শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

২০২৩ সালের পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদেরকে স্বজাতির প্রতি বিদ্বেষী করে তুলবে -পীর সাহেব চরমোনাই

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ৭:৩৫ পিএম

২০২৩ সালের পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদেরকে স্বজাতির প্রতি বিদ্বেষী করে তুলবে বলে মনে করছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর আমীর আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই)। তিনি বলেন, পাঠ্যপুস্তকে যেমন মুসলিম ইতিহাস ও স্বাধীনতা আন্দোলনের বিকৃতি ঘটানো হয়েছে, তেমনি শিশুদের মনে গেঁথে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বিকৃত মানসিকতা। পাশাপাশি বই পুস্তকের মধ্যে ভিনদেশী সংস্কৃতি ও মূর্তি, প্যাগোডা, মন্দির ইত্যাদির ছবি দিয়ে ভরপুর করে রাখা হয়েছে। শিশুরা এসব বই পড়ে ভালো মানসিকতা শেখার বদলে শিখবে ইসলাম বিদ্বেষ, ধর্মহীন জীবন যাপন। ফলে মুসলমি প্রধান এদেশের সন্তানেরা দেশ প্রেমিক হবে না বরং স্বজাতির প্রতি বিদ্বেষ ছড়ানোর মনোভাব তৈরি হবে।

আজ ১০ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার রাজধানীর খামারবাড়িস্থ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত নগর সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, শিক্ষার্থীদের বইয়ের মধ্যে আমাদের দেশীয় সংস্কৃতির ছবি দেয়ার কথা। যেমন কভার পেইজগুলোতে আমাদের দেশের পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, টানেল এসব ছবি দিয়ে স্বজাতির প্রতি আরও আগ্রহী করার কথা ছিল। যাতে সাধারণ মানুষের দেশের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হয়। তা না করে শিশুদের বাদরামী শিখানোর কৌশল করা হয়েছে। তিনি বলেন, যে দেশে আযানের শব্দে বাচ্চাদের ঘুম ভাঙ্গে এবং ঘরে ফেরে, জুম্মার দিনে মসজিদে জায়গা হয় না। সেই দেশে কোথা থেকে বানর জাত এসে আজকে মুসলমানদের ঈমান ধ্বংস করার পায়তাঁরা করছে। আমরা প্রতিবাদ না করে বসে বসে তা দেখবো- এটা হতে পারে না।

শিক্ষামন্ত্রীর কথা উল্লেখ করে মুফতি সৈয়দ রেজাউল করিম বলেন, শিক্ষামন্ত্রীর কথায় কোন লাগাম নেই। কোন জ্ঞানমূলক কথা তার মুখ থেকে আসে না। এর আগে বলছে বইয়ে কোন ভুল নাই। এখন জাতির কাছে স্বীকার করছে ভুল আছে। বারবার তার কথায় মিথ্যা প্রমাণিত। আপনি কিভাবে একটি দেশের শিক্ষামন্ত্রী হন? তিনি বলেন, যে দেশে শিক্ষামন্ত্রীর অবস্থা এই হয়। সে দেশের মানুষ ধ্বংসের পথেই যাবে এটাই তো বাস্তবতা। ধিক্কার জানাই যারা বর্তমান এই সিলেবাস তৈরি এবং বাস্তবায়নে কাজ করেছেন। আমাদেরকে এর প্রতিবাদ জানাতে হবে। এর পরিবর্তন করে ধর্মীয় ইসলামী শিক্ষা সর্বত্র বাস্তবায়ন করতেই হবে।

ইসলামী আন্দোলনের আমীর বলেন, দেশের মানুষের বাক-স্বাধীনতা নেই। ন্যায়ের পথে কথা বলার কোন অবস্থা নেই। আমরা আজ নিষ্পেষিত। নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের দাম যেভাবে লাগামহীন পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটছে। মানুষ না খেয়ে অর্ধাহারে দিন যাপন করছে। এটা সহ্য করা যায় না। তিনি বলেন, দেশে কিছু মধ্যস্বত্ত্বভোগী, কিছু দুষ্টু প্রকৃতির ব্যবসায়ীদের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু এটা সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। তাহলে বুঝতে হবে সরকারের দায়িত্বশীল জায়গায় দুর্নীতিবাজরা বসে থাকার কারণেই তারা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। এই পরিস্থিতি সরকারকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

সম্মেলনে ঢাকা মহানগর উত্তরের ২০২১-২০২২ সেশনের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে ২০২৩-২০২৪ এর নতুন কমিটি ঘোষণা করেন। এতে সভাপতি হিসেবে অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, সহ সভাপতি হিসেবে আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন ও সেক্রেটারী হিসেবে মাওলানা আরিফুল ইসলাম এর নাম ঘোষণা করেন এবং তাদের শপথ বাক্য পাঠ করান।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ এর সভাপতিত্বে অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব প্রকৌশলী আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ ইমতিয়াজ আলম, ঢাকা মহানগর উত্তরের সহ-সভাপতি মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, সেক্রেটারী মাওলানা মো: অরিফুল ইসলাম, জয়েন্ট সেক্রেটারী মাওলানা মো: নুরুল ইসলাম নাঈম, সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোঃ মুরাদ হোসেন সহ আরও অনেকে।
সম্মেলনের সঞ্চালক মাওলানা আরিফুল ইসলাম সরকারের প্রতি ৮ দফা দাবী তুলে ধরেন। তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে হতাহতদের প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে সমবেদনা পেশ, ডেনমার্ক ও সুইডেনে কুরআন অবমাননার প্রতিবাদে নিন্দা প্রস্তাব ও বাংলাদেশে নিযুক্ত উভয় দেশের রাষ্ট্রদূতকে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো, দেশ বিরোধী পাঠ্য পুস্তক প্রত্যাহার, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, ঢাকাকে বসবাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত, নাগরিকদের স্বাস্থ্য সেবা ও সুরক্ষা নিশ্চিত, বিভিন্ন অযুহাতে আটককৃত নিরপরাধ আলেমদের মুক্তি, আসন্ন মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানানো হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন