বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধর্ম দর্শন

জিজ্ঞাসার জবাব

| প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

১। মোহাম্মাদ লাবীবুল বারী উসাইদ, উত্তরা, ঢাকা।
 জিজ্ঞাসা : আল-কুরআনে উদ্ধৃত বিশ্বনবী (স:)-এর বর্ণিত বিশেষ দু’আ সম্পর্কে আলোকপাত করুন?
জবাব : কুরআন মজীদ সর্বশেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি সরাসরি নাযিল হয়েছে, এজন্য তাঁর প্রার্থনা ও মুনাজাত বর্ণনার ভাষায় ভিন্নতা রয়েছে। তাঁর অধিকাংশ দু’আই আল্লাহ পাক তাঁকে ওহীর মাধ্যমে সরাসরি শিক্ষা দিয়েছেন। আবার কোনো কোনো দু’আর ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, মুমিন মুত্তাকীগণ এভাবে দু’আ করে, এই পরিস্থিতিতে এই ভাষায় প্রার্থনা করে এবং ধৈর্যধারণ করে বিনয়াবনত হয়। এগুলিও পরোক্ষভাবে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মুনাজাত। কারণ তিনি পৃথিবীর তাবৎ মানুষের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ মুমিন ও মুত্তকী। সুতরাং সে প্রার্থনা সৎ, নেককার, মুমিন ও মুত্তাকীদের, সে প্রার্থনা অবশ্যই সর্বাগ্রে হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলইহি ওয়াসাল্লাম এর। আল্লাহ তাআলা কুরআন মজীদের প্রথম সূরায় হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর উম্মতকে সমগ্র জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ দু’আ শিক্ষা দিয়েছেন। এ দু’আর গুরুত্বের কারণে এর পূর্ববর্তী স্বীকার্য ও করণীয় বিষয়গুলোও স্পষ্টরূপে আলোচিত হয়েছে। প্রথমেই শিক্ষা দেওয়া হয়েছে, একমাত্র আল্লাহ তাআলাকে সকল সৃষ্টির সৃষ্টিকর্তা, জীবনদাতা, পালনকর্তা ও মৃত্যুদাতা হিসাবে মুখে ও মনেপ্রাণে স্বীকার করতে হবে এবং এ কথাও স্বীকার করতে হবে যে, সকল প্রশংসার মালিক একমাত্র তিনিই। তিনি পরম দয়ালু, মৃত্যুপরবর্তী কর্মফল দিবসের মালিক। এরপর বলা হয়েছে, আমরা সকলে যেন একমাত্র তাঁরই ইবাদত করি এবং একমাত্র তাঁরই কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি। অতঃপর আল্লাহ তাআলা আমাদের জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রার্থিত বিষয় ও প্রার্থনার ভাষা শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি ইরশাদ করেছেন, আমরা যেন তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব মাহাত্ম্য ও সপ্রশংসা মহিমা ঘোষণা করে তাঁর নিকট বিনয়াবনত চিত্তে সকাতর প্রার্থনা নিবেদন করে বলি, ‘(হে আল্লাহ), আমাদেরকে আপনি সরল পথপ্রদর্শন করুন। তাদের পথ, যাদেরকে আপনি অনুগ্রহ দান করেছেন, যারা ক্রোধ-নিপতিত নয়, পথভ্রষ্টও নয়’। ফাতিহা ৫-৭, এই দু’আ পাঠ করার পর আমীন বলা সুন্নত। আমীন অর্থ, হে আল্লাহ আপনি কবুল করুন। হযরত আবু হুরায়রা রা. ও হযরত ওয়াইল ইবনে হুজুর থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘গাইরিল মাগযুবি আলাইহিম ওয়ালায যাল্লীনা’ পাঠ করার পর আমীন বলতেন। (-মুসনাদে আহমেদ; আবু দাউদ; তিরমিযী;) দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ প্রার্থনা : সর্বাবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ রাখতে হবে। আল্লাহকে স্মরণ রাখতে হবে। বিশেষ করে হজের অনুষ্ঠানাদি সম্পন্ন করার সময় গভীর অভিনিবেশ সহকারে অধিক পরিমাণে আল্লাহ পাকের যিকির করতে হবে। অতঃপর অত্যন্ত বিনয়াবনত হয়ে আল্লাহ পাকের নিকট দু’আ করতে হবে। কারণ এটি দু’আ কবুলের সময়। শুধু দুনিয়াবী বিষয়ে প্রার্থনা করলে চলবে না; বরং উভয় জগতের কল্যাণের জন্য দু’আ করতে হবে। এজন্য আল্লাহ পাক সেই সকল মুমিনকে সফলকাম বলে প্রশংসা করেছেন, যারা সর্বাবস্থায় বিশেষ করে হজের কাজগুলো সমাপ্ত করার পর উভয় জাহানের কল্যাণে কামনা করে প্রার্থনা করে-“রাব্বানা আতিনা ফিদ দুনিয়া হাসানাতান ওয়া ফিল আখিরাতি হাসানাতান ওয়াকিনা আজাবান না’র” “হে আমদের রব! আমাদেরকে ইহকালে কল্যাণ দিন এবং পরকালেও কল্যাণ দিন এবং আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন।”-সূরা বাকার-২০১ (চলবে)
উত্তর দিচ্ছেন : মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন