২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ৩০ হাজার ৯৬০ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন (প্রায় ৩ হাজার ৯৬ কোটি) মার্কিন ডলার বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। চীন ও ভারতের সঙ্গে এ বাণিজ্য ঘাটতি বেশি বলে জানান তিনি।
গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদে সরকারি দলের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ এবাদুল করিমের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব তথ্য জানান। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকে মন্ত্রীদের জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপন করা হয়।তিনি জানান, চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যঘাটতি ১৭ হাজার ৮২৫ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার। দেশটি থেকে আমদানি করা হয় ১৮ হাজার ৫০৯ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। রপ্তানি করা হয় ৬৮৩ দশমিক ৪৩ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। ভারতের সঙ্গে ঘাটতি ১১ হাজার ৬৯৭ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার। আমদানির ১৩ হাজার ৬৮৯ দশমিক ৩০ মিলিয়ন ডলারের বিপরীতে দেশটিতে রপ্তানি করা হয় ১ হাজার ৯৯১ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন ডলার।
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যঘাটতি ১৭ হাজার ৮২৫ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার। দেশটি থেকে আমদানি করা হয় ১৮ হাজার ৫০৯ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। রপ্তানি করা হয় ৬৮৩ দশমিক ৪৩ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। এ ছাড়া অন্যান্য প্রধান বাণিজ্য ঘাটতির দেশ হলো সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, ব্রাজিল, কাতার, সউদী আরব, জাপান, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও পাকিস্তান। ঘাটতি কমাতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন বাণিজ্যমন্ত্রী। সরকারদলীয় সংসদ সদস্য দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, নিত্যপণ্যের মধ্যে একমাত্র আলু উৎপাদন করে দেশের মানুষের চাহিদা পূরণ করা যায়। বাকি অন্য নিত্যপণ্যের চাহিদা পূরণে বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। দিদারুল আলম তাঁর প্রশ্নে দেশে প্রতিবছর কী পরিমাণ চাল, গম, আলু, পেঁয়াজসহ ১০টি নিত্যপণ্য উৎপাদিত হয় এবং চাহিদা পূরণে কোন কোন দেশ থেকে এগুলো আমদানি করতে হয়, তা জানতে চান।
১৮ লাখ ৩৯ হাজার টন খাদ্যশস্য মজুত
সরকারি দলের সংসদ সদস্য আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার জানান, চলতি মাসের ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের সরকারি খাদ্যগুদামে ১৮ লাখ ৩৯ হাজার ৫১৩ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুত আছে। এর মধ্যে ৩ লাখ ৬৮ হাজার ২৭৪ মেট্রিক টন গম, ১৪ লাখ ৭০ হাজার ৩২১ টন চাল ও ১ হাজার ৩৮১ টন ধান।
ভারতের সঙ্গে ঘাটতি ১১ হাজার ৬৯৭ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার। আমদানি ১৩ হাজার ৬৮৯ দশমিক ৩০ মিলিয়ন ডলারের বিপরীতে দেশটিতে রপ্তানি করা হয় ১ হাজার ৯৯১ দশমিক ৩৯ মিলিয়ন ডলার।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৩ লাখ মেট্রিক টন ধান ও ৫ লাখ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারি গুদামে কৃষকদের কাছ থেকে ১ হাজার ৬ মেট্রিক টন ধান ও চালকলমালিকদের কাছ থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার ৯৯০ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে।
এ ছাড়া চলতি অর্থবছরে বৈদেশিক উৎস থেকে ১০ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের। এর মধ্যে জিটুজি পদ্ধতিতে ভারত, ভিয়েতনাম ও মিয়ানমার থেকে ইতিমধ্যে ৭ লাখ ৩০ হাজার টন আমদানির কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। জানুয়ারি পর্যন্ত ৩ লাখ ৭৭ হাজার টন সরকারি সংরক্ষণাগারে পাওয়া গেছে। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, বেসরকারি পর্যায়ে ৪৩১টি প্রতিষ্ঠানকে ১৫ লাখ ৫৭ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন