আগামীকাল ১১ জানুয়ারী বুধবার কেন্দ্রীয় বিএনপি ঘোষিত গণঅবস্থান কর্মসূচি সফল করতে জেলা জেলায় গতকালও প্রস্ততি সভা করেছে বিএনপি। প্রস্তুতি সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, মানুষের মঙ্গলে বিএনপি ঘোষিত ১০ দফা দাবি এবং রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা মেনে নিতে হবে। আমাদের ব্যুরো প্রধান ও সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যে খবর বিস্তারিত:
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, বর্তমান কর্তৃত্ববাদী সরকার দেশের সবকিছু ভেঙে চুরমার করে ফেলেছে। তারা এখন প্রশাসন, বিচার বিভাগ এমনকি গণমাধ্যমকেও নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছে। জোর করে ক্ষমতায় ঠিকে আছে। রাষ্ট্রের মালিকানা আজ জনগণের হাতে নেই। দেশের মানুষ গণতন্ত্রকে মুক্ত করার জন্য আন্দোলন করছে। আন্দোলনের মাধ্যমেই সরকারের পতন ঘটানো হবে। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামে বিএনপির বিভাগীয় গণঅবস্থান কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানান তিনি। গতকাল সোমবার নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের মাঠে আগামী ১১ জানুয়ারী বুধবার কেন্দ্রীয় বিএনপি ঘোষিত গণ অবস্থান কর্মসূচি সফল করার লক্ষে মহানগর বিএনপির প্রস্ততি সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নির্যাতন নিপীড়ন চালিয়ে ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের জনগণকে দাবিয়ে রাখছে। কিন্তু এসব করে আওয়ামী লীগের শেষ রক্ষা হবে না। একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীন এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় নির্বাচন হতেই হবে। যদি নিরপেক্ষ সরকার না থাকে, বিএনপি সে নির্বাচন মেনে নেবে না।
এতে বিএনপির শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, নগর বিএনপি নেতা এম এ আজিজ, মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, শফিকুর রহমান স্বপন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, মো. শাহ আলম, ইসকান্দর মির্জা, আবদুল মান্নান, হাজী মো. আলী, মাহবুব আলম, অধ্যাপক নুরুল আলম রাজু, এস এম আবুল ফয়েজ, আনোয়ার হোসেন লিপু, মনজুর আলম চৌধুরী মনজু, মহানগর যুবদলের সভাপতি মোশাররফ হোসেন দিপ্তী, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ, মহিলাদল নেত্রী জেলী চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, বাংলাদেশে তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ছাড়া আর কোন নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। এই সরকার আবারও নিজেদের মত করে নির্বাচন করার লক্ষে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দুদক ও আদালতকে ব্যবহার করা শুরু করেছে। কিন্তু এগুলো করে সরকারের শেষ রক্ষা হবেনা বলে রাজশাহী মহানগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে ১০দফা দাবি এবং রাষ্ট্র কাঠামো মেরামত রূপরেখা ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণমূলক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এ কথাগুলো বলেন।
তিনি বলেন, সংবিধান কোন ধর্মগ্রন্থ নয় যে এটা পরিবর্তন করা যাবে না। তৎকালীন সময়ে আওয়ামী লীগ তত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলন শুরু করলে বিএনপি গণতন্ত্রের স্বার্থে সংসদের মাধ্যমে পাশ করে তত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চালু করেন। অথচ এই বিনা ভোটের সরকার ক্ষমতায় এসে তাদের স্বার্থে সংবিধান বার বার পরিবর্তন করলেও তত্বাবধায়ক নিয়ে কোন কাজ তারা করছেন না। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে এমন কোন ব্যক্তি ও রাজনৈতিক নেতা নাই যে কোর্ট থেকে জামিন পাননি। অথচ বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগন খালেদা জিয়াকে বিনা কারণে শুধুমাত্র রাজনৈতিক উদ্যেশ্য হাসিল করতে সাজা প্রদান করে জেলে রাখা হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। এই সরকার ব্যাংক ব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলেছে। বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানী তেলের মূল্য বৃদ্ধি করে প্রতিটি পণ্য জনসাধারণের নাগালের বাহিরে নিয়ে গেছে। এখন মানুষ অত্যন্ত অসহায়ভাবে জীবনযাপন করছে। অথচ সরকার মেগা প্রকল্পের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করে বিদেশে পাচার করেছে। এইগুলো অন্যায় থেকে বাঁচতে আইন শৃংখলাবাহিনী ও প্রশাসনযন্ত্র ব্যবহার করে আবারও ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। কিন্তু এ আশায় ছাই ছিটিয়ে দেবে বিএনপি। এজন্য দেশব্যাপি সরকার পতনের আন্দোলন শুরু হয়েছে।
সভায় রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা, বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার অন্যতম উপদেষ্টা, সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য মিজানুর রহান মিনু, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক, রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও রাসিক সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক ও রাজশাহী মহারগর বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুর হক মিলন, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম মার্শাল, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির রাজশাহী বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দন ও জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট তোফাজ্জল হোসেন তপু।
রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সদস্য সচিব মামুনুর রশিদ মামুন ও জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব অধ্যাপক বিশ্বনাথ সরকারের সঞ্চালনায় আরো উপস্থিত ছিলেন মহানগর বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, জেলা বিএনপি’র সদস্য অধ্যাপক আব্দুস সামাদ, রোকনুজ্জামান আলম, আলী হোসেন, গোলাম মোস্তফা মামুন, রায়হানুল আলম রায়হান, কামরুজাজামান হেনা, তোফায়েল হোসেন রাজু, জাকিরুল ইসলাম বিকুল, মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন, জয়নাল আবেদিন শিবলী, শফিকুল ইসলাম শাফিক, বজলুল হক মন্টু প্রমুখ। এছাড়াও মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ ও জেলার বিভিন্ন থানা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
স্টাফ রিপোর্টার, মাগুরা থেকে জানান, বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু বলেছেন, মানুষের মঙ্গলে বিএনপি ঘোষিত ১০ দফা দাবি এবং রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা মেনে নিতে হবে। মাগুরা জেলা বিএনপির ইসলামপুর পাড়া জেলা কার্যালয়ে মাগুরা জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আহসান হাবীব কিশোরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথার বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মতিনুর রহমান বিএনপি ঘোষিত ১০ দফা দাবি এবং রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ২৭ দফা রূপরেখা বিষয়ে ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষনধর্মী এ আলোচনা সভায় মাগুরা জেলা ও মাগুরা সদর শ্রীপুর, মহম্মদপুর, শালিখা উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীদের উপস্থিতিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।
সভায় জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক খান হাসান ইমাম সুজা, অ্যাড. রোকনুজ্জামান খান, ফারুকুজ্জামান ফারুক, আলমগীর হোসেন, মিঠুন রায় চৌধুরী, অ্যাড, শাহেদ হাসান টগর, মাগুরা সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি কুতুব উদ্দিন, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক মাসুদ খান কিজিল, জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আব্দুর রশীদসহ নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে, তারা দিশেহারা হয়ে পালানোর পথ খুঁজছে। এখন সংঘবদ্ধ আন্দোলন জোরদার করলে এ সরকারের পতন নিশ্চিত। তিনি নেতা কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে জনগণকে সাথে নিয়ে আন্দোলন বেগবান করার আহ্বান জানান। মিথ্যা ও গায়েবী মামলায় বিএনপির হাজার হাজার বন্দি নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্থান্তর করার জন্য আহ্বান জানান।
ঝালকাঠি জেলা সংবাদদাতা জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিবে না বিএনপি, নির্বাচন করতেও দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত এয়ার ভাইস মার্শাল আলতাফ হোসেন চৌধুরী। তিনি গতকাল সকাল ১১টায় ঝালকাঠি জেলা বিএনপি আয়োজিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ বিষয় এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। শহরের আমতলা সড়কের দলীয় কার্যালয়ে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেন, বিএনপি নির্বাচন করবে তবে শর্ত আছে, খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তি, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, তত্ত্বাবধায় সরকার গঠন, নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন এবং ইভিএমকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করতে হবে। এগুলো যদি না করা হয় আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবোই না, নির্বাচন করতেও দেবো না।
ঝালকাঠি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ হোসেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট শাহাদাৎ হোসেন, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এজাজ আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক খোকন মল্লিক, পৌর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট নাসিমুল হাসান, সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান তাপু, বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান মুবিন, নলছিটি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আনিসুর রহমান খান হেলাল, সদস্যসচিব সেলিম গাজী, জেলা যুবদলের সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান খান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিকুল ইসলাম লিটন, সাধারণ সম্পাদক সরদার সাফায়েত হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আরিফুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক গিয়াস সরদার দিপুসহ দলীয় নেতৃবৃন্দ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন