আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচির নামে সন্ত্রাসকে উসকে দিয়ে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির পায়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে সব জায়গায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে, সন্ত্রাসকে তারা উস্কে দিচ্ছে। পাল্টা কর্মসূচি যে রাজনৈতিক দল দেয় এটা বুঝতে হবে তারা একদম দেউলিয়া হয়ে গেছে। তাদের আসলে শক্তি শূণ্যের কোঠায়। ভয়ে ভীত হয়ে তারা পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে। এটা কোনো মতে সাধারণ মানুষ গ্রহণ করে না।
গতকাল রোববার গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে গত শনিবার সারাদেশ ইউনিয়ন পর্যায়ের পদযাত্রায় বিভিন্ন স্থানে হামলার ঘটনা তুলে ধরে তিনি এসব অভিযোগ করেন। খন্দকার মোশাররফ বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) অন্যদিন কর্মসূচি পালন করুক। আমরা যেদিন কর্মসূচি ঘোষণা করব সেদিনই তাদেরকে কর্মসূচি দিতে হবে কেনো? এটার মাধ্যমেই প্রমাণিত হয় যে, এই সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের অর্থনৈতিক ব্যর্থতা, তাদের রাজনীতিতে গণতন্ত্রকে হত্যা, সমাজিক অব্যবস্থা, দ্রব্যমূল্যের ঊধর্বগতি সব কিছুতে আজকে দিশেহারা হয়েছে তারা দেশে একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য এই পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের দাবিগুলো কি ছিলো? শনিবার সারাদেশে পদযাত্রা কর্মসূচি ছিলো তার দাবিগুলো হচ্ছে- গ্যাস, বিদ্যুৎ, চাল, ডাল, আটাসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, সার-ডিজেলসহ কৃষি উপকরণের লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগ। এগুলো বিএনপির কোনো দাবি নয়, এগুলো দেশের জনগণের দাবি। সেই জনগণের দাবি দিয়ে আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে আছি। সরকার আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে যেভাবে বাধা দিচ্ছে তা জনগণ গ্রহন করে না।
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা কিছুদিন যাবৎ খেয়াল করছি যে, আওয়ামী লীগ শান্তি মিছিল, শান্তি সমাবেশ করছে। কখন? যেদিনে আমরা সমাবেশ করবো তখন। আমি আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে বলতে চাই, আপনারা কয়েকদিন আগে বলেছেন যে, বছর ব্যাপী নির্বাচনের আগ পর্যন্ত কর্মসূচি দিয়ে যাবেন। আমি আপনাদের অনুরোধ জানাব আপনাদের কর্মসূচিগুলো এখনই ঘোষণা দিয়ে দেন- কোনদিন কোন কর্মসূচি হবে। তাহলে আমরা পরবর্তিতে আমাদের কর্মসূচিগুলো নিরাপদ জায়গা, নিরাপদ স্থানে শান্তিপূর্ণভাবে করতে পারি। কিন্তু আমরা কর্মসূচি ঘোষণার পরে আওয়ামী লীগ যদি কর্মসিূচি দেয় বুঝেই নিতে হবে তারা ইচ্ছাকৃতভাবে দেশে একটা গন্ডোগোল লাগানোর চেষ্টা করছে।
নরসিংদীর পলাশে তার ইউনিয়নের পথযাত্রা কর্মসূচিতে পুলিশি বাধা প্রদানের ঘটনা তুলে ধরে স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেন, আমি স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, এভাবে হামলা করে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে এই সরকার বাধাগ্রস্থ করতে পারবে না। বাংলাদেশের মানুষ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবেই।
সংবাদ সম্মেলনে সিরাজগঞ্জ, জামালপুর, ফেনী, নওগাঁ, কুষ্টিয়া, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, মানিকগঞ্জ, নোয়াখালী, ঝালকাঠি, গাজীপুর, চট্টগ্রাম, নেত্রকোনা, বরগুনা, বাগেরহাট, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঠাকুরগাঁও, নাটোর, টাঙ্গাইল, চাঁদপুর, ময়মনসিংহ, ভোলা, বরিশাল, খুলনা, লক্ষীপুর, নরসিংদী, মাগুরা, যশোর, রাজশাহী, নারায়নগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, ঢাকা, পঞ্চগড়, কক্সবাজার, পাবনা, রংপুর, লালমনিরহাট, কুমিল্লা, নড়াইলসহ বিভিন্ন জেলার ইউনিয়ন পদযাত্রা আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী ও পুলিশি হামলায় ঘটনার চিত্র তুলে ধরেন খন্দকার মোশাররফ।
এইসব হামলার ঘটনা অসংখ্য নেতা-কর্মী দুই শতাধিক গ্রেফতার, পাঁচ শতাধিক আহত, তাদের বাড়িঘর-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
খন্দকার মোশাররফ নানা প্রতিবন্ধকতার পরেও সারাদেশে ইউনিয়ন পদযাত্রায় ব্যাপক লোক সমাগমে সফল করায় দেশবাসীকে অভিনন্দন জানান খন্দকার মোশাররফ।
সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু ও ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স উপস্থিত ছিলেন।###
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন