শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধর্ম দর্শন

আত্মীয়তা-সম্পর্ক রক্ষার গুরুত্ব ও ফজিলত

মুফতি ইমামুদ্দীন সুলতান | প্রকাশের সময় : ১৯ জানুয়ারি, ২০২৩, ১২:০০ এএম

কোন আত্মীয় সম্পর্ক বজায় না রাখলেও তার সাথে সুসম্পর্ক রাখা: অনেক লোককে এমন দেখা যায় যে, কোনো আত্মীয় তার সাথে সম্পর্ক বজায় না রাখলে রাগ করে সে নিজেও সম্পর্ক রাখে না, এটা ঠিক নয়। অন্যথায় সেও সমান অপরাধী। হাদিস শরীফে এসছে, আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার আত্মীয়স্বজন আছেন। আমি তাদের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্বন্ধ রক্ষা করি; কিন্তু তারা আমার সাথে সম্বন্ধ বিচ্ছিন্ন করে রাখে। আমি তাদের উপকার করি; কিন্তু তারা আমার অপকার করে। আমি তাদের সঙ্গে সহনশীলতার ব্যবহার করি আর তারা আমার সঙ্গে মূর্খতার আচরণ করে। তখন তিনি বললেনঃ তুমি যা বললে, যদি প্রকৃত অবস্থা তাই হয় তাহলে তুমি যেন তাদের উপর গরম ছাই নিক্ষেপ করছ। সর্বদা তোমার সঙ্গে আল্লাহর তরফ থেকে তাদের বিপক্ষে একজন সাহায্যকারী (ফেরেশতা) থাকবে, যতক্ষণ তুমি এই অবস্থায় বহাল থাকবে। (মুসলিম-৬২৯৪)
অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন যে, প্রকৃতপক্ষে আত্মীয়তা-সম্পর্ক রক্ষার কৃতিত্ব তারই প্রাপ্য যে অন্য পক্ষ থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করলেও নিজের পক্ষ থেকে তা জোড়া লাগায়। পক্ষান্তরে যার সাথে সম্পর্ক বহাল রয়েছে, তার সাথে সম্পর্ক রক্ষা করলে ব্যাস তা হবে সর্বোচ্চ ভালো সম্পর্কের প্রতিদানে ভালো সম্পর্ক। এটি যদিও আত্মীয়তা-সম্পর্ক রক্ষার মধ্যেই পড়ে কিন্তু যে ব্যক্তি সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছে এমন আত্মীয়দের সাথে সম্পর্ক জুড়বে তার সওয়াব অনেক বেশি এবং তার প্রতিদান অনেক বড়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: ‘ সে আত্মীয়তা-সম্পর্ক রক্ষাকারী নয় যে সম্পর্ক রক্ষার বিনিময়ে সম্পর্ক রক্ষা করে। বরং প্রকৃত আত্মীয়তা-সম্পর্ক রক্ষাকারী সেই, যার সঙ্গে সম্পর্কে ফাটল ধরলে সে তা জোড়া দেয়।’ [বুখারী : ৫৯৯১]
কাফির বা অমুসলিম আত্মীয়ের সাথেও সম্পর্ক বজায় রাখা: আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার বিধান শুধুু মুসলমান আত্মীয়দের ক্ষেত্রে নয়; বরং আত্মীয় চাই হিন্দু,বৌদ্ধ,খৃস্টান বা যে ধর্মেরই হোক না কেন তার সাথেও সুসম্পর্ক বজায় রাখা ও সদাচারণ করা ইসলামের নির্দেশ। আসমা বিনতে আবু বকর রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবদ্দশায় আমার আম্মা মুশরিক থাকতে একবার আমার কাছে আগমন করলেন। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি আমার সাথে সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী, আমি কি আমার আম্মার সাথে সম্পর্ক রাখবো? তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ, তুমি স্বীয় মাতার সাথে সম্পর্ক ঠিক রাখো।’ [বুখারী: ২৬২০; মুসলিম: ২৩৭২] আল্লাহ আমাদের বোঝার ও আমল করার তাওফীক দান করুক!

লেখক: মুহাদ্দিস-জামিয়া ইমদাদিয়া আরাবিয়া শেখেরচর,নরসিংদী

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন