বিনোদন ডেস্ক : আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সভ্যতা, সংস্কৃতি ও প্রতœনিদর্শন সমৃদ্ধ এবং পর্যটন ও অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে গিয়ে ইত্যাদির মূল অনুষ্ঠান ধারণ করা হচ্ছে দীর্ঘদিন থেকেই। ইত্যাদির এই দেশ পরিক্রমার ধারাবাহিকতায় এবারের পর্ব ধারণ করা হয়েছে উত্তরাঞ্চলের প্রাচীন জেলা ও সীমান্তবর্তী শহর দিনাজপুরে। গত ১৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠানটি ধারণ করা হয় দিনাজপুরের অত্যন্ত প্রাচীন ও ঐতিহাসিক কুঠিবাড়ির সামনে, যা বর্তমানে বিজিবি সেক্টর হেডকোয়ার্টার। ইত্যাদির ধারণ উপলক্ষে সেদিন দিনাজপুরে ছিল উৎসবের আমেজ। বর্ণিল আলোয় সাজানো এই কুঠিবাড়িতে ইত্যাদির ধারণ অনুষ্ঠান চলে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত। হাজার হাজার দর্শক প্রচÐ শীতের মধ্যেও খোলা মাঠে দীর্ঘ সময় কেউবা বসে, কেউ দাঁড়িয়ে মন্ত্রমুগ্ধের মত উপভোগ করেছে ইত্যাদির নান্দনিক সব পর্ব। এবারের পর্বে দিনাজপুরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে রয়েছে একটি তথ্যসমৃদ্ধ প্রতিবেদন। ঢাকা জেলার ধামরাইয়ের এক দৃষ্টান্তস্বরূপ শিক্ষা তাপস নরেশ চন্দ্র অধিকারীর উপর রয়েছে একটি শিক্ষামূলক প্রতিবেদন। রয়েছে গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম তিতাসের উপর একটি সচেতনতামূলক প্রতিবেদন। রয়েছে কক্সবাজার সদর উপজেলার পোকখালী ইউনিয়নের জান্নাতুল বকেয়া মামুণি’র উপর একটি উদ্বুদ্ধকরণ প্রতিবেদন। এরই মধ্যে যে মেয়েটি নেতৃত্বদান, নিয়মানুবর্তিতা, দরিদ্রবান্ধব কর্মসূচিসহ নানা কাজে হয়ে উঠেছে আদর্শস্থানীয়া। দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলার জন্মান্ধ ভ্যানচালক মহাসিন আলী ও তার পরিবারের উপর রয়েছে একটি মানবিক প্রতিবেদন। এছাড়াও রয়েছে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের ফেসবুক ফ্যান পেজের উপর একটি আকর্ষণীয় পর্ব। এ উপলক্ষে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া বার্নিকাটের সঙ্গে রয়েছে হানিফ সংকেতের একটি ভিন্নধর্মী সাক্ষাৎকার। এবারের বিদেশী প্রতিবেদন করা হয়েছে তুরস্কের বসফরাস সেতুর উপর। এবারের ইত্যাদিতে মূল গান রয়েছে একটি। বিজয়ের মাস উপলক্ষে রয়েছে একটি দেশাত্মবোধক গান। গানটি লিখেছেন মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান, সুর করেছেন আলী আকবর রুপু, গেয়েছেন শিল্পী অ্যান্ড্রু কিশোর। এছাড়াও ইত্যাদি নির্মিত এবং ইত্যাদিতে প্রচারিত একটি জনপ্রিয় দেশের গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেছেন দিনাজপুরের অর্ধশতাধিক স্থানীয় নৃত্য শিল্পী। এবারে দিনাজপুর ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ’কে ঘিরে করা প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে হাজার হাজার দর্শকের মাঝখান থেকে ৪ জন দর্শক নির্বাচন করা হয়। ২য় পর্বে একটি নাট্যাংশে তারা অভিনয় করেন। যা ছিল বেশ উপভোগ্য। দীর্ঘদিন পর শিল্পী আরিফুল হককে এবার দেখা যাবে ইত্যাদির পর্দায়। উল্লেখ্য দীর্ঘদিন থেকেই তিনি বিদেশে অবস্থান করছেন এবং কয়েক বছর পরপর বাংলাদেশে আসেন। প্রতিবারই ইত্যাদির মাধ্যমে দর্শকরা এই জনপ্রিয় শিল্পীর অভিনয় দেখতে পান। এবারও দেশে এসে স্বল্প সময় অবস্থান করলেও তিনি তার প্রিয় ইত্যাদিতে অভিনয় করেছেন। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর খ্যাতিমান অভিনেতা মাসুদ আলী খানও আবার প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেন ইত্যাদির এবারের একটি পর্বে। নিয়মিত পর্ব হিসেবে এবারও রয়েছে যথারীতি মামা-ভাগ্নে, নানী-নাতি ও চিঠিপত্র বিভাগ। রয়েছে বিভিন্ন সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে বেশ কিছু সরস ও তীক্ষè নাট্যাংশ। বনভোজনে যুগের হাওয়া, অচেতন ব্যক্তির সচেতনতা, দায়িত্বজ্ঞান, প্রত্যাশার বিপরীত প্রাপ্তি, অশিক্ষার কুফল, একাল ও সেকালের কথা, চামচা হইতে সাবধানসহ বিভিন্ন সাম্প্রতিক বিষয়ের উপর রয়েছে বেশ কয়েকটি নাট্যাংশ। বরাবরের মত এবারও ইত্যাদির শিল্প নির্দেশনা ও মঞ্চ পরিকল্পনায় ছিলেন ইত্যাদির নিয়মিত শিল্প নির্দেশক মুকিমুল আনোয়ার মুকিম। সব শ্রেণিপেশার মানুষের প্রিয় অনুষ্ঠান ইত্যাদির আগামী পর্ব একযোগে বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে-এ প্রচারিত হবে ৩০ ডিসেম্বর, শুক্রবার রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর। ইত্যাদির রচনা, পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেছেন হানিফ সংকেত। নির্মাণ করেছে ফাগুন অডিও ভিশন। ইত্যাদি স্পন্সর করেছে যথারীতি কেয়া কস্মেটিকস্ লিমিটেড।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন