বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে ক্ষমতাসীনদের চুরির কারণে ব্যাংক খালি, ডলার নেই। ব্যবসায়ীরা এলসি খুলতে পারছে না। দেশে আজ গণ লুট চলছে। এরা যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই দেশের সম্পদ লুট করে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত ১৫বছরে অনেক অত্যাচার হয়েছে আর নয়, জনগণকে বাসা থেকে বের হতে হবে জেগে উঠতে হবে। এরাই দেশটিকে ফতুর বানিয়ে ফেলেছে। একদিকে দব্য মূল্য বেড়ে চলছে মানুষ গরিব হচ্ছে অন্যদিকে ক্ষমতাসীনরা ফুলে কলাগাছ হচ্ছে। তারা বলে উন্নয়ন উন্নয়ন, এমন উন্নয়ন হয়েছে যে মানুষ আজ বিদ্যুৎ পায় না, পানি পায় না, গ্যাস পায় না।
শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে রাজধানীর গোপীবাগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত পদযাত্রা কর্মসূচির পূর্বে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পদযাত্রাটি গোপীবাগ থেকে শুরু হয়ে টিকাটুলি, দয়াগঞ্জ, রায়শাহ বাজার হয়ে নয়াবাজার গিয়ে শেষ হয়।
তিনি বলেন, ক্ষমতায় টিকে থাকতে তারা প্রশাসনকে ব্যবহার করছে। যুক্তরাষ্ট্র র্যাব এবং পুলিশকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, আমরা এটি চাইনি, এটি জাতির জন্য লজ্জাকর, তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে র্যাব ও পুলিশকে দিয়ে মানুষ হত্যা করেছে।এবারও আমেরিকায় অনুষ্ঠিত গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশ দাওয়াত পাইনি, এতে বিশ্বের কাছে আমাদের মাথা নিচু হয়ে যায়। যে গণতন্ত্রের জন্য যুদ্ধ হয়েছে, সে গণতন্ত্র হরণের অভিযোগই গণতন্ত্র সম্মেলনে দাওয়াত পায়নি বাংলাদেশ।
ফখরুল বলেন, আজকে সারাদেশেই অত্যাচার হচ্ছে, চলছে নৈরাজ্য। আওয়ামী লীগ মূলত সন্ত্রাসী দল। এরা কখনোই নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেনি। এরা সবসময় ভয়ভীতি দেখিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়। গত কয়েক মাসে তারা আমাদের ১০ জন নেতাকে হত্যা করেছে। বেআইনি ও গায়েবি মামলা দিয়ে গ্রেফতার করা হচ্ছে। তারপরও আন্দোলন থামানো যাচ্ছে না। কারণ এই আন্দোলন শুধু বিএনপির নয়, গণতন্ত্রকামী সকল জনতার।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিদেশিদের বলেছেন- উনার অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে! তার এ বক্তব্যে মানুষ হাসে। আমাদের পরিস্কার কথা এ সরকারের অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে যাবে না। দেশের অনেক ক্ষতি করেছেন। শুধুমাত্র নিজ পরিবার ও নেতাদের লুটের কারণে দেশ আজ ফোকলা হয়ে গেছে। দেশের মানুষের কোনো উন্নয়ন হয়নি, আপনাদের উন্নয়ন হয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন-বিএনপি আন্দোলন করতে পারে না। তাহলে কেনো পাহাড়া দেন? এখনো সময় আছে, দেয়ালের লিখন পড়েন। সারাদেশের মানুষ নেমে পড়েছে। সময় থাকতে পদত্যাগ করুন, নতুবা রেহাই পাবেন না।
মির্জা ফখরুল বলেন, বেগম জিয়াকে গ্রেফতার করেছেন, তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে দেশান্তরি করে রেখেছেন। তাতে কি আন্দোলন বন্ধ করতে পেরেছেন? বিএনপি কি ভেঙে গেছে, বরং আরো শক্তিশালী হয়েছে। তারেক রহমানের জনপ্রিয়তা অনেক বেড়েছে।
রাষ্ট্রপতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উনি নিজেও জানে না উনি রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন। তা তিনি আবার এক সাক্ষাৎকারেও বলেছেন। এ থেকে প্রমাণ হয় এ সংবিধানে দেশ চলবে না। সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। আমাদের উত্থাপিত ২৭ দফার আলোকে সংবিধান পরিবর্তন করে ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে হবে।
আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন প্রমুখ।
এসময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিম উদ্দীন আলম, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, বিএনপি প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার, শায়রুল কবির খানসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিদ্যুৎ, গ্যাস, চাল, ডাল, তেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতি ও মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার ও গুলিসহ দমন-নিপীড়নের প্রতিবাদে এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ কারাবন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তি, গণ বিরোধী ফ্যাসিষ্ট সরকারের পদত্যাগ, অবৈধ সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ১০ দফা দাবীতে আজ এ পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন