ব্রিটিশ রাজপরিবার ছেড়ে যাওয়া প্রিন্স হ্যারির স্মৃতিকথা ‘স্পেয়ার’ অবশেষে পাওয়া যাচ্ছে। কয়েক মাস অপেক্ষা এবং তীব্র প্রচারণার পর প্রিন্স হ্যারির আত্মজীবনী স্পেয়ার গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে তার জন্মস্থান যুক্তরাজ্যে বিক্রি শুরু হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এটি বাজারে আসার আগে বইটিতে প্রিন্স হ্যারি সম্পর্কে তথ্য নিয়ে ব্যাপক হৈচৈ হয়েছিল। বইটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশের পর পাঠকদের ভিড় সামলাতে লন্ডনের বইয়ের দোকানগুলো মধ্যরাত পর্যন্ত খোলা রাখতে হয়েছে। প্রিন্স হ্যারির বইটি ১৬টি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে। এদিকে, বড় ভাইয়ের কাছে মারধরের শিকার হওয়া ও বাবার নির্মম রসিকতার কথা প্রকাশ করার পরে এবার সৎ মা ক্যামিলিয়াকে ‘ভিলেন’ বলে অভিহিত করেছেন প্রিন্স হ্যারি! যা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে।
স্পেয়ার গত এক দশকে সবচেয়ে বেশি প্রি-অর্ডার করা বইয়ের তালিকায়ও প্রবেশ করেছে। প্রিন্স হ্যারি এ বইতে রাজপরিবারের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ করেছেন। শুধু তাই নয়, ৪১৬ পৃষ্ঠার বইটিতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। তার স্মৃতিকথায় ব্রিটিশ রাজপরিবারের দ্বন্দ্বের বিস্ফোরক বিবরণ প্রকাশ করার পাশাপাশি সাসেক্সের ডিউক সেনাবাহিনীতে চাকরি করার সময় ২৫ জন আফগান নাগরিককে হত্যার ঘটনাও প্রকাশ করেন। প্রিন্স হ্যারি তার বইতে আরো লিখেছেন, তিনি ও মেগান শিগগিরই একটি সন্তান নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কাজ আর ব্যস্ততার কারণে সময়টা তাদের জন্য সঠিক ছিল না। এক পর্যায়ে দম্পতি মেগানের ওজন হ্রাস নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। মূলত বিভিন্ন ধরনের মানসিক চাপের কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ফলে মেগানের জন্য গর্ভধারণ কঠিন হয়ে পড়ে।
মেগান মার্কেলকে কেন্দ্র করে প্রিন্স হ্যারিকে মারধর করেন তার বড় ভাই উইলিয়াম, এমনটাও ওই বইতে জানিয়েছেন প্রিন্স হ্যারি। উইলিয়াম তাকে কলার ধরে মাটিতে ফেলে দিয়েছিলেন। মেগান ২০১৮ সালে প্রিন্স হ্যারিকে বিয়ে করেছিলেন। নিজের থেকে তিন বছরের বড় আমেরিকান অভিনেত্রী মেগান মার্কেলকে বিয়ে করার পর প্রিন্স হ্যারিকে নিয়ে আলোচনা ভিন্ন রূপ নেয়। প্রিন্স হ্যারি ও মেগান ২০২০ সালের শুরুর দিকে ব্রিটিশ রাজপ্রাসাদ ত্যাগ করেছিলেন। তাদের প্রাসাদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত সারা বিশ্বকে নাড়া দেয়। রাজপরিবার ছেড়ে তারা প্রথমে কানাডায় যান। তারপর লস অ্যাঞ্জেলেসে যান। তাদের ঘরে দুই সন্তান রয়েছে।
এদিকে, প্রিন্স হ্যারির একটি সাক্ষাতকার ঘিরে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সেখানে তিনি সৎ মা ক্যামিলিয়াকে ‘ভিলেন’ বলে অভিহিত করেছেন। প্রিন্সেস ডায়নার মৃত্যুর পরে কুইন কনসর্ট ক্যামিলিয়াকে বিয়ে করেছিলেন রাজা চার্লস। এই বিয়েতে নাকি সায় ছিল না দুই ভাই হ্যারি ও উইলিয়ামের। তারা বাবাকে নাকি বিয়ে করতে বারণও করেছিলেন। অ্যান্ডারসন কুপারকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে হ্যারিকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘উনি (ক্যামিলিয়া) একজন ভিলেন। আমাদের মনে হয়নি ব্যাপারটার (চার্লসের সঙ্গে বিয়ে) আদৌ দরকার আছে। আমাদের মনে হয়েছিল এতে মন্দ বই ভাল হবে না। তবে আমি চেয়েছিলাম যেন ক্যামিলিয়া খুশি থাকেন। কেননা খুশি থাকলে উনি হয়তো কম বিপজ্জনক হবেন।’ সূত্র : ডেইলি মেইল, রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন