সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কনিষ্ঠপুত্র আরাফাত রহমান কোকো মৃত্যুবরণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আরাফাত রহমান কোকো একটি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হয়েও তিনি নিজে রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন না। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে তাকে যে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে সেই মৃত্যুবরণে রাজনৈতিক প্রতিহিংসাই সবচেয়ে বড় কারণ হয়েছিলো।
গতকাল মঙ্গলবার আরাফাত রহমান কোকোর ৮ম মৃত্যুবার্ষিকীতে বনানীতে তার কবরে পুস্পমাল্য অর্পন করে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
সকালে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা ফাতেহা পাঠ করে কবরে পুস্পমাল্য অপর্ণ করে শ্রদ্ধা জানায়। তারা মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।
এ সময়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, জয়নুল আবদিন ফারুক, কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, নাজিম উদ্দিন আলম, মীর নেওয়াজ আলী, রফিক শিকদার, তাবিথ আউয়াল মহানগর দক্ষিনের নবী উল্লাহ নবী, যুব দলের মামুন হাসান, মোনায়েম মুন্না, শফিকুল ইসলাম মিল্টনসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
মির্জা ফখরুল বলেন, এদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে কলংকময় ১/১১ ‘র ঘটনার পরে আরাফাত রহমান কোকোকে গ্রেফতার করা হয় মিথ্যা মামলায়, মিথ্যা অজুহাতে, পরে তাকে নির্বাসিত করা হয়।আমরা দেখেছি যে, করুন অবস্থায় তাকে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে, বিদেশের মাটিতে ভালো চিকিতসা না পেয়ে তাকে চলে যেতে হয়েছে। আমরা দেখেছি যে, লাখ লাখ মানুষ তার জানাজায় শরিক হতে রাজপথে নেমে এসেছিলো। আমরা তার রুহের মাগফেরাত কামনা করছি।মহান করুনাময় আল্লাহ‘তালার কাছে এই দোয়া করছি তিনি যেন তাকে বেহেস্তে নসিব করেন।
তিনি বলেন, আরাফাত রহমান কোকো একজন অসাধারণ ক্রীড়া সংগঠক ছিলেন। তিনি নিজে খেলাধুলা করতেন এবং খেলাধুলার সঙ্গে যুক্ত থাকতেন। বাংলাদেশের ক্রিকেট আজকে যে জায়গায় এসেছে এর প্রধান নায়ক ছিলেন আরাফাত রহমান কোকো। তিনি ক্রিকেটকে সংগঠিত করবার জন্য, প্রতিষ্ঠিত করবার জন্য, মাননোন্নয়ন করবার জন্য, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে যাবার জন্য তিনি তার অবদান রেখেছে। তিনি এদেশে একজন ক্রীড়ামোদী হিসেবে ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে এদেশের মানুষের কাছে স্মরণীয় হয়ে আছেন।
২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে মারা যান কোকো। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৪৫ বছর। ১/১১ সেনা সমর্থিত সরকারের আমলে জরুরী অবস্থার সময়ে গ্রেফতার হন কোকো। ২০০৮ সালে উচ্চ আদালতের জামিনে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে যান তিনি। সেখান থেকে মালয়েশিয়ায় যান।
নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আরাফাত রহমান কোকোর স্মরণে দুপুরে এবং বিকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল হয়। সারাদেশে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলো আরাফাত রহমান কোকোর স্মরণে মিলাদ মাহফিলে ও দোয়া অনুষ্ঠান করেন।
ইউট্যাবের শ্রদ্ধাঞ্জলি: গতকাল বিকেলে কোকোর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)। ইউট্যাবের মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খানের নেতৃত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. মো. নুরুল ইসলাম, অধ্যাপক আনিসুর রহমান, অধ্যাপক ড. আবু জাফর, খান মো. মনোয়ারুল ইসলাম শিমুল, প্রকৌশলী মো. হানিফ প্রমুখ।
জেডআরএফ: আরাফাত রহমান কোকোর কবরে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের নেতৃত্বে শ্রদ্ধা জানানোর সময় উপস্থিত ছিলেন- অধ্যাপক মো. ড. মোর্শেদ হাসান খান, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, ব্যারিস্টার ইজাজ কবির, প্রকৌশলী মেহেদী হাসান সোহেল, আসিফ হোসেন রচি প্রমুখ।
মিডিয়া সেলের শ্রদ্ধা: এছাড়া কোকোর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছে বিএনপির মিডিয়া সেল। পরে মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মুনাজাত করা হয়। এসময় মিডিয়া সেলের জহির উদ্দিন স্বপন, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান, শাম্মী আখতার, ব্যারিস্টার মীর হেলাল, আতিকুর রহমান রুমন, শায়রুল কবির খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
দোয়া মাহফিল: এদিকে আরাফাত রহমান কোকোর স্মরণে গতকাল দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দোয়া মাহফিলে দলের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। একইভাবে সারাদেশে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলো আরাফাত রহমান কোকোর স্মরণে মিলাদ মাহফিলে ও দোয়া অনুষ্ঠান করেছে।
কোকোর মৃত্যু হয়েছে
রাজনৈতিক প্রতিহিংসায়
ইনকিলাব ডেস্ক : গতকাল ছিল শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। আমাদের ব্যুরো, জেলা ও উপজেলা সংবাদদাতাদের তথ্যেরভিত্তিতে করা প্রতিবেদন :
খুলনা ব্যুরো জানায় : খুলনা বিএনপি নেতৃবৃন্দ বলেছেন, আরাফাত রহমান কোকো রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হলেও তিনি রাজনীতিবিদ ছিলেন না। কিন্তু রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই তাকে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কেডি ঘোষ রোডস্থ বিএনপি কার্যালয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
বক্তারা আরো বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং বেগম খালেদা জিয়ার সন্তান হওয়ায় ১/১১ এরপর কোকোর ওপর যে নির্যাতন করা হয়েছিল- সেই নির্যাতন ছিল অমানবিক। ওই সময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকেও নির্যাতন করা হয়েছিল। বাংলাদেশে ক্রিকেটের মানোন্নয়নের জন্য আরাফাত রহমান কোকো কাজ করেছেন। খুলনা মহানগর বিএনপির আহবায়ক অ্যাড. শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে ও মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহবায়ক আমির এজাজ খান, জেলা সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পি, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আবু হোসেন বাবু, স ম আব্দুর রহমান, শের আলম সান্টু, আবুল কালাম জিয়া, বদরুল আনাম খান, চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন, একরামুল হক হেলাল, শেখ সাদী, এনামুল হক সজল, শেক জাহিদুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক, তানভীরুল আজম, শাহিনুল ইসলাম পাখি, মনিরুজ্জামান লেলিন, হাবিবুর রহমান বিশ্বাস, গাজী আফসার উদ্দিন, আনসার আলী, নাসির খান। দোয়া মাহফিল শেষে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করেন মহানগর বিএনপি নেতৃবৃন্দ।
বগুড়া ব্যুরো জানান Ñআরাফাত রহমান কোকো ষ্মৃতি পরিষদ যুক্তরাজ্য শাখার উদ্যোগে গতকাল মঙ্গলবার বগুড়ার বায়তুর রহমান সেন্ট্রাল মসজিদে বাদ আসর দোয়া মাহফিল ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশা, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির
সদস্য ভিপি সাইফুল ইসলাম, জয়নাল আবেদীন চাঁন, জেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক অ্যাড. এ কে এম সাইফুল ইসলাম। এছাড়া পরিবারের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ আমিনুল হক দেওয়ান সজল, সাইদুজ্জামান শাকিল, জেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক রাকিবুল ইসলাম শুভ, সৈয়দ আব্দুল গফুর দারা, এ্যাডঃ আব্দুল্লাহেল বাকী লিপন, আল আমিন সরকার,উজ্জল হোসেন প্রমুখ। মোনাজাত পরিচালনা করেন, বায়তুর রহমান সেন্ট্রাল মসজিদের পেশ ইমাম মাও. আব্দুল্লাহ।
পঞ্চগড় জেলা সংবাদদাতা জানান - ক্রীড়া সংগঠক আরাফাত রহমান কোকোর ৮ম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পঞ্চগড় জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালে প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার মুহম্মদ নওশাদ জমির অংশ নেয়। জেলা বিএনপির আহবায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চুর সভাপতিত্বে, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আবু দাউদ প্রধান,অ্যাড.আদম সুফী, অ্যাড. নাজমুল ইসলাম কাজল, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান বাবু, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল কাদের মাসুম, সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মানিকসহ বিএনপি ও এর সহযোগী অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
গাবতলী (বগুড়া) উপজেলা সংবাদদাতা জানান : বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বগুড়ার গাবতলী নশিপুরের বাগবাড়ীতে স্থানীয় হাফেজিয়া মাদরাসায় আলোচনা শেষে মোনাজাত করা হয়। আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি সংসদ, যুক্তরাজ্য শাখার আয়োজনে নশিপুর ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপির নেতা রাজ্জাকুল আমিন রোকন তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং উপজেলা যুবদলের আহবায়ক আরিফুর রহমান মজনুর সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা যুবদলের আহবায়ক খাদেমুল ইসলাম খাদেম। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম সিদ্দিকী রিগ্যান, উপজেলা বিএনপির ক্ষুদ্র ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, শহর যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৌরভ হাসান ও তারিক মজিদ সোহাগ, জেলা ছাত্রদলের দফতর সম্পাদক মিল্লাত হোসেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন