ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল মহানগর সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষনে দলীয় আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেছেন, শিক্ষা সিলেবাসের অসঙ্গতি, ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে আমাদের ধারাবাহিক আন্দোলন শিক্ষা মন্ত্রী ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে মিথ্যা সাব্যস্ত করার চেষ্টা করলেও এখন তিনিই মিথ্যুক প্রমাণিত হয়েছেন। অতএব শিক্ষামন্ত্রী এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকতে পারেন না। পীর ছাহেব অবিলম্বে বিতর্কিত শিক্ষা সিলেবাস বাতিল করে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নেরও দাবী জানান। যেখানে সকল ধরনের শিক্ষক ও বিজ্ঞ আলেমগণকে আন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
সম্মেলনে সভাপতির ভাষনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম দাবী করেন। তিনি বলেন, ২০২৩-এর মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যপুস্তকে জনগণের বোধ-বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও জাতীয় স্বার্থকে উপেক্ষা করে সাম্প্রদায়িক উষ্কানি, তথ্য ও ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে। বিতর্কিত ও অবৈজ্ঞানিক মানব সৃষ্টিতত্ত্ব অনুপ্রবেশ, ট্রান্সজেন্ডার, পৌত্তলিক ও ব্রাহ্মণ্যবাদী সংস্কৃতির আধিপত্য, ইসলামকে ভিনদেশি সাব্যস্ত করা এবং প্লেজারিজমের মত নিন্দনীয় কাজের আশ্রয় নেয়া হয়েছে। যা জাতি হিসাবে আমাদের জন্য উদ্বেগ ও হতাশার।তিনি বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পাঠ্য পুস্তকের বিকৃতি ঘটানো ও ইতিহাস থেকে মুসলমানদেরকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলার প্রচলিত ইতিহাসের বিরুদ্ধে গিয়ে পাঠ্যপুস্তকে প্রতিবেশী, ব্রাহ্মণ্যবাদীদের সুরে সুর মিলিয়ে মুসলিম শাসনকে দখলদারিত্ব ও উপনিবেশিক শাসন বলা হয়েছে। ইতিহাসে খ্যাত স্বাধীন সুলতানি আমল ও বারো ভুঁইয়াদের গৌরবময় ইতিহাসকেও অস্বীকার করা হয়েছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জোড়ালোভাবে এর প্রতিবাদ জানাচ্ছে ।তিনি বলেন, আমরা সুস্পষ্টভাবে জানাতে চাই, বাংলা একটি রাজনৈতিক একক ভূখন্ড হিসেবে গড়ে উঠেছে মুসলামানদের হাতে এবং বাংলা ভাষার আশ্রয় ও বিকাশও হয়েছে মুসলমানদের হাতে, এটা ইতিহাসের সত্য ঘটনা। এই ঘটনার বাইরে গিয়ে বিদেশী উদ্দেশ্য প্রনোদিত কোন মিথ্যা ইতিহাস বাংলাদেশে চলতে দেয়া যায় না। একই সাথে তিনি পাঠ্য পুস্তকের এই মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত বিকৃতি যারা আমাদের শিশুদের পাঠ্যপুস্তকে সংযুক্ত করেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনারও দাবী জানান।
সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মুফতী সৈয়দ এছহাক মুহাম্মাদ আবুল খায়ের, কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মাওলানা ওবাইদুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বরিশাল মহানগর সেক্রেটারী মাওলানা সৈয়দ নাসির আহমেদ কাওছার সহ বিভিনন্ নেতৃবৃন্দ।
সম্মেলন শেষে ২০২৩-২৪ সেশনের জন্য মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীমকে সভাপতি, মাওলানা সৈয়দ নাছির আহমেদ কাওছারকে সহ-সভাপতি ও অধ্যাপক মাওলানা জাকারিয়া হামিদীকে সম্পাদক মনোনিত করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন