সাম্প্রতিক সুইডেনে ও ডেনমার্কে যেভাবে ঘোষণা দিয়ে পবিত্র কুরআনে অগ্নিসংযোগ করে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের বিশ্বাস ও শ্রদ্ধার প্রতি আঘাত করা হয়েছে তা অকল্পনীয়। কোন সভ্য সমাজে এই ধরণের আচরণ চিন্তাও করা যায় না। সুইডেনে ও ডেনমার্কে যা হয়েছে আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। সুইডেন ও ডেনমার্কে কোরআন অবমাননা মাধ্যমে ইসলামের সাথে পশ্চিমাদের আচরনে এটা দিবালোকের ন্যায় প্রমাণিত হয়েছে যে, ইউরোপ আজো মধ্যযুগীয় সংকীর্ণ চিন্তা থেকে বের হতে পারেনি।সুতরাং বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি যে, সুইডেন ও ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জোড়ালো প্রতিবাদ জানাতে হবে। ২০২৩-এর মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তকে জনগণের বোধ-বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও জাতীয় স্বার্থকে উপেক্ষা করে সাম্প্রদায়িক উষ্কানি, তথ্য ও ইতিহাস বিকৃতি, বিতর্কিত ও অবৈজ্ঞানিক মানব সৃষ্টিতত্ত্ব অনুপ্রবেশ, ট্রান্সজেন্ডার, পৌত্তলিক ও ব্রাহ্মণ্যবাদী সংস্কৃতির আধিপত্য, ইসলামকে ভিনদেশি সাব্যস্ত করা এবং প্লেজারিজমের মত নিন্দনীয় কাজের আশ্রয় নেয়া হয়েছে; যা জাতি হিসাবে আমাদের জন্য উদ্বেগ ও হতাশার।
আজ শুক্রবার বিকাল ৩টায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অংশ হিসেবে খুলনা নগরীর নিউমার্কেট এলাকার বায়তুন নুর চত্বরে দলের খুলনা মহানগর ও জেলা কমিটি কর্তৃক আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। সংগঠনের জেলা সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল্লাহ ইমরান এর সভাপতিত্বে ও নগর সেক্রেটারি মুফতি ইমরান হুসাইন ও জেলা সেক্রেটারি হাফেজ আসাদুল্লাহ গালিবের পরিচালনায় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে বক্তরা বলেন, বর্তমান পাঠ্যবইয়ে সুলতানি আমলের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে।বাংলার ইসলামী পরিচয়কে আড়াল করা,প্রকৃতিবিরুদ্ধ ও দেশীয় সংষ্কৃতি বিরোধী ট্রান্সজেন্ডার প্রমোটসহ বিতর্কিত ও অবৈজ্ঞানিক বিবর্তনবাদকে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে।ধর্মীয় স্বাতন্ত্রতাকে বিলীন করে দেয়ার অপচেষ্টাও কমতি করা হয়নি, সেই সাথে প্লেজারিজম বা চৌর্যবৃত্তির আশ্রয় নেয়া,তথ্য ও বানানগত ভুল এবং ভাষাগত আগ্রাসন ছয়লাপ এই পুস্তক।
সার্বিক পর্যালোচনায় এমন বহু বিষয় আছে যা এদেশের মানুষের বোধ-বিশ্বাস, সামাজিক পুঁজির সাথে সাংঘর্ষিক। বিজ্ঞানের নামে বিজ্ঞান অসমর্থিত বিষয় পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এই অঞ্চলের ইতিহাসের একটি ভুল ও মিথ্যা বর্ণনা দেয়া হয়েছে; যার ভিত্তি আমাদের কাছে মনে হয়েছে ধর্ম নিরপেক্ষতার আড়ালে ব্রাহ্মণ্যবাদী, হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক এজেন্ডা। কারণ এই অঞ্চলে ইসলাম ও মুসলমানদের উপনিবেশিক ও আগ্রাসী শক্তি আকারে দেখানো হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠার পূর্বশর্ত। আমাদের পাঠ্যবইয়েও এই কাজ করা হয়েছে।
অতএব ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনে করে, এই বই সংশোধন না বরং বাতিল করতে হবে। এবং সত্যনিষ্ঠ শিক্ষাবিদ ও উলামাদের সমন্বয়ে নতুন করে বই লিখতে হবে। একই সাথে এই বই রচনার সাথে জড়িতদের ভিন্ন কোন রাজনৈতিক দূরভিসন্ধি আছে কিনা তা খুঁজে বের করতে হবে এবং তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দলের নগর সহ সভাপতি মুফতি আমানউল্লাহ, শেখ মোঃ নাসির উদ্দিন, শেখ হাসান ওবায়দুল করিম, মোঃ আবু গালিব, মাওলানা দ্বীন ইসলাম,মাওলান শায়খুল ইসলাম বিন হাসান, মাওলানা সাইফুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল নোমান, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, মুফতী আশরাফুল ইসলাম, মাওলানা আব্বাস আমীন, মোঃ হুমায়ুন কবির, মুফতী আমিরুল ইসলাম, আলহাজ্ব আবুল কাশেম, মোঃ নিজাম উদ্দিন মল্লিক, এ্যাডঃ কামাল হোসেন, মুফতী ইলিয়াস মাঞ্জুরী, আলহাজ্ব শফিউল ইসলাম, বীরমুক্তিযোদ্ধা জিএম কিবরিয়া,আলহাজ্ব সরোয়ার বন্ধ, আলহাজ্ব আব্দুস সালাম, হাফেজ আব্দুল লতিফ, মোল্লা রবিউল ইসলাম, মোঃ শাহিন হোসেন, এইচ এম আরিফুল ইসলাম, গাজী ফেরদাউস সুমন, মুফতী মইনুল ইসলাম, মাষ্টার মঈনুদ্দিন ভুইঁয়া, মাওলানা হাফিজুর রহমান, আবুল কালাম আজাদ,আলহাজ্ব মারুফ হোসেন,হাফেজ খায়রুল ইসলাম, ক্বারী জামাল হেসেন, কাজী তোফায়েল হোসেন, যুবনেতা মুফতী আবদুর রহমান মিয়াজী, মাওলানা ফজলুল হক, মোঃ আব্দুর রশিদ, নাজমুল খালিদ সাইফুল্লাহ্,ছাত্রনেতা আবু রায়হান,মোঃ মইনুদ্দিন, মাহাদী হাসান মুন্না, নাঈম ইসলাম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন