্সের এখন কোন ফুরসত নেই। পাশাপাশি একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে ঘিরে ৫ জন ইন্টার্নি চিকিৎসক রোগী দেখতে ব্যস্ত। শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ জানিয়েছেন, শীতের সময় প্রতিবছরই আমাদের বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে হয়। এক বেডে দু’জন করে শিশুরোগীকে রাখা হয়েছে। শনিবার দুপুর পর্যন্ত শিশু বিভবগের ৩৬ বেডে দেড়শ রোগী চিকিৎসাধীন ছিল বলে জানান তিনি। অতিরিক্ত বেড বসানোর পরও অনেক রোগীকে ফ্লোরে রাখতে হচ্ছে। আর গত সাতদিনে গড়ে একজন করে শিশু মৃত্যু হয়েছে বলেও জানান দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক।
হাসপাতালটির শিশু ওয়ার্ডের তথ্য মতে, গত এক সপ্তাহে প্রায় ৩ হাজার শিশু চিকিৎসা নিয়েছে। স্বজনদের অভিযোগ, একটি বেডে তিনজন করে শিশুর সাথে তাদের স্বজনরা থাকে। ফলে সুষ্ঠু চিকিৎসা ব্যহত হচ্ছে । ডাক্তার, নার্স শত চেষ্টা করলেও বেড সংকট এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা।
তবে হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, চিকিৎসক সংকটের কারণে আমরা পৃথক শিশু ওয়ার্ড চালু করতে পারছিনা। অল্পদিনের মধ্যে তৃতীয় তলায় সার্জারী বিভাগ সরিয়ে সেখানে ১শ বেড স্থাপন করে শিশু ওয়ার্ডের ১ ও ২ ইউনিট স্থানান্তর করার কথা জানান তিনি।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগন শীতের প্রকোপের এ সময়ে শিশু বয়োবৃদ্ধদের প্রতি বাড়তি নজর রাখার তাগিদ দিয়েছেন। কোন অবস্থাতেই যাতে বুকে ও গলায় ঠান্ডা বসে না যায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখারও তাগিদ দিয়েছেন চিকিৎসকগন। যেকোন জটিলতায় দ্রুত চিকিৎসকের পরামশ গ্রহনের কথা বলেছেন বিশেজ্ঞগন। 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন