পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহন ধূমপানমুক্ত করার মাধ্যমে জনগণকে পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতিকর দিক হতে রক্ষা করতে সকল পরিবহন শ্রমিক সংগঠনদের ঐকান্তিক সহযোগিতাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বক্তারা। তারা বলেন পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহন শতভাগ ধূমপানমুক্ত হলে জনগণ উপকৃত হবে। মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারী) বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ডেভলপমেন্ট এ্যাক্টিভিটিস অব সোসাইটি-ডাস্ ও বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট-বাটা’র যৌথ আয়োজনে এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন ও দাতা সংস্থা দি ইউনিয়নের যৌথ সহযোগিতায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্বাধীনতা হলে নৌ ও সড়ক পরিবহণ সংশ্লিষ্টদের সাথে “তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে করণীয়”- শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ডাস্’র টীম লীডার আমিনুল ইসলাম বকুল এর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন এর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান, এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন এর সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ওসমান আলী। ডাস’র সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মোয়াজ্জেম হোসেন টিপু’র সঞ্চালনায় সভায় আরে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট’র ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী হেলাল আহমেদ, নাটাব এর প্রকল্প সমন্বয়কারী একেএম খলিলউল্লাহ, টিসিআরসি’র প্রোজেক্ট ম্যানেজার ফারহানা জামান লিজা প্রমুখ। ডাস্’র পলিসি এনালিস্ট জনাব আসরার হাবীব নিপু সভায় ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন।
বক্তারা বলেন, আমাদের দেশে বাড়ীতে ৩৯%(৪০.৮ মিলিয়ন), কর্মক্ষেত্রে ৪২.৭% (৮.১ মিলিয়ন) এবং পাবলিক পরিবহনে ৪৪.০% (২৫.০ মিলিয়ন) পরোক্ষ ধূমপানের শিকার। রাজধানী ঢাকার প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়া ৯৫ শতাংশ শিশুর দেহে উচ্চমাত্রার নিকোটিন পাওয়া গেছে যার মূল কারণ পরোক্ষ ধূমপান। ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ এ পাবলিক প্লেস এবং পাবলিক পরিবহণে ধূমপান নিষিদ্ধ, ধূমপান ক্ষেত্রে জরিমানা ৩০০ টাকা এবং পাবলিক প্লেস ও পরিবহনে ধূমপানমুক্ত সাইন স্থাপন না করলে জরিমানা ১০০০ টাকা করার বিধান রয়েছে। এ বিধান বাস্তবায়ন করা হলে অনেক মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতি হতে রক্ষা পাবে।
সভায় উত্থাপিত দাবীগুলির সাথে উপস্থিত সকল মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাগণ, অতিথিবৃন্দ একমত পোষণ করেন। তারা বলেন, এই দাবীগুলি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে পরিবহন সেক্টর ও বাস-লঞ্চ-ফেরী টার্মিনালগুলিতে পরোক্ষ ধূমপান অনেকটাই কমে যাবে। উত্থাপিত দাবীগুলি ছিল- ভিজিল্যান্স টীমের সদস্য সহ পরিবহন শ্রমিকদের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা সহ নিয়মিত মাইকিং ও প্রচারণার মাধ্যমে টার্মিনাল ও বাস-লঞ্চ-ফেরীতে ধুমপান নিরুৎসাহিত করার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিটি বাস-লঞ্চ-ফেরী টার্মিনালে অভিযোগ বাক্স স্থাপনের পাশাপাশি এর তদারকির ব্যবস্থা করাসহ মালিক কর্মচারী সমন্বয়ে প্রতিটি বাস-লঞ্চ-ফেরীতে আইনানুসারে স্থায়ী ধূমপান মুক্ত সাইনেজ এর ব্যবস্থা করতে হবে। যত্রতত্র সিগারেট ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি টার্মিনালের মধ্যে কেউ ধূমপান করলে তাদেরকে নোটিশ করা ও জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জনাব শাজাহান খান, এমপি বলেন, তামাক জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি ব্যাধি। আগে গণপরিবহনে অহরহ ধূমপান হতো, এখন অবস্থার অনেক উন্নতি হয়েছে। জাতীয় সংসদেও তামাকের বিরুদ্ধে আলোচনা হয়। তামাক বিরোধী প্রচার-প্রচারণার ফলে সচেতনতা তৈরী হয়েছে। ইদানিং স্কুলের বাচ্চারা ধূমপানের দিকে আগ্রহী হচ্ছে। এজন্য পরিবারের ভিতর থেকে উদ্যোগ নিতে হবে আগামীর ভালোর জন্য। এসকল কাজে আমার এবং শ্রমিক ভাইদের সর্বাতক সহযোগিতা থাকবে।
সভায় নৌ ও সড়ক পরিবহন শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ, তামাক বিরোধী সংগঠনের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন