শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ধর্ম দর্শন

নবী-রাসূলগণের বাশারিয়াত

সত্যালোকের সন্ধানে

| প্রকাশের সময় : ২৯ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম


এ, কে, এম, ফজলুর রহমান মুন্্শী
(পূর্ব প্রকাশের পর)
তবে এ সকল কাজ দুরূহ ব্যাপার ছিল না। কিন্তু নবুওতের গুণাবলীর এ জাতীয় তামাশাপ্রবণ বাজিকরসুলভ কর্মকা-ের সাথে কোনই সম্পর্ক ছিল না। বরং এ সকল ভ্রান্ত আকীদা বিশ্বাস ধ্বংস করার জন্য পয়গাম্বরদেরকে সরাসরি কিছু ঐশ্বরিক এখতিয়ার প্রদান করা হয়। এ জন্য রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে আল্লাহপাক এ উত্তর প্রদান করতে নির্দেশ দিলেন। ইরশাদ হচ্ছে- “বলুন আমার প্রতিপালক পবিত্র ও মহান। আমি কেবলমাত্র একজন মানুষ রাসূল। যখন তাদের নিকট কোনও পথনির্দেশ আসে তখন লোকদেরকে ঈমান আনা হতে তাদের এই উক্তি বিরত রাখে, আল্লাহ কি মানুষকে রাসূল করে পাঠিয়েছেন? বলে দিন, ‘ফিরিতাগণ যদি নিশ্চিন্ত হয়ে পৃথিবীতে বিচরণ করত, আমি আকাশ হতে ফিরিশতাই তাদের নিকট রাসূল করে পাঠাতাম।” (সূরা বনী ইসরাঈল : রুকু-১১)
প্রকৃতপক্ষে রাসূলুল্লাহ (সা.) হতে আল্লাহপাকের নির্দেশক্রমে বহু মোজেজাও প্রকাশ পেয়েছিল, এসব অতিপ্রাকৃত ঘটনাবলীকে তারা স্বীকার করেও নিয়েছিল, কিন্তু তারপরও এই ধারণা রয়ে গিয়েছিল যে, একজন মানুষ কীভাবে রাসূল হতে পারে? অবিশ্বাসী কাফেররা মোজেজাসমূহ প্রত্যক্ষ করার পরও বলেছিলÑ “এতো তোমাদেরই মতো মানুষ, তবে কি তোমরা জেনেশুনে জাদুর নিকটে আগমন করেছ?” (সূরা আম্বিয়া : রুকু-১)
মোজেজার বিস্ময়কর অবস্থাকে জাদু বলে তারা স্বীকার করেছে, কিন্তু তারপরও মানুষ নবী হতে পারে এ ধারণাকে তারা মেনে নিতে পারছিল না। তাই তাদেরকে বলা হয়েছিল যে, নবুওত ও রিসালতের গুণাবলী সম্পর্কে তোমাদের চেয়ে তারাই বেশি জানে, যাদেরকে কিতাব দান করা হয়েছিল। অর্থাৎ ইহুদি সম্প্রদায়ের কাছে জিজ্ঞেস কর। কেননা, তারাও জানে রাসূল এবং নবী মানুষই হয়ে থাকেন। এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হচ্ছেÑ “এবং আমি তোমার পূর্বে কাউকে রাসূলরূপে প্রেরণ করিনি কিন্তু মানুষের মাঝেই একজনকে, যাদের কাছে আমি অহী প্রেরণ করতাম, আর তোমরা যদি না জেনে থাক তাহলে যারা জ্ঞাত আছে তাদের কাছে জিজ্ঞেস করে নাও।” (সূরা আম্বিয়া : রুকু-১)
একই প্রত্যুত্তর সূরা ইউসুফেও বিবৃত হয়েছে। ইরশাদ হচ্ছে- “আমি তোমার পূর্বে যে সকল রাসূল পাঠিয়েছি, তারাও মানুষ ছিলেন, জনবসতিতে বসবাসকারী, যাদের মাঝে আমি অহী পাঠিয়েছিলাম।” (সূরা ইউসুফ : রুকু-১২) এর চেয়েও বিস্তৃত আলোচনা সূরা নহলে এসেছে। যেখানে ইরশাদ হচ্ছেÑ “তোমার পূর্বে আমি প্রত্যাদেশসহ মানুষই প্রেরণ করেছিলাম, তোমরা যদি না জান তবে জ্ঞানবানকে জিজ্ঞেস কর। আমি প্রেরণ করেছিলাম স্পষ্ট নিদর্শন ও গ্রন্থসহ এবং তোমার প্রতি কোরআন অবতীর্ণ করেছি, মানুষকে স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য বা তাদের প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছিল, যাতে তারা চিন্তা করে।” (সূরা নহল : রুকু-৬) প্রত্যেক বিবেকবান ব্যক্তি যদি উপরোল্লিখিত সাদৃশ্য ও মানবীয় গুণাবলী সম্পর্কে এর অবস্থার প্রতি লক্ষ্য করে তাহলে অবশ্যই বুঝতে পারবে যে, এর সম্পর্ক বাহ্যিক অঙ্গাবয়ব, শারীরিক শক্তি ও মাখলুক হওয়ার সাথে বিজড়িত। অন্যথায় আখলাকী, রূহানী, দেমাগী, কলবী, এলমী ও আলমী বিষয়াদির ক্ষেত্রে একজন পয়গাম্বর মানুষ হওয়া সত্ত্বেও যারা নবী নন এমন শ্রেণির লোকদের হতে বহু ঊর্ধ্বে মর্যাদা ও সম্মানের অধিকারী হয়ে থাকেন।
নবী এবং নবীহীনদের মাঝে বিভেদকারী মানদ- হিসেবে অহীকে স্থিরিকৃত করার অর্থ এই নয় যে, নবী আল্লাহর বার্তা লাভ করার সাথে সম্পৃক্ত হওয়া ছাড়া বাকি অন্যান্য গুণাবলী ও ত্রুটিসমূহের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের পর্যায়ভুক্ত হয়ে যাবেন। এ কথা বলা এমন যে কেউ বলল, আলেম এবং জাহেলদের মাঝে পার্থক্য শুধু এলেম বা জ্ঞান। তাছাড়া উভয়েই একই রকম মানুষ। এ কথার অর্থ এমন হতে পারে না যে, জ্ঞান ও মূর্খতা ছাড়া অন্যান্য সদগুণাবলী ও বদগুণাবলীর ক্ষেত্রেও তারা সমান সমান। প্রকৃতপক্ষে তাদের মাঝে জ্ঞান, চরিত্র, সভ্যতা, আচরণ, রায় এবং হেকমত ও প্রজ্ঞার ক্ষেত্রে কোনই প্রভেদ নেই? অথচ দু’জনের মাঝে জ্ঞান ও মূর্খতার বিভেদ তুলে ধরে এদের মাঝে জ্ঞান ও জ্ঞানহীনতার হাজারো উপাদান, গুণাবলী এবং বৈশিষ্ট্য সম্পর্কিত বিভেদ ও পার্থক্য স্বীকার করে নেয়া হয়।
অনুরূপভাবে অহী লাভকারী ও যারা অহী লাভ করেনি তাদের কথা বলতে গিয়েও এ দুয়ের মাঝে হাজারো বৈশিষ্ট্য, গুণাবলী, সহায়ক অবস্থার পার্থক্যকেও মেনে নেয়া হয়েছে। সুতরাং অহী এবং রিসালতের কথা বাদ দাও, অন্যান্য লোকদের শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদাকে সামনে রেখে চিন্তা কর তাহলে এ কথাটা স্বীকার করে নিতে হবে যে, মানুষের জন্য যে সকল গুণাবলী ও শ্রেষ্ঠত্ব হওয়া সম্ভব, এগুলোর ঊর্ধ্বতম পর্যায় হতে সর্বনি¤œ পর্যায় হওয়াও অসম্ভব নয়। তবে যদি কেউ মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের ক্ষেত্রে শীর্ষতম পর্যায়ে পৌঁছে যায়, সে নিজস্ব শারীরিক গুণাবলী এবং বৈশিষ্ট্যর দিক দিয়ে বরাবর হওয়া সত্ত্বেও সমাজের অন্যান্য লোকজনদের থেকে অবশ্যই বিশেষ মর্যাদাবান ও সম্মানিত বলে বিবেচিত হবেন। কেউ কি এমন কথা বলতে পারে যে, শারীরিক শক্তির অধিকারী মহাবীর রুস্তম মানুষ ছিল না? কারো এমন বলার অবকাশও আছে কি যে, গ্রিক দর্শনের প্রতিরূপ এরিস্টটল মানবিক স্বভাব ও আকৃতি হতে ঊর্ধ্বজগতে অবস্থান করেছিল? বর্তমান বিশ্বের অন্যতম বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারক এডিসন মানুষ ছিল না। যার অত্যাশ্চর্য আবিষ্কারগুলো পৃথিবীকে চমকিত করেছে। কিন্তু মানবিক দিক থেকে এক রকম হওয়া সত্ত্বেও তারা নিজেদের পরিম-লে অন্যান্য সাধারণ মানুষের তুলনায় বিশেষ মর্যাদা ও প্রজ্ঞার অধিকারী ছিলেন। তদুপরি নিজেদের মানবিক বৈশিষ্ট্যাবলী, উঠা-বসা, চলা-ফেরা, পানাহার, নিদ্রা, জাগরণ, দেখা-শোনা, আকার-আকৃতি প্রত্যেক বিষয়ে সাধারণ মানুষের মতোই ছিল। তাদের হাত-পা সাধারণ মানুষ হতে পৃথক কিছু ছিল না। তারা সার্বিকভাবে মানবিক বাধ্য-বাধ্যকতা হতেও মুক্ত ছিল না।  
যেমন অন্যান্য দুর্বল, জাহেল, দুর্বল-স্মৃতিশক্তির অধিকারী মানুষ দুনিয়াতে বসবাস করে তেমনি বিশেষ মর্যাদাবান লোকেরাও বসবাস করে। এক্ষেত্রে এ সকল মানুষ বাহ্যত একই পর্যায়ভুক্ত বলে মনে হয়।
যদি আম্বিয়ায়ে কেরামের নবুওত ও রেসালতের গুণটিকে পৃথক রাখা হয় তাহলে তারাও মানুষেরই মতো মানুষ। কিন্তু অহী ও প্রত্যাদেশ লাভের কারণে তারা এমন শক্তি ও মর্যাদার আসনে সমাসীন হন এবং তাদের মাঝে এমন এক শারীরিক বৈশিষ্ট্য ফুটে ওঠে যা সাধারণ মানুষ হতে সম্পূর্ণ পৃথক ও আলাদা। আত্মিক ও দৈহিক দিকের মাঝে তাদের সমকক্ষ অন্য কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না। তাই নবী ও রাসূলগণ মানুষ হয়েও বিশেষ গুণ ও বৈশিষ্ট্যের জন্য সাধারণ মানুষ হতে সম্পূর্ণ আলাদা ও পৃথক সত্তা।
রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে দেখে (‘সাওমে বিছাল’ ক্রমাগত এক সাথে রোজা রাখা) কতিপয় সাহাবি ‘সাওমে বিছাল’ পালন করতে শুরু করেন। কিন্তু তিনি তাদেরকে তা করতে নিষেধ করলেন এবং বললেন, “তোমাদের মাঝে আমার সমতুল্য কেউ আছে কি? আমার প্রতিপালক আমাকে, আহার করান এবং পান করান।” (সহীহ বুখারী : কিতাবুস সাওম)। এর দ্বারা প্রতিপন্ন হয় যে, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর মতো রূহানী খাদ্য কারো পক্ষে গ্রহণ করা কি সম্ভব হয়েছে? শুধুমাত্র ‘অহী’ ছাড়া অন্যান্য দিকেও রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সমকক্ষ হওয়া কি আদৌ কল্পনা করা যায়?
অনুরূপভাবে নিদ্রাবস্থায়ও নবীগণের অন্তর সজাগ বা জাগ্রত থাকে। এর স্বপক্ষে বহু সহীহ হাদিস আছে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “আমার চোখ নিদ্রা যায়, কিন্তু অন্তর নিদ্রা যায় না।” তাছাড়া অন্যান্য আম্বিয়ায়ে কেরামের অবস্থাও তাই।
তাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, “আম্বিয়াগণের চোখ নিদ্রা যায় না।” (সহিহ বুখারি : বাবুল আসরা) তবে কি এই অবস্থা সকল মানুষের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য? সকল মানুষই কি এ ব্যাপারে সমপর্যায়ভুক্ত?
রাসূলুল্লাহ (সা.) নামাজ আদায়ের সময় মুক্তাদীগণকে নামাজের কাতার সোজা করার নির্দেশ প্রদান করতেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, “আমি আমার সম্মুখভাগকে যেভাবে দেখি ঠিক তেমনি আমার পেছনে তোমাদেরকেও প্রত্যক্ষ করি। এ পর্যায়ে সাধারণ মানুষের অবস্থা কি তাই? তারা কি সম্মুখভাগ যতটুকু দেখতে পায়, অনুরূপভাবে পেছনের দিকও দেখতে পারে?
আল-কোরআনে মহান রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেছেন, “তোমরা কি এ ব্যাপারে ঝগড়া করছ, যা রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রত্যক্ষ করতেন? তিনি সেই ফেরেশতাদেরকে দিকচক্রবালে দ্বিতীয়বারে দর্শন করেছেন”। তবে কি সাধারণ মানুষও আকাশম-লে ফেরেস্তাদেরকে অবলোকন করতে পারে?
রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর পবিত্র সান্নিধ্য লাভ করার ফলে উম্মাহাতুল মু’মিনীনগণ অর্জন করেছিলেন সুমহান মর্যাদার এক অনন্য আসন। এরই ফলশ্রুতিতে মহান আল্লাহপাক তাদেরকে লক্ষ্য করে ইরশাদ করেন, “হে নবীর গৃহিণীগণ! যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর (তাহলে জেনে রেখ যে) তোমরা অন্য মহিলাদের মতো নও।” এই আয়াতের দ্বারা বোঝা যায় যে, তাকওয়া ও পরহেজগারীর পর উম্মাহাতুল মু’মিনীনগণ অন্য রমণীদের মতো নন। তাহলে এ কথা বলা কি যথার্থ নয় যে, স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সা.) অন্যান্য মানুষের কবি কত সুন্দরইনা বলেছেনÑ “বাদ আজ খোদা বুযুর্গ তুই কিসসা মুখতাসার।” অর্থাৎ আল্লাহপাকের পবিত্র জাত ও সিফাতের পর রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর মতো সম্মান, মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্যের অধিকারী আর কেউ নন। মোটকথা নবী এবং নবীহীন সত্তাদের মাঝে অহী এবং নুবওতের দ্বারা যে পার্থক্য করা যায়। এর অর্থ হচ্ছে এই যে, এই দু’শ্রেণির লোকদের মাঝে অহী এবং রিসালতের যাবতীয় উপকরণ, বৈশিষ্ট্য ও প্রয়োজনীয় গুণাবলীর মাঝে যেটুকুন প্রভেদ লক্ষ্য করা যায়, সেগুলো যে সত্তার মাঝে পাওয়া যাবে তিনি এসকল গুণাবলীহীন মানুষ হতে বহুগণ বেশি মর্যাদার অধিকারী হবেন এতে কোনও সন্দেহ নেই। আল- কোরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, “অবশ্যই স্বয়ং আল্লাহপাক ও তাঁর ফেরেশতাম-লী রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর সালাত বা দরূদ পাঠ করেন।” (সূরা আহযাব : রুকু-৭) এর দ্বারা বোঝা যায় যে, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর মর্তবা মানুষ হওয়া সত্ত্বেও সমগ্র সৃষ্টিকূলের চেয়ে অধিক ছিল। যার কারণে মহান রাব্বুল আলামিনের সালাত ও সালাম তাঁর ওপর অহরহ বর্ষিত হতে থাকে।
অপর এক আয়াতে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, “আমি আপনাকে বিশ্বজগতের রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছি”। (সূরা আম্বিয়া রুকু-৭) এই আয়াতের মর্মের প্রতি তাকালে দেখা যাবে যে, একদিকে বিশ্বজগৎ এবং অপরদিকে নবীউর রহমত একই পরিম-লে অবস্থান করছেন না। সৃষ্টি হিসেবে বিশ্বজগতের মূল অবলম্বন হচ্ছে, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর রহমত। এই রহমত ছাড়া কোনও সৃষ্টি অস্তিত্ব লাভ করতে পারে না।
মহান আল্লাহপাক আরও ঘোষণা করেছেন, “হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা আল্লাহপাক ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য প্রদর্শন কর।” (সূরা নিসা রুকু-২০) এই আয়াতের দ্বারা সুস্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে, রাসূলের আনুগত্য একান্ত অপরিহার্য। এ-ই যদি হয় অবস্থা, তাহলে আনুগত্য লাভের ক্ষেত্রে সকল মানুষকে একই বরাবর মনে করা সত্যের অপলাপ ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না। শুধু তা-ই নয়, মহান রাব্বুল আলামিন উদাত্ত কণ্ঠে ঘোষণা করেছেন, “আমি মোহাম্মদ (সা.)-কে সকল মানুষের জন্য নবীরূপে প্রেরণ করেছি।” (সূরা সাবা, রুকু-৩) সকল মানুষ এবং সকল মানুষের যিনি নবী এই দুই পৃথক সত্তা ও শ্রেণির মাঝে কি কোনই প্রভেদ নেই? হ্যাঁ, আছে এবং আছে বলেই রাসূলুল্লাহ (সা.) মানুষ হয়েও অন্যান্য মানুষের মান-মর্যাদা এবং বৈশিষ্ট্য হতে সম্পূর্ণ পৃথক ছিলেন, এখনও আছেন এবং চিরকাল থাকবেন। মোট কথা নবী এবং রাসূলগণের মানুষ হওয়া সম্পর্কিত উপরোক্ত দীর্ঘ আলোচনার পর প্রত্যেক মুমিন-মুসলমান ভাই ও বোনদের প্রতি আমাদের সনির্বন্ধ অনুরোধ এই যে, তারা যেন নবী ও রাসূলগণের মানুষ হওয়ার ব্যাপারে তাদের শান ও মানের খেলাফ কোনো কথা, আচরণ ও অভিব্যক্তি প্রকাশ না করেন এবং তাদের প্রতি অবজ্ঞা, অবহেলা ও অপাঙ্ক্তেয় মনোভাব প্রদর্শন না করেন। যদি গুনাক্ষরেও কাজে, কথায়, চিন্তা, চেতনায় নবী ও রাসূলগণের প্রতি হীন, নিচ ও ঘৃণ্য আচরণ প্রকাশ পেয়ে যায়, তাহলে ইমানহারা হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। এমনটি হলে দুনিয়া এবং আখেরাত উভয়টিই বরবাদ হয়ে যাবে। পরবর্তী পর্যায়ে আমরা নবী রাসূলগণের প্রতি কী ধরনের ঈমান থাকা প্রয়োজন সে ব্যাপারে বিস্তৃত আলোচনা করতে প্রয়াস পাব। ওয়ামা তাওফিকী ইল্লা বিল্লাহ। 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন