দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ১০ দিনের কর্মসূচি নিয়েছে বিএনপি। গতকাল শনিবার নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দল ও সহযোগী সংগঠনের এক যৌথসভা শেষে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে- জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকীর দিন ১৯ জানুয়ারি সকাল ১১টায় শেরেবাংলা নগরে তার কবরে ফুল দেবে বিএনপি। বিকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে হবে আলোচনা সভা। তার আগে ১৭ জানুয়ারি মহিলা দল, ২১ জানুয়ারি শ্রমিক দল, ২২ জানুয়ারি মুক্তিযোদ্ধা দল, ২৩ জানুয়ারি কৃষক দল, ২৪ জানুয়ারি যুবদল, ২৬ জানুয়ারি স্বেচ্ছাসেবক দল আলোচনা সভা করবে। ১৮ জানুয়ারি ছাত্রদল চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা এবং উলামা দল মিলাদ মাহফিল, ১৯ জানুয়ারি রাতে ঢাকা মহানগর বিএনপি উত্তর-দক্ষিণ রাজধানীতে শীত বস্ত্র বিতরণ এবং ২০ জানুয়ারি জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাস সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করবে।
১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলীতে জন্মগ্রহণ করেন জিয়াউর রহমান। ১৯৮১ সালের ৩০ মে এক ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানে শাহাদাত বরণ করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান প্রেক্ষিতে জিয়াউর রহমান অত্যন্ত প্রাসঙ্গিকই শুধু নন, তিনি এখন অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একজন নেতা। সেজন্য আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে তার এই জন্মদিনটিকে স্মরণীয় করে রাখবার জন্যে ব্যাপক কর্মসূচি নিয়েছি। যে ব্যক্তি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, যে নেতা আমাদেরকে পথ দেখিয়েছিলেন, আসুন তাকে আমরা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি। আসুন একটা মুক্ত, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ নির্মাণের জন্য, আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের একটা নিরাপদ আবাসস্থল নির্মাণের জন্য, মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার জন্য আমরা এইদিনটি মর্যাদার সাথে পালন করি।
সরকারের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ আমরা করেছিলাম যে চেতনার কথা থেকে, সেই কথাকে তারা বেমালুম গিলে ফেলেছে, ধবংস করে দিয়েছে। সেই চেতনা ছিল একটা মুক্ত সমাজ, একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। সেই লক্ষ্যে আমরা সংগ্রাম করছি। এদেশের মানুষ জেগে উঠেছে। ইতোমধ্যে দেখেছেন, আমাদের প্রায় ১৫ জন নেতাকর্মী শাহাদাত বরণ করেছেন পুলিশের গুলিতে, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী বাহিনীর অত্যাচারে নির্যাতনে। গত ১৫ বছরে আমাদের প্রায় ৬শর অধিক নেতা গুম হয়ে গেছে, সহাস্রাধিক নেতা-কর্মী খুন হয়েছেন, ৩৫-৪০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ফজলুল হক মিলন, মোস্তাক মিয়া, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আবদুল কালাম আজাদ, রফিকুল ইসলাম মাহতাব, শাহ নেছারুল হক, নজরুল ইসলাম তালুকদারসহ কারাবন্দী হাজারো নেতাকর্মীর মুক্তি দাবি করেন।
তিনি বলেন, এই অবস্থার প্রেক্ষিতে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ১০ দফা কর্মসূচি দিয়েছে। এই কর্মসূচি পালনের জন্য গোটা জাতি আজকে নেমে পড়েছে। এই ১০ দফার মাধ্যমে আমরা সত্যিকার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
যৌথ সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আবদুস সালাম আজাদ, কাজী রফিক, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, হেলেন জেরিন খান, মহানগর বিএনপি আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, মুক্তিযোদ্ধা দলের ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাদেক আহমেদ খান, যুব দলের আবদুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, শ্রমিক দলের মোস্তাফিজুল করীম মজুমদার, মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, তাঁতী দলের মনিরুজ্জামান মুনীর, মোস্তফা কামাল, জাহাঙ্গীর আলম, জাসাসের লিয়াকত আলী, জাকির হোসেন রোকন, উলামা দলের মাওলানা আলমগীর হোসাইন, মাওলানা আবুল হোসেন, ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ ও সাইফ মাহমুদ জুয়েল উপস্থিত ছিলেন।#
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন